কলকাতা থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর প্রায় ৮০০ কিলোমিটার দূরে আসামের বারপেটা রেলওয়ে স্টেশন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হুসেইন আহমেদ মজুমদার নামের এক বিমানযাত্রীকে। মাঝ আকাশে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ার পর এক সহযাত্রীর হাতে চড় খাওয়ার ঘটনার পর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
রোববার (৩ আগস্ট) ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩২ বছর বয়সী হুসেইন আহমেদ মজুমদার আসামের কাছাড় জেলার বাসিন্দা। তিনি মুম্বাইয়ের একটি হোটেলে কর্মরত এবং এর আগেও একাধিকবার মুম্বাই-শিলচর রুটে ভ্রমণ করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার তিনি ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের ৬ই-১৩৮ নম্বর ফ্লাইটে মুম্বাই থেকে কলকাতাগামী বিমানে ওঠেন। কলকাতায় পৌঁছানোর পর পরদিন তার শিলচর যাওয়ার কথা ছিল।
তবে বিমানে ওঠার পরই হুসেইনের তীব্র প্যানিক অ্যাটাক হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে দুই কেবিন ক্রু এগিয়ে গেলে পাশের আসনে বসা এক যাত্রী হঠাৎ তাকে চড় মারেন। এ ঘটনায় বিমানের ভেতর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা যায় একজন যাত্রী চড় মারার প্রতিবাদ করছেন এবং কেবিন ক্রুরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন।
কলকাতা বিমানবন্দরে অবতরণের পর অভিযুক্ত যাত্রী হাফিজুল রহমানকে নিরাপত্তাকর্মীরা পুলিশে সোপর্দ করেন। যদিও পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অন্যদিকে, হুসেইন বিমানবন্দর ত্যাগ করার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। তার পরিবার জানায়, তারা জানত না ফ্লাইটে এমন কিছু ঘটেছে এবং শিলচর বিমানবন্দরে গিয়ে তাকে খুঁজে না পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ভাইরাল ভিডিও দেখে তারা হুসেইনকে শনাক্ত করেন। তবে তখন তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
পরিবার থেকে হুসেইনের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। তদন্তে জানা যায়, তিনি কলকাতা থেকে আর কোনো ফ্লাইটে ওঠেননি। পরে খবর আসে, আসামের বারপেটা রেলস্টেশনে তাকে দেখা গেছে। সেখানে গিয়ে পুলিশ হুসেইনকে উদ্ধার করে।
প্রাথমিকভাবে তিনি শারীরিকভাবে কিছুটা দুর্বল ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। বর্তমানে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে, বিমানে সহযাত্রীকে চড় মারার ঘটনায় অভিযুক্ত হাফিজুল রহমানকে ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স আজীবন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, যাত্রী ও ক্রুদের নিরাপত্তাই তাদের অগ্রাধিকার। এ ধরনের অশালীন আচরণকে বরদাস্ত করা হবে না বলেও তারা উল্লেখ করেছে।