ঢাকা রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫

হামাসকে ‘শেষ করার’ নির্দেশ ট্রাম্পের

সিএনএন
প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২৫, ০৭:১৬ পিএম
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি- সংগৃহীত

অচিরেই গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে একটি চুক্তি হবে বলে কয়েক সপ্তাহ আগেও আত্মবিশ্বাসী ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চুক্তিটি জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত ও ত্রাণ সরবরাহেও ভূমিকা রাখবে বলে আশা করেছিলেন। কিন্তু এখন সেই আশাবাদ ম্লান হয়ে গেছে।

মার্কিন প্রশাসন বলছে, হামাস ‘সৎ বিশ্বাসে কাজ করেনি’ এবং ‘সমন্বয় করেনি’। পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প এই সপ্তাহে তার আলোচকদের যুদ্ধবিরতি আলোচনা থেকে সরিয়ে নেন। তার মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ জানিয়েছেন, জিম্মিদের মুক্তির জন্য এখন ‘বিকল্প পথ’ খোঁজা হচ্ছে।

আলোচনা পুনরায় শুরুর আহ্বান জানানোর বদলে ট্রাম্প শুক্রবার (২৫ জুলাই) হোয়াইট হাউজে ইঙ্গিত দেন যে ‘ইসরায়েলে’র সামরিক অভিযান আরও তীব্র করার সময় এসেছে। যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার জন্য হামাসকেই দায়ী করেছেন ট্রাম্প। বলেছেন, ‘হামাসকে এখন খুঁজে খুঁজে বের করা হবে।’

গাজায় ক্ষুধার্ত শিশুদের ছবি নিয়ে বৈশ্বিক ক্ষোভের মধ্যেও তিনি বলেন, ‘হামাস সত্যিকার অর্থে কোনো চুক্তি করতে চায়নি। আমার মনে হয় তারা মরতে চায়, এবং এটা খুবই খারাপ। এক পর্যায়ে এসে কাজটা শেষ করতেই হবে।’

ট্রাম্পের এই অবস্থান পরিবর্তন আলোচনা ব্যর্থতার প্রতিফলন নাকি অচলাবস্থা ভাঙতে হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টির কৌশল—তা পরিষ্কার নয়। তবে তার বক্তব্য থেকে ধারণা করা হচ্ছে, গাজায় প্রায় ২১ মাস ধরে চলা সামরিক অভিযান বন্ধে ‘ইসরায়েলে’র ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপ বাড়ানোর সম্ভাবনা এখন কম।

এদিকে ক্রমবর্ধমান মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা গাজার সাধারণ মানুষকে ‘চলন্ত লাশ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ‘ইসরায়েলি’ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথোপকথনের বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তিনি শুধু এটুকু বলেছেন, গাজা ও সিরিয়ায় ‘ইসরায়েলে’র সাম্প্রতিক পদক্ষেপ তাকে ‘হতাশ’ করেছে।

হামাসের বিরুদ্ধে ‘ইসরায়েলে’র সামরিক অভিযান প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘তাদের লড়াই করতে হবে এবং এলাকা পরিষ্কার করতে হবে। তাদের থেকে মুক্তি পেতেই হবে।’

ট্রাম্পের এই মন্তব্য স্বীকারোক্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে যে নতুন যুদ্ধবিরতির জন্য তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। মাসের শুরুর দিকে যা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে মনে করা হচ্ছিল।

গাজায় সংঘাত বন্ধে ব্যর্থতা ও ইউক্রেনে যুদ্ধ শেষ করার চেষ্টা দুটো ক্ষেত্রেই ফলাফল না আসায় নোবেল শান্তি পুরস্কার নিয়ে তার উচ্চাকাঙ্ক্ষার জন্য এটি একটি ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

তবে ট্রাম্পের হতাশা অঞ্চলের অন্যান্য সংকেতের সঙ্গে পুরোপুরি মেলে না। মিশর ও কাতার জানিয়েছে, তারা এখনও গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতা চালিয়ে যাচ্ছে। এক যৌথ বিবৃতিতে মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, আলোচনার সাময়িক স্থগিত হওয়া ‘এই জটিল আলোচনার প্রেক্ষাপটে স্বাভাবিক’।