ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট, ২০২৫

পাঁচ মাসে গাজা দখলের নতুন পরিকল্পনা ‘ইসরায়েল’র

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২৫, ০৮:৩০ পিএম
বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের জন্য গাজা শহরের পাশে একটি আশ্রয় শিবির। ছবি- সংগৃহীত

‘ইসরায়েল’ সরকার গাজা উপত্যকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল দখলের একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করতে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যম। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আয়োজিত এক বৈঠকে এই অনুমোদনের সিদ্ধান্ত আসতে পারে। পাঁচ মাস মেয়াদি এই অভিযানে গাজা শহরসহ মধ্যাঞ্চলের শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে হামলার মাধ্যমে আরও প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে বাস্তুচ্যুত করা হতে পারে। সংবাবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।

এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য, হামাসের অবশিষ্ট অংশ ধ্বংস করা এবং বর্তমানে তাদের হাতে থাকা প্রায় ৫০ জন জিম্মির মুক্তি আদায় করা। ধারণা করা হচ্ছে, জিম্মিদের মধ্যে প্রায় ২০ জন এখনো জীবিত। তবে ‘ইসরায়েল’র শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, এমন অভিযান জিম্মিদের জীবনকে চরম ঝুঁকিতে ফেলবে।

চ্যানেল ১২-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পরিকল্পনার প্রথম ধাপে গাজা শহরের (উপত্যকার উত্তরাংশ) বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য একটি নির্দেশ জারি করা হবে। এতে প্রায় ১০ লাখ মানুষ (গাজার মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক) দক্ষিণে মাওয়াসি মানবিক এলাকায় সরে যেতে বাধ্য হবেন। এর মধ্যেই কেন্দ্রীয় গাজায় সাময়িক শিবির, হাসপাতাল ও অন্যান্য বেসামরিক অবকাঠামো গড়ে তোলার চেষ্টা চলবে।

এই ধাপটি কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে বলে জানা গেছে। এরপর দ্বিতীয় ধাপে ইসরায়েল বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দ্বিতীয় ধাপে অভিযান শুরু হওয়ার পরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি ভাষণে ইসরায়েলের সঙ্গে সমন্বয় করে গাজায় মানবিক সহায়তা ত্বরান্বিত করার ঘোষণা দেবেন।

এদিকে ‘ইসরায়েল’-এ নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি বুধবার ব্লুমবার্গ নিউজকে জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিচালিত চারটি সহায়তা কেন্দ্রের পাশাপাশি আরও ১২টি নতুন সহায়তা কেন্দ্র দ্রুত চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই সহায়তা কেন্দ্রগুলো ‘ইসরায়েল’ ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন পরিচালনা করবে।

এই পরিকল্পনা অনুমোদনের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা ক্যাবিনেট থেকে প্রয়োজনীয় সমর্থন পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী হওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সূত্র। যদিও কিছু মন্ত্রী আপত্তি তুলতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, তারপরও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার বৈঠকে নেতানিয়াহু সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

এর আগে মঙ্গলবার, প্রায় তিন ঘণ্টার একটি নিরাপত্তা বৈঠকে সেনাপ্রধান ইয়াল জামির গাজায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযান নিয়ে নেতানিয়াহুকে বিভিন্ন কৌশলগত বিকল্প উপস্থাপন করেন।

এই পরিকল্পনায় নতুন করে বিপুলসংখ্যক ফিলিস্তিনির বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মধ্যে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ যুদ্ধাপরাধের পর্যায়ে পড়তে পারে এবং এটি আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।