শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২৫, ০৩:১৩ পিএম

এশিয়ায় ট্রাম্পের শুল্ক যুদ্ধ, কোন দেশের কী অবস্থা

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২৫, ০৩:১৩ পিএম

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প । ছবি-সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প । ছবি-সংগৃহীত

চলতি বছরের ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের ওপর ‘প্রতিশোধমূলক’ শুল্ক ঘোষণা করে একে ‘লিবারেশন ডে’ হিসেবে অভিহিত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর থেকে বিভিন্ন দেশের সাথে আলোচনার পর নিজেই নিজের সিদ্ধান্ত বেশ কয়েকবার পাল্টিয়েছেন তিনি। সবশেষ ৩১ জুলাই ৯০টিরও বেশি দেশের ওপর নতুন শুল্কহার ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৪১ শতাংশ পর্যন্ত রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ বা পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন তিনি।

ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপে এশিয়ার দেশগুলোই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর বিবিসির। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গত এপ্রিলের ‘লিবারেশন ডে’-তে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত শুল্কে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় শীর্ষে আছে এশিয়ার রপ্তানিনির্ভর দেশগুলো।

জাপানসহ যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্যবাহী মিত্র দেশগুলো থেকে শুরু করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো পর্যন্ত অনেক দেশই, বিশেষ করে যারা মার্কিন বাজারনির্ভর রপ্তানি করে, ১ আগস্টের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির জন্য তৎপর হয়ে ওঠে। তবে এশিয়ার অনেক দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান মিত্র রাষ্ট্রগুলো (তাইওয়ান, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া) কিছুটা ভালো অবস্থানে আছে।

জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া এপ্রিল মাসে প্রস্তাবিত ২৫ শতাংশ শুল্কের মুখে পড়েছিল। দেশ দুটির গাড়ি ও সেমিকন্ডাকটর পণ্য মার্কিন বাজারে আধিপত্য বিস্তার করছে। তবে সামরিক দিক থেকেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায়, জুলাইয়ের শেষ নাগাদ ওয়াশিংটনে বাণিজ্য প্রতিনিধি পাঠিয়ে এই শুল্ক হার কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয় তারা।

গত ২২ জুলাই ট্রাম্প জাপানের সঙ্গে চুক্তিকে “ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য চুক্তি” বলে ঘোষণা দেন। দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে চুক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয় ৩০ জুলাই।

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনকারী ও যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র তাইওয়ানের পণ্যে শুল্ক হার ৩২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। তবে তাদের চিপ শিল্পকে আলাদা খাতে নতুন শুল্কের মুখে পড়তে হতে পারে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়।তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে বলেন, বর্তমানে কার্যকর শুল্ক হারটি ‘অস্থায়ী’, কারণ ওয়াশিংটনের সঙ্গে এখনও আলোচনা চলছে।

অস্ট্রেলিয়ার পণ্যে এপ্রিলে ১০ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছিল, যা এখনো বহাল আছে। তবে প্রতিবেশী নিউজিল্যান্ডের ক্ষেত্রে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৫ শতাংশ হয়েছে।

চীন ও ভারতের অবস্থা কী?

যুক্তরাষ্ট্রে সর্বশেষ শুল্ক ঘোষণায় চীনের নাম না থাকলেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে দেশটি। গত কয়েক মাসে জেনেভা, লন্ডন ও স্টকহোমে বেইজিং-ওয়াশিংটনের মধ্যে একাধিক কূটনৈতিক বৈঠক হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, চীন যুক্তরাষ্ট্রের মূল প্রযুক্তি— যেমন সেমিকন্ডাক্টরের ওপর রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ স্থগিত রাখার চেষ্টা করছে। এর বদলে চীন বিরল খনিজের স্থিতিশীল সরবরাহ বজায় রাখবে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র চায় চীন যেন ফেন্টানিল উৎপাদন কমায়, মার্কিন কোম্পানিগুলোর বাজারে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি করে, আরও মার্কিন কৃষিপণ্য ও অন্যান্য পণ্য কিনে এবং যুক্তরাষ্ট্রে আরও বিনিয়োগ করে।তবে দুই দেশই এখন তাদের চলমান বাণিজ্য যুদ্ধবিরতি আরও ৯০ দিন বাড়াতে সম্মত হয়েছে, যা আগামী ১২ আগস্ট শেষ হওয়ার কথা ছিল।

ভারতের ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্র ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, সঙ্গে রাশিয়া থেকে তেল ও অস্ত্র কেনার জন্য “অনির্দিষ্ট জরিমানা” ধার্য করেছে ওয়াশিংটন। তবে ভারতের ওপর আরোপিত সর্বশেষ শুল্ক চলতি বছরের এপ্রিলে প্রস্তাবিত ২৭ শতাংশ শুল্কের চেয়ে কিছুটা কম।

আসিয়ান দেশগুলোর ভিন্ন ভিন্ন পরিণতি:

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো মার্কিন শুল্কের ঘোষণার পর একেক রকম অবস্থায় পড়েছে। ট্রাম্প গত ২ এপ্রিল যেদিন নাটকীয়ভাবে শুল্ক ঘোষণা দেন, এই অঞ্চলেই সবচেয়ে বেশি আলোড়ন তৈরি হয়। কারণ, এখানকার অর্থনীতি মূলত রপ্তানি নির্ভর। শুরুর দিকে কোনো কোনো দেশের ওপর ৪৯ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসানো হয়। এতে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের ইলেকট্রনিকস শিল্প, মালয়েশিয়ার চিপ নির্মাতা এবং কম্বোডিয়ার পোশাক কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

দশ আসিয়ান দেশের মধ্যে ভিয়েতনাম প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করে চুক্তিতে পৌঁছায়। তারা শুল্ক হার ৪৬ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়। 

সর্বশেষ হালনাগাদ তালিকা অনুসারে, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম— সবাই এখন ১৯ থেকে ২০ শতাংশ শুল্কের আওতায় পড়েছে। ব্রুনেইয়ের ক্ষেত্রে এই হার ২৫ শতাংশ।

তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লাওস ও মিয়ানমার— তাদের ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হয়েছে। সিঙ্গাপুরের ক্ষেত্রে শুল্ক হার অপরিবর্তিত রয়েছে অর্থ্যাৎ ১০ শতাংশ। দেশটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বেশি করে, রপ্তানি করে কম।

অন্য দেশগুলোর পরিস্থিতি কী?

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোর শুল্ক হার ভিন্ন ভিন্ন। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে শুল্ক হার ১৯ শতাংশ— যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে কম এবং ভারতের চেয়ে অনেকটাই কম। পাকিস্তানের মোট রপ্তানির প্রায় ৬০ শতাংশ হচ্ছে টেক্সটাইল, যার বেশির ভাগই যুক্তরাষ্ট্রে যায়। অন্যদিকে, এই খাতে পাকিস্তানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীরা (ভারত, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম) সবাই এখন বেশি শুল্কের আওতায়। আফগানিস্তান, ফিজি, নাউরু এবং পাপুয়া নিউ গিনি সবাই ১৫ শতাংশ শুল্কের আওতায় পড়েছে। কাজাখস্তানের জন্য এই হার ২৫ শতাংশ।

 

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!