গত ১২ জুন আহমেদাবাদে বিধ্বস্ত হয়েছিল ভারতীয় বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং বিমান। এর চারদিন পরই অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ছুটিতে যান সংস্থাটির ১১২ জন পাইলট। বৃহস্পতিবার সংসদে এ তথ্য জানান কেন্দ্রীয় বেসামরিক বিমান পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী মুরলীধর মহল।
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবার এ খবর জানানো হয়েছে।
সংসদে মন্ত্রী জানান, ওই দিন ৫১ জন কমান্ডার ও ৬১ জন ফ্লাইট কর্মকর্তা ছুটির আবেদন করেন। এই ঘটনার পর পাইলটদের মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা ও সঠিকভাবে তা ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব আরও স্পষ্ট হয়েছে।
লোকসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে মুরলীধর মহল জানান, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সব এয়ারলাইন্সকে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল যাতে মেডিকেল পরীক্ষার সময় মানসিক স্বাস্থ্যের দ্রুত ও কার্যকর মূল্যায়ন নিশ্চিত করা যায়।
তিনি আরও জানান, বিমান সংস্থাগুলো ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে ফ্লাইট ক্রু এবং এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের জন্য আলাদা ও কাস্টমাইজড প্রশিক্ষণ মডিউল চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা চিহ্নিত ও মোকাবিলা করা যায়। সেইসঙ্গে পিয়ার সাপোর্ট গ্রুপ গঠনের পরামর্শও দেওয়া হয়েছে, যারা সহকর্মীদের মানসিক সমস্যার সমাধানে সহায়তা করবে।
এই প্রেক্ষাপটে ডিরেক্টর জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ) বুধবার এয়ার ইন্ডিয়াকে চারটি কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে। এগুলো পাইলটদের ক্লান্তি ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত সুরক্ষার মান লঙ্ঘনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
গত ১২ মাসে সংস্থাটির স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে এই নোটিশগুলো দেওয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে কেবিন ক্রুদের বিশ্রামের সময় ঠিকমতো নিশ্চিত না করা, প্রশিক্ষণ নীতিমালা লঙ্ঘন এবং অন্যান্য পরিচালনা-সংক্রান্ত ত্রুটি।
এয়ার ইন্ডিয়ার একজন মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা এই নোটিশগুলো পেয়েছি। আমরা নির্ধারিত সময়ে এর জবাব দেব। এয়ার ইন্ডিয়া আমাদের ক্রু ও যাত্রীদের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি পালন করে চলছে।’
গত ছয় মাসে এয়ার ইন্ডিয়া ১৩টি নিরাপত্তা লঙ্ঘনের নোটিশ পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মঙ্গলবার হংকং-দিল্লি ফ্লাইটে অবতরণের পর এয়ারবাস এ৩২১-এর অ্যাক্সিলিয়ারি পাওয়ার ইউনিটে অগ্নিকাণ্ড, যেটি পরে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ ছাড়া, তার আগের দিন কোচি-মুম্বাই ফ্লাইট রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে ইঞ্জিন কভার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টিও নজরে আনা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :