ঢাকা শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

মহাকাশে শক্তির ‘মহড়া’ বাড়াচ্ছে ইরান

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫, ০৬:৫৪ পিএম
দুটি নতুন স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করবে ইরান। ছবি- সংগৃহীত

আগামী কয়েক মাসের মধ্যে দুটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করেছে ইরান। এই পদক্ষেপ কেবল প্রযুক্তিগত নয়, বরং দেশটির দীর্ঘমেয়াদী মহাকাশ কৌশলের প্রতিফলন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মহাকাশ উদ্যোগ তেহরানের জন্য আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কৌশলগত সুবিধা নিশ্চিত করতে পারে। দেশটি প্রযুক্তিগত স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি ভবিষ্যতে সামরিক, বাণিজ্যিক এবং বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রেও নিজের প্রভাব বিস্তার করতে প্রস্তুত।

উৎক্ষেপণের পরিকল্পনায় থাকা স্যাটেলাইট দুটো হলো পার্স-১ ও নাহিদ-২। বিশেষজ্ঞদের মত, এগুলোর উৎক্ষেপণ কেবল বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য নয়। কিইউ-ব্যান্ড প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্যাটেলাইট রিলে যোগাযোগ ও ডেটা ট্রান্সমিশনের সক্ষমতা সম্প্রসারণের মাধ্যমে ইরান নিজের টেলিযোগাযোগ ও নজরদারি সক্ষমতা শক্তিশালী করতে চায়। 

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মেহের নিউজ জানিয়েছে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে দুটি স্যাটেলাই উৎক্ষেপণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন দেশটির মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান ওয়াহিদ ইয়াজদানিয়ান। এটি দেশের সম্প্রসারণশীল মহাকাশ কর্মসূচির অংশ।

ইয়াজদানিয়ান বলেন, রিমোট সেন্সিংয়ের জন্য তৈরি পার্স-১ স্যাটেলাইট সম্ভবত ডিসেম্বরে উৎক্ষেপণ করা হবে। এটি মূলত ন্যাচারাল রিসোর্স পর্যবেক্ষণ ও পরিবেশগত ডেটা সংগ্রহের কাজে ব্যবহার করা হবে। মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নির্মিত নাহিদ-২ স্যাটেলাইটের দ্বিতীয় সংস্করণ ফেব্রুয়ারিতে একটি দেশীয় লঞ্চারের মাধ্যমে মহাকাশে পাঠানো হবে।

প্রযুক্তিগত বিশদ তুলে ধরে তিনি বলেন, নাহিদ-২ একটি টেলিযোগাযোগ স্যাটেলাইট। এর আয়ুষ্কাল দুই বছর। ওজন ১২০ কিলোগ্রাম। এটি ৫০০ কিলোমিটার উচ্চতায় কক্ষপথে স্থাপন করা হবে। স্যাটেলাইটটির কক্ষপথের প্রবণতা ৫৫ ডিগ্রি। এটি রাসায়নিক চালনা ব্যবহার করবে, যার এক-নিউটন থ্রাস্ট রয়েছে। গড় শক্তি ক্ষমতা ৪৯ ওয়াট। নাহিদ-২-এর ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডের মধ্যে রয়েছে কেইউ, এক্স এবং ইউএইচএফ। স্যাটেলাইটভিত্তিক রিলে যোগাযোগ ও ডেটা ট্রান্সমিশন সক্ষম করে ইউএইচএফ।

তিনি আরও জানান, বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহে ইরান নাহিদ-২-এর কর্মক্ষম স্থিতিশীলতা এবং কেইউ-ব্যান্ডের কার্যকারিতা সম্পর্কে ‘সুসংবাদ’ দেবে। এই প্রযুক্তি নিকট ভবিষ্যতে দেশের স্যাটেলাইট যোগাযোগ সক্ষমতা সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ইরানের মহাকাশ কর্মসূচি সম্প্রসারণের লক্ষ্য হচ্ছে দেশের নিজস্ব তথ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা, স্থানীয় প্রযুক্তি উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করা এবং আন্তর্জাতিক মহাকাশ সম্প্রদায়ে দেশের উপস্থিতি বৃদ্ধি করা।