ঢাকা শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

‘ইসরায়েল’গামী আরেক জাহাজ ডুবিয়ে দিল হুথিরা, নিখোঁজ ১১

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২৫, ০৫:৪৬ পিএম
লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী বাল্ক ক্যারিয়ার ইটারনিটি সি-কে লোহিত সাগরে ডুবতে দেখা যাচ্ছে। ছবি- এপি

ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠী গ্রিক মালবাহী জাহাজ ‘ইটার্নিটি সি’ ডুবিয়ে দেওয়ার একদিন পরও নিখোঁজ রয়েছেন ১১ ক্রু ও নাবিক। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) লোহিত সাগর থেকে আরও তিনজন নাবিক ও একজন নিরাপত্তারক্ষীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। খবরটি জানিয়েছে একটি সামুদ্রিক নিরাপত্তা সূত্র।

উদ্ধার হওয়া চারজন ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পানিতে ভেসে ছিলেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স। জাহাজটি ‘ইসরায়েল’গামী ছিল বলেই ডুবিয়ে দেওয়ার দাবি করেছে হুথি যোদ্ধারা।

গ্রিক সামুদ্রিক নিরাপত্তা সংস্থা ডায়াপ্লাস-এর কর্মকর্তা নিকোস জর্জোপৌলোস বলেন, ‘গ্রিক জাহাজ অপারেটরের অনুরোধে আমরা এই অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছি। নতুন উদ্ধার আমাদের আরও সাহস জোগাবে এবং প্রমাণ করে যে আমাদের অনুসন্ধান পরিকল্পনা সঠিক ছিল।’

চলতি সপ্তাহে ইয়েমেনে হুথিদের হামলায় ডুবে যাওয়া দ্বিতীয় গ্রিক মালবাহী জাহাজ হলো ‘ইটার্নিটি সি’। ইরান-সমর্থিত হুথি গোষ্ঠী জানিয়েছে, গাজার যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানাতে তারা এই হামলা চালিয়েছে। কয়েক মাসের তুলনামূলক শান্তির পর এই হামলা লোহিত সাগরে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েমেন মিশন হুথিদের বিরুদ্ধে নাবিকদের অপহরণের অভিযোগ তুলেছে এবং তাদের দ্রুত মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে।

বুধবার হুথিদের এক সামরিক মুখপাত্র টিভিতে বলেন, ‘ইয়েমেনি নৌবাহিনী বেশ কয়েকজন নাবিককে উদ্ধার করেছে, চিকিৎসা দিয়েছে এবং নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে।’

এর আগে, হুথিদের হামলায় ‘ম্যাজিক সিজ’ নামের আরেকটি গ্রিক জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর পরদিনই ডুবে যায় ইটার্নিটি সি। এই দুটি জাহাজই লাইবেরিয়ার পতাকা বহন করছিল এবং গ্রিক কোম্পানিগুলোর পরিচালনায় ছিল।

‘ম্যাজিক সিজ’ ডুবে যাওয়ার আগে এর সব নাবিককে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছিল। তবে ইটার্নিটি সি’র ঘটনায় এখনো অনেক নাবিক নিখোঁজ রয়েছেন।

এই হামলাগুলো ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া হুথিদের সামুদ্রিক অভিযানকে আবারও সক্রিয় করেছে, যেখানে ইতোমধ্যে শতাধিক জাহাজ আক্রমণের শিকার হয়েছে।

সোমবার সমুদ্র ড্রোন ও স্পিড বোট থেকে রকেটচালিত গ্রেনেড নিক্ষেপের মাধ্যমে ইটার্নিটি সি-তে প্রথম আঘাত হানা হয়। চারজন নিহত হওয়ার কথা ধারণা করা হচ্ছে। সমুদ্র নিরাপত্তা সূত্র বলছে, হামলায় তারা নিহত হয়েছেন। নিহতের এই তথ্য যদি নিশ্চিত হওয়া যায়, তাহলে ২০২৪ সালের জুনের পর এই অঞ্চলে এটিই হবে প্রথম প্রাণহানির ঘটনা।

মঙ্গলবার সকালে দ্বিতীয়বারের মতো হামলার পর ক্রুদের পানিতে ঝাঁপ দিতে বাধ্য করা হয়। পরদিন সকাল থেকে উদ্ধারকারীরা তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছেন।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানাতে জাহাজটির অপারেটর, কসমোশিপ ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সাড়া পাওয়া যায়নি।