পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কারাবরণের দুই বছর পূর্তিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর কর্মী ও সমর্থকেরা।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সারা দেশে শান্তিপূর্ণ মিছিল ও সমাবেশে অংশ নেন হাজারো মানুষ, যাদের মূল দাবি ছিল, ইমরান খানের নিঃশর্ত মুক্তি।
পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, বিক্ষোভ ঠেকাতে সোমবার রাত ও মঙ্গলবার ভোরে লাহোরে ডজনখানেক পিটিআই কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে পিটিআই মুখপাত্র জুলফিকার বুখারী দাবি করেন, শুধু লাহোরেই ২০০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।
তার ভাষায়, ‘এই ধরপাকড় আন্দোলনকে দমানোর কৌশল হতে পারে, কিন্তু এটি আন্দোলনকে থামাতে পারবে না।’
২০২২ সালে সেনাবাহিনীর সঙ্গে টানাপোড়েনের পর পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খান। পরে ২০২৩ সালের মে মাসে দুর্নীতিসহ একাধিক মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই সময় দেশজুড়ে সামরিকবিরোধী ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ায় শুরু হয় পিটিআই নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান।
মঙ্গলবার সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, লাহোরে পুলিশ পিটিআই প্রার্থী রেহানা দারকে টেনেহিঁচড়ে একটি গাড়িতে তুলছে।
দলটির ভাষ্য, ‘রেহানা দারের মতো একজন প্রবীণকে অপমানজনকভাবে ধরার এই দৃশ্য পাকিস্তানের গণতন্ত্রের ওপর কালিমা।’ অন্য একটি ভিডিওতে আরও দুজন কর্মীকে আটক করতে দেখা যায়।
লাহোরে আয়োজিত একটি সমাবেশে পুলিশের হামলার অভিযোগ করেছে পিটিআই-এর মুলতান শাখা। সরকারিভাবে কোনো মন্তব্য না এলেও স্থানীয় গণমাধ্যমে এসব অভিযানের খবর উঠে এসেছে।
পিটিআই চেয়ারম্যান গোহর আলী খান জানিয়েছেন, ‘ইমরান খানের নির্দেশে আজকের আন্দোলন হয়েছে। তিনি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন থামবে না।’ এক্স অ্যাকাউন্টে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশে ‘প্রকৃত গণতন্ত্র’ না ফেরা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান রইল।
সরকারি নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও দেশজুড়ে পিটিআই-এর মিছিল ও সমাবেশগুলো পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
তথ্যসূত্র: এএফপি, ডন, পিটিআই-এর সামাজিক মাধ্যম অ্যাকাউন্ট
আপনার মতামত লিখুন :