স্ত্রীর গায়ের রং নিয়ে কটূক্তি, দ্বিতীয়বার বিয়ের হুমকি এবং শ্বশুরবাড়ির অব্যাহত হেনস্তায় আত্মহত্যা করেছিলেন এক গৃহবধূ। এ ঘটনার ৩০ বছর পর ভারতের মুম্বাই হাইকোর্ট জানিয়েছে, এটি আত্মহত্যায় প্ররোচনার পর্যায়ে পড়ে না, বরং ‘ঘরোয়া কলহ’ হিসেবে বিবেচ্য। তাই অভিযুক্ত স্বামীকে মামলা থেকে মুক্তি দিয়েছে আদালত।
মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার এক গৃহবধূ ১৯৯৫ সালের জানুয়ারিতে কুয়ায় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর আগে তিনি বাবা-মাকে জানান, স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের অত্যাচারের কথা।
অভিযোগে বলা হয়, স্বামী তাকে বলতেন, তুমি কালো, আবার বিয়ে করব এবং স্ত্রীর গায়ের রং নিয়ে অপমান করতেন। রান্না নিয়েও নিত্য সমালোচনা হতো। শ্বশুর বলতেন, এই রান্না খাওয়ার যোগ্য নয়।
১৯৯৮ সালে গৃহবধূর মৃত্যুর তিন বছর পর স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা হয়। সে সময় তার বয়স ছিল মাত্র ২৩। সাতারার স্থানীয় আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেয় আত্মহত্যায় প্ররোচনার ও স্ত্রীর ওপর শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে।
তবে ২০২৫ সালের জুলাইয়ে মুম্বাই হাইকোর্টের বিচারপতি এসএম মোদক এ রায় খারিজ করে দেন।
বিচারপতি রায়ে বলেন, বৈবাহিক জীবনে সব বিরোধ ফৌজদারি অপরাধ নয়। অপরাধ তখনই হবে, যদি প্রমাণ হয় যে, হেনস্তার কারণে নারীর সামনে মৃত্যু ছাড়া অন্য কোনো পথ ছিল না। এই মামলায় তা প্রমাণিত হয়নি।
তিনি আরও বলেন, স্ত্রীর গায়ের রং নিয়ে খোঁটা দেওয়া, দ্বিতীয় বিয়ের হুমকি বা রান্নার সমালোচনা দুঃখজনক হলেও তা ফৌজদারি অপরাধের আওতায় পড়ে না। নিম্ন আদালত এখানে আইনের মৌলিক নীতি মানেনি।
সূত্র: আনন্দবাজার