ভেনেজুয়েলার ভেতরে মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে হামলার জন্য ‘বিকল্প প্রস্তুতি’ নিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দেশটির সীমান্তের ভেতরে এই হামলা শুরু হতে পারে। এখন শুধু অপেক্ষা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদন।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) পরিকল্পনার সঙ্গে পরিচিত দুই মার্কিন কর্মকর্তা ও আলোচনার সঙ্গে সম্পৃক্ত আরও দুটি সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিসি নিউজ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, পরিকল্পনাগুলো নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলার অনুমতি তাদের ছিল না। ভেনেজুয়েলার ভেতরে হামলা চালানো হলে তা মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের সামরিক অভিযান এবং ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি তাদের অবস্থানের আরও এক তীব্রতা বৃদ্ধি পাবে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তারা লাতিন আমেরিকার দেশটির উপকূলে মাদক বহনকারী অন্তত তিনটি নৌকা ডুবিয়ে দিয়েছে। এতে কমপক্ষে ১৭ জন নিহত হয়েছেন।
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো মাদক পাচারের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, এসব হামলা তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার মার্কিন প্রচেষ্টারই অংশ।
এনবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ভেনেজুয়েলায় বোমা হামলা হতে পারে বলে। তবে তাদের সূত্র অনুযায়ী, এ পদক্ষেপ এখনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদন পায়নি।
কর্মকর্তাদের মতে, ওয়াশিংটনে আলোচনার মূল বিষয় হলো মাদক পরীক্ষাগার ও পাচারকারী গোষ্ঠীর সদস্য এবং নেতাদের লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালানো।
একটি সূত্র জানিয়েছে, ক্যারিবীয় অঞ্চলে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ও বিমান মোতায়েন এবং নৌকায় হামলার পরও মাদুরোর ক্ষমতা দুর্বল হয়নি। কোনো উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়াও পাওয়া যায়নি। তাই যুক্তরাষ্ট্র আরও উত্তেজনা বাড়ানোর কথা বিবেচনা করছে।
প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এনবিসিকে বলেন, ট্রাম্প ‘আমাদের দেশে মাদকের স্রোত ঠেকাতে এবং দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে আমেরিকান শক্তির প্রতিটি উপাদান ব্যবহার করতে প্রস্তুত।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলা অনির্দিষ্ট মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে আলোচনা করছে। একটি সূত্র জানিয়েছে, উত্তেজনা প্রশমনের জন্য মাদুরো ট্রাম্পকে কিছু ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন।
শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান গিল পিন্টো যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের মাথার ওপর ঝুলছে অবৈধ ও সম্পূর্ণ অনৈতিক সামরিক হুমকি।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, কারাকাস সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন প্রতিহত করবে। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন কামনা করেন। বলেন, ‘ভেনেজুয়েলা চাপ বা হুমকির কাছে নতি স্বীকার করবে না। আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব এবং বিদেশি হস্তক্ষেপমুক্ত শান্তিতে বসবাসের অধিকার রক্ষায় দৃঢ় আছি।’