হোয়াটস অ্যাপের মতো নতুন একটি ডিজিটাল যন্ত্র এবং বার্তা প্রেরণ করার অ্যাপ চালু করতে যাচ্ছে রাশিয়া। বিশেষজ্ঞদের মতে, রুশ নাগরিকদের ওপর কঠোর নজরদারি প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার হতে পারে এই অ্যাপ। ‘ম্যাক্স’ নামের এই অ্যাপ আগামী সেপ্টেম্বর থেকে রাশিয়ায় বিক্রি হওয়া প্রতিটি নতুন যন্ত্রে থাকবে বলে জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট’।
পশ্চিমা দেশগুলোর যোগাযোগ প্রযুক্তিকে রাশিয়ার নিরাপত্তা সংস্থাগুলো সবসময় হুমকি হিসেবে দেখে এসেছে। বিদেশি সফটওয়্যার যেমন গুগল, স্কাইপ এবং হটমেইল ব্যবহারের ফলে রাশিয়ার নাগরিকদের বার্তা পর্যবেক্ষণ করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে উঠেছিল। হোয়াটসঅ্যাপের মতো সেবার ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের পর নাগরিকদের ‘ম্যাক্স’ ব্যবহারে বাধ্য করার এই পদক্ষেপ রাশিয়ার নজরদারি প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতারই অংশ।
বার্তা পাঠানো এবং ভিডিও কলের পাশাপাশি এই অ্যাপে সরকারি সেবা গ্রহণ এবং মোবাইল অর্থ পরিশোধের সুবিধা থাকবে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যাপটির তথ্য সংরক্ষণের স্থান রাশিয়ায় থাকায় এটি রাশিয়ার আইনের অধীনে থাকবে এবং রাশিয়ার নিরাপত্তা সংস্থা এফএসবি এই অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিকদের তথ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবে, যা এটিকে গোপন নজরদারির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের ঝুঁকি তৈরি করবে।
রাশিয়ার নিরাপত্তা ও রাজনীতি বিশ্লেষক মার্ক গ্যালিওটি জানিয়েছেন, এই অ্যাপ চালুর ফলে রাশিয়ায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত বার্তা প্রেরণের অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ নিষিদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি। রাশিয়ার সরকার নাগরিকদের ‘ম্যাক্স’ ব্যবহারে বাধ্য করবে।
রাশিয়ার বিরোধী সাংবাদিক আন্দ্রে ওকুন বলেছেন, ‘ম্যাক্স’ হবে ক্রেমলিনের স্বপ্নের ডিজিটাল কারাগার প্রতিষ্ঠার প্রধান অংশ। এটি এমন এক নিয়ন্ত্রিত স্থান হবে, যেখানে সরকার নাগরিকদের অবসর সময়, চিন্তাভাবনা এবং উদ্দেশ্যকে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে তৈরি এই অ্যাপ চালু করা রাশিয়ার নাগরিকদের অনলাইনে কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারি বৃদ্ধির আরেকটি ধাপ। রাশিয়ার ইন্টারনেট ব্যবহার পর্যবেক্ষণকে সাধারণ করার দীর্ঘ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ‘রাশিয়ার যুদ্ধ সবার বিরুদ্ধে’ গ্রন্থের লেখক কেয়ার গাইলস।
আপনার মতামত লিখুন :