‘ইসরায়েলের’ অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেত দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে এক বৃদ্ধাকে আটক করেছে। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কান-এর বরাত দিয়ে ইউরো নিউজ জানিয়েছে, এ ঘটনায় একটি ‘বিস্ফোরক যন্ত্র’ ব্যবহারের পরিকল্পনা ছিল।
৭০-এর বেশি বয়সি ওই নারী মধ্য ‘ইসরায়েল’-এর বাসিন্দা এবং একজন সরকারবিরোধী কর্মী বলে দাবি করা হয়েছে। তবে আদালতের গোপনীয়তা নির্দেশনার কারণে তার নাম প্রকাশ করা হয়নি।
প্রসিকিউশনের তথ্যের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস জানিয়েছে, ওই নারী নিজের একটি গুরুতর রোগ শনাক্ত হওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নেন। আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ‘নিজের রোগের খবর জানার পর তিনি সিদ্ধান্ত নেন নেতানিয়াহুকে হত্যা করবেন।’
প্রসিকিউটরের বক্তব্য অনুযায়ী, ওই নারী বলেন, ‘আমি আমার জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত, যাতে বর্তমান সরকার থেকে ইসরায়েলকে রক্ষা করতে পারি।’
ওই নারীকে দুই সপ্তাহ আগে আটক করা হয়। পরে তাকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়, যেখানে বলা হয় তিনি আর কোনো সরকারি ভবনের কাছে যেতে পারবেন না এবং প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কাছেও ঘেঁষতে পারবেন না।
‘ইসরায়েলি’ পুলিশ বলছে, ওই নারী এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অন্যদের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখেছিলেন।
শিন বেতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই নারীকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ষড়যন্ত্রে যুক্ত’ থাকার অভিযোগে তদন্ত করা হচ্ছে এবং এই অভিযোগেই চার্জ গঠন করা হবে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে ‘ইসরায়েলি’ সংবাদমাধ্যম ওয়ালা জানিয়েছিল, একজন ‘ইসরায়েলি’ নাগরিককে আটক করা হয়েছে, যিনি ইরানের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুসহ আরও কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, ‘ইরানি গোয়েন্দা সংস্থা ওই ‘ইসরায়েলি’ নাগরিককে নিয়োগ দেয় নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এবং শিন বেতের সাবেক প্রধান রোনেন বারকে লক্ষ্য করার জন্য।’
শিন বেত ও পুলিশের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২৪ সালের আগস্টে ওই ব্যক্তিকে তুরস্কে থাকার সময় ইরানি গোয়েন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগের প্রমাণ পাওয়ার পর আটক করা হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আটককৃত ব্যক্তি একজন ‘ইসরায়েলি’ ব্যবসায়ী। তিনি ইরানে প্রবেশ করে সেখানে ইরানি গোয়েন্দা প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।’
এছাড়া, গত অক্টোবর মাসে নেতানিয়াহুর কায়সারিয়ার বাসভবনে একটি ড্রোন হামলা হয়। ধারণা করা হয়, ড্রোনটি লেবানন থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল।
এই হামলায় কেউ আহত না হলেও তা নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর জন্য গুরুতর উদ্বেগ তৈরি করে। ঘটনার সময় নেতানিয়াহু বাসভবনে উপস্থিত ছিলেন না।
এ ঘটনা নেতানিয়াহুর নিরাপত্তা ঘিরে আরও একবার প্রশ্ন তোলে, বিশেষ করে যখন দেশজুড়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার হচ্ছে এবং বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।