এবার যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়তে থাকায় মধ্যপ্রাচ্য থেকে তাদের কর্মী সরিয়ে নিতে শুরু করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আলজাজিরার তথ্য অনুযায়ী, এই পদক্ষেপ অঞ্চলটিতে বাড়তে থাকা উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএসের তথ্যানুসারে, ইরানের ওপর ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কাকে কেন্দ্র করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে হোয়াইট হাউস।
এদিকে ইরাকের রাজধানী বাগদাদে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস থেকেও কর্মীদের সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি, বাহরাইন, কুয়েত এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ থেকেও মার্কিন কূটনীতিকদের পরিবারের সদস্যদের স্বেচ্ছায় চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এই সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর। এদিকে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) জানায়, তারা বর্তমান পরিস্থিতির ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
গত ১১ জুন সন্ধ্যায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে সেখানে থাকা কর্মীদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতির অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং ইরান সম্পর্কে তিনি স্পষ্টভাবে জানান, তারা কোনোভাবেই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে পারবে না। এটি একেবারেই পরিষ্কার ও সোজা কথা।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি সংক্রান্ত আলোচনা অচলাবস্থায় পৌঁছেছে। সিবিএসের তথ্য মতে, ইসরায়েল ইরানে সামরিক হামলা চালানোর জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে। ফলে ওয়াশিংটনের আশঙ্কা ইসরায়েল যদি আক্রমণ চালায় তাহলে ইরান পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইরাকে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোর ওপর হামলা চালাতে পারে।
এদিকে জাতিসংঘে ইরানের মিশন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বার্তায় জানায়, তারা পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে আগ্রহী নয়। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপ কেবল পরিস্থিতিকে আরও অস্থির করে তুলছে। মিশনটি আরও বলেছে, এই সংকট নিরসনের একমাত্র কার্যকর উপায় হচ্ছে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা, সামরিক আগ্রাসন নয়।
ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল আজিজ নাসিরজাদে জানিয়েছেন, যদি তাদের বিরুদ্ধে জোর করে যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে শত্রু পক্ষ ইরানের তুলনায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি আরও বলেন, এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে অঞ্চল ছাড়তে বাধ্য হতে হবে, কারণ ওই অঞ্চলের সব মার্কিন ঘাঁটি ইরানের নজরদারির মধ্যে রয়েছে।
এই সপ্তাহে ওমানে ষষ্ঠবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। আলোচনায় অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের।
সাম্প্রতিক এই কূটনৈতিক তৎপরতা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, মধ্যপ্রাচ্যে একটি বড় ধরনের সংঘাতের সম্ভাবনা জোরালো হয়ে উঠছে, যার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও ইসরায়েলের সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপ।
আপনার মতামত লিখুন :