ঢাকা শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

টেক্সাসের বন্যায় নিহত ১২০, পরিদর্শনে ট্রাম্প

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২৫, ১১:৫৮ এএম
বন্যা দূর্গত এলাকা পরিদর্শনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।ছবি- সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের হিল কান্ট্রি অঞ্চলে ভয়াবহ আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পরিদর্শনে গিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশটির স্বাধীনতা দিবসের ভোরে আঘাত হানা এ বন্যায় অন্তত ১২০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে বহু শিশু রয়েছে।

শনিবার (১২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে রয়টার্স জানায়,  ফার্স্ট লেডি মেলানিয়াকে নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শুক্রবার এয়ার ফোর্স ওয়ানে চড়ে টেক্সাসের সান অ্যান্টোনিওর কাছে একটি বিমানঘাঁটিতে নামেন এবং তারপর কেরভিল শহরে যাত্রা করেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় ছয়মাসের মধ্যে টেক্সাসের এই বন্যাই সবচেয়ে প্রাণঘাতী দুর্যোগ।

এক সপ্তাহ আগে টানা ভারি বৃষ্টিতে নদীর পানি উপচে ওই অঞ্চলের বহু ঘরবাড়ি, সামার ক্যাম্পের শিশুরাসহ যানবাহন এবং আরও বহু মানুষ ভেসে যায়।

কের কাউন্টিতে মৃতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৯৬ ছাড়িয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে দেখা করেন এবং জরুরি ব্যবস্থাপনাকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলেন বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তা।

উদ্ধারকারীরা এখনও ধ্বংসস্তূপ আর কাদার স্তর খুঁজে চলেছে নিখোঁজদের খোঁজে। যদিও সম্প্রতি জীবিত কাউকে উদ্ধারের খবর মেলেনি। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বন্যায় অধিকাংশ মৃত্যু ও নিখোঁজের ঘটনা ঘটেছে টেক্সাস হিলের কার কাউন্টিতে ও এর প্রসাশনিক কেন্দ্র কারভিল শহরে। গত সপ্তাহের শুক্রবার প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে গুয়াডালুপে নদী অববাহিকা এলাকায় সৃষ্ট হড়কা বানে ২৫ হাজার বাসিন্দার কারভিল শহর একটি দুর্যোগপূণ এলাকায় পরিণত হয়।

কার কাউন্টিতে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে হান্ট শহরের নিকটবর্তী গুয়াডালুপে নদীর তীরের ক্যাম্প মিস্টিকে খ্রিষ্টীয় গ্রীষ্মকালীন কর্মশালায় থাকা ২৭ মেয়ে শিশু ও তাদের পরামর্শকও আছেন। বন্যার তাণ্ডবে ক্যাম্পটির পরিচালকেরও মৃত্যু হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কার কাউন্টিতে গিয়ে স্থানীয় কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ব্রিফিং শুনেন এবং সেখানকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন।

টেক্সাসে বন্যার পূর্বাভাস কতটুকু দেওয়া হয়েছিল তা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল আগেই। 

সমালোচকরা বলেন, আবহাওয়া বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট ফেডারেল সংস্থাগুলোতে ট্রাম্প প্রশাসনের বাজেট কাট-ছাঁটের ফলে সতর্কতা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এ কারণে বন্যার আগে তেমন কোনও সতর্কতা ব্যবস্থা ছিল না।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রাজ্য প্রশাসন থেকে অর্থ জোগাড় করতে না পেরে কার কাউন্টি বন্যার আগে আগাম সতর্কবার্তা দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করতে পারেনি। 

বন্যা পূর্বাভাস ও জরুরি বার্তা দেওয়ায় বিলম্ব নিয়ে ক্ষোভের মধ্যে ট্রাম্প বলেন, ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি ঠেকাতে কোনও ধরনের সতর্কতা ব্যবস্থা চালু করা দরকার।

তবে তিনি এও বলেন যে, স্থানীয় কর্মকর্তারাও হঠাৎ এই বিপর্যয়ে পড়েছেন। তারাও প্রস্তুত ছিলেন না।

ট্রাম্প প্রশাসনের বাজেট কাটছাঁটের ফলে বন্যার আগাম সতর্কবার্তা দেওয়ার ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে কিনা তা সরকারকে তদন্ত করে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেনেটের শীর্ষ ডেমোক্র্যাট চাক শুমার।

জাতীয় আবহাওয়া দপ্তর অবশ্য বলছে তারা বন্যার আগের দিন একাধিক ব্রিফিং করেছে এবং বন্যা সতর্কতা জারি করেছে। 

ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, সংস্থাটিতে যথেষ্ট কর্মী ছিল এবং তারা দুর্যোগে কার্যকরভাবেই সাড়া দিয়েছে।