ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫

প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে চীনা অভিনেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ০৭:৩০ পিএম
চীনের জনপ্রিয় অভিনেতা ও গায়ক ঝাং ইয়িয়াং। ছবি- সংগৃহীত

চীনের জনপ্রিয় অভিনেতা ও গায়ক ঝাং ইয়িয়াংকে ২০২২ সালে ১৬ বছর বয়সি এক কিশোরীকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। পরে গত বছরের ডিসেম্বরে ফায়ারিং স্কোয়াডের মাধ্যমে তার শাস্তি কার্যকর করা হয়। খবর- ইন্ডিপেন্ডেন্ট।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) চ্যানেল নিউজ এশিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঝাং ইয়িয়াং চীনের প্রথম পরিচিত বিনোদনশিল্পী, যাকে এ ধরনের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

শানসি প্রদেশের জিয়ানইয়াং শহরের ইন্টারমিডিয়েট পিপলস কোর্টের প্রকাশিত নথি অনুসারে, ৩০ বছর বয়সি ঝাং ২০২২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জন্মদিন পালনের অজুহাতে ১৬ বছর বয়সি প্রেমিকাকে জিংপিং শহরের পাশে একটি নির্জন জঙ্গলে নিয়ে যান। সেখানে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে ঝাং একটি ভাঁজ ছুরি দিয়ে মেয়েটিকে হত্যা করেন।

অভিযোগ, ঝাং পরে হত্যার প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেন। তিনি মেয়েটির ফোন ও নিজের জামাকাপড় একটি জলাধারে ফেলে দেন এবং আত্মহত্যার জন্য একটি হোটেলে ওঠেন। তবে হোটেল কর্মীদের সতর্কতায় পুলিশে খবর যায় এবং সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

‘দ্য স্ট্যান্ডার্ড’ জানিয়েছে, ঝাং ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ওই কিশোরীর সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন। কিন্তু মেয়েটি সম্পর্ক শেষ করতে চাইলে ঝাং তাকে জোর করে সম্পর্ক চালিয়ে যেতে বাধ্য করেন।

স্থানীয় আদালত প্রথমে ঝাংকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। তিনি রায়টির বিরুদ্ধে আপিল করলেও তা খারিজ হয়। শেষ পর্যন্ত ২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

স্থানীয় গণমাধ্যমে ঝাং ইয়িয়াং-এর মামলার খবর প্রকাশের পর চীনের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম যেমন ওয়েইবো ও ডুবানে বহু মানুষ ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তারা একদিকে হত্যাকাণ্ডের নৃশংসতায় মর্মাহত, অন্যদিকে পুরো ঘটনার পরেও বিনোদন জগতের নীরবতায় ক্ষুব্ধ।

বিশেষ করে, ঝাং-এর পুরোনো কাজগুলো এখনো সহজে পাওয়া যাচ্ছে, এ বিষয়েও অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। যেমন, ‘জি ইউ ইয়িন শেং গুয়ান’ নামে একটি চলচ্চিত্র, যা জিইউ সাউন্ড হল নামেও পরিচিত, তা ২০২৫ সালের মার্চে  মরণোত্তর মুক্তি পেয়েছে।

সম্প্রতি, প্ল্যাটফর্ম দোবানের নেটিজেনরা ছবিটিকে এক তারকা রেটিং দিতে শুরু করেছেন, এবং এর প্রধান অভিনেতা একজন দোষী সাব্যস্ত খুনি হওয়া সত্ত্বেও এর মুক্তির তীব্র সমালোচনা করেছেন।

একজন নেটিজেন মন্তব্য করেছেন, ‘মূল পুরুষ অভিনেতাকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি যে সিনেমায় অভিনীত ছিলেন তা এখনও প্রিমিয়ার হয়েছে।’

অপরাধে জড়িত অন্যান্য সেলিব্রিটিদের মতো ঝাংকে সরকারিভাবে ‘অসদাচরণকারী শিল্পী’ তালিকায় রাখা হয়নি, কিংবা তার কাজগুলো স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম থেকেও সরানো হয়নি—এ বিষয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।

ঝাং ১৯৯০ সালের ১ মে চীনের জিংপিং শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১২ সালে একটি রিয়েলিটি টিভি শো’র মাধ্যমে তার ক্যারিয়ার শুরু হয়। তিনি ‘আই অনলি কেয়ার অ্যাবাউট পিপল হু কেয়ার অ্যাবাউট মি’ এবং ‘ক্রাইং ম্যান’ শিরোনামে গান প্রকাশ করেন এবং কিছু ওয়েব সিরিজ ও ছোটখাটো টিভি শোতে অভিনয় করেন।