ঢাকা শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫

যে কারণে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা কঠিন

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২৫, ১১:২২ পিএম
ছবি - সংগৃহীত

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা এখন অধিকতর কঠিন হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। ইহুদিবাদী কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান তার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র ভূগর্ভে বা গোপন ডিপোতে সংরক্ষণ করছে, যেগুলোর অবস্থান এবং কাঠামো এমনভাবে নির্মিত যে সেগুলোতে আঘাত হানা প্রায় অসম্ভব।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানজুড়ে বিস্তৃত ‘মিসাইল সিটি’ নামে পরিচিত এসব ডিপো গভীর টানেল, পাথুরে প্রাচীর ও ভূগর্ভস্থ লঞ্চিং প্যাড দিয়ে সুরক্ষিত। অনেক ক্ষেপণাস্ত্র রাখা হয়েছে এমন গভীরে যেখানে সাধারণ বোমা বা বিমান হামলা কার্যকর নয়। 

কিছু বিশেষজ্ঞ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘ম্যাসিভ অর্ডনেন্স পেনিট্রেটর’ (এমওপি) ছাড়া এসব স্থাপনায় পৌঁছানো সম্ভব নয়, অথচ সেটি ব্যবহার করলে বড় ধরনের সামরিক ও কূটনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে।

ইসরায়েলি গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, ইরান যে পরিমাণ ক্ষেপণাস্ত্র গোপনে সংরক্ষণ করে রেখেছে, তা বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা ভারসাম্যের জন্য এক বড় হুমকি। 

কর্মকর্তাদের মতে, ‘তাদের ভূগর্ভস্থ কাঠামো এমনভাবে গড়া হয়েছে যে, সেগুলো ধ্বংস করা আমাদের জন্য প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে।’

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ইরান পরিকল্পিতভাবে তার ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনীকে ভূগর্ভে ছড়িয়ে ছিটিয়ে স্থাপনের মাধ্যমে রক্ষা করছে। 

এর কারণ, যাতে কোনও সামরিক অভিযানে সম্পূর্ণ ধ্বংস প্রতিরোধ করা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব পদক্ষেপ ইরানকে দীর্ঘমেয়াদে যুদ্ধ সক্ষমতা ধরে রাখার কৌশলে এগিয়ে রাখছে।

সম্প্রতি ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার উত্তেজনার মধ্যে এই বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এপ্রিলের পর থেকে একাধিকবার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন আক্রমণ চালানো হলেও ইরানের মূল ক্ষেপণাস্ত্র ডিপো অক্ষত থেকেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

এতে ধারণা করা হচ্ছে, এসব ডিপো হয় রাডারের আওতার বাইরে অথবা এমন এলাকায় অবস্থিত, যেগুলোতে সরাসরি প্রবেশ কঠিন।

বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, যদি কোনো বড় ধরনের সংঘর্ষ শুরু হয়, তবে এই ভূগর্ভস্থ ডিপো থেকেই ইরান তার পরবর্তী ধ্বংসাত্মক পাল্টা আঘাত চালাবে, যা গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলতে পারে।

তথ্যসূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট, দ্য টাইমস (যুক্তরাজ্য)