পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর ২ দিনব্যাপী একাধিক পৃথক অভিযানে দেশটির নিষিদ্ধ রাজনৈতিক গোষ্ঠী তেহরিক-ই তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর ৩০ সদস্য নিহত হয়েছেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আন্তঃবিভাগ সংযোগ দপ্তর (আইএসপিআর) বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সোম এবং মঙ্গলবার খাইবার পাখতুনখোয়ার লাক্কি মারওয়াতি, মোহামান্দ, টাঙ্ক এবং কুররম—চার জেলায় অভিযান চালিয়েছে সেনা-পুলিশ যৌথ বাহিনী। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে কুররম জেলা—১২ জন।
টিটিপিকে ফিৎনা আল খারিজি নাম দিয়েছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সাম্প্রতিক অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে আইএসপিআর বলেছে, নিহত এই সন্ত্রাসীরা ফিৎনা আল খারিজি’র দুটি গ্রুপের।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী দুই পাকিস্তানি প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তানে সন্ত্রাসী তৎপরতা ও হামলার ঘটনা বেড়েছে।
খাইবার পাখতুনখোয়া মূলত পাকিস্তানপন্থি তালেবানগোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) ঘাঁটি অঞ্চল। অন্যদিকে বেলুচিস্তানে ব্যাপকভাবে তৎপর বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। এ দুটি গোষ্ঠীই পাকিস্তানে নিষিদ্ধ।
ইসলামাবাদভিত্তিক থিংকট্যাংক ‘সংস্থা সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ’ (সিআরএসএস) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, বিগত যেকোনো সময়ের তুলনায় ২০২৫ সালের ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাসে পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সহিংসতার হার বেড়েছে ৪৬ শতাংশ।
সিআরএসএসের তথ্য অনুযায়ী, জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ৩২৯টি। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৯০১ জন এবং আহত হয়েছেন ৫৯৯ জন।
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় পুলিশ বিভাগের একটি প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত শুধু খাইবার পাখতুনখোয়াতেই ঘটেছে ৬ শতাধিক সন্ত্রাসী হামলা। এসব হামলায় নিহত হয়েছেন ৭৯ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও কর্মী এবং ১৩৮ জন বেসামরিক।



