ঢাকা শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

যেভাবে একাত্তরের ‘বদনাম’ ঘোচাতে চায় জামায়াত

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫, ০৮:২৩ পিএম
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর লোগো। ছবি - সংগৃহীত

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা বদনাম’ চাপানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির নায়েবে আমির ড. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাংলাদেশ আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন (কোবা)-এর উদ্যোগে আয়োজিত এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. তাহের বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে কারো সঙ্গে কোনো কম্প্রোমাইজ করা হবে না। আমাকে অনেকে ভয় দেখায়- যদি আমরা ক্ষমতায় আসি, পাশের দেশের লোকেরা ঢুকে পড়বে। আমি বলি, আমি দোয়া করি তারা ঢুকুক। ঢুকলেই আমাদের সেই বদনাম যাবে, যা ১৯৭১ সালে মিথ্যাভাবে চাপানো হয়েছে। তখন আমরা প্রকৃত স্বাধীনতার যোদ্ধা হিসেবে নিজেদের প্রমাণের সুযোগ পাব।’

তিনি দাবি করেন, ‘কমপক্ষে ৫০ লাখ যুবক ভারতের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার যুদ্ধ করবে। এদের এক ভাগ গেরিলা যুদ্ধে যাবে। ঘোড়া নামলেই লাঠি দিয়ে ধরবে।... বাকি অর্ধেক বিস্তৃত এলাকায় চলে যাবে, পুরো রিজিয়নে স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাসূল (সা.)-এর গাজওয়া সম্পর্কিত যে হাদিস আছে, সেটার বাস্তবায়নের মহাপরিকল্পনা হবে।’

ড. তাহেরের মতে, আওয়ামী লীগ কিংবা দেশের অন্য বড় রাজনৈতিক দলগুলো ভারতের বিরুদ্ধে কোনো যুদ্ধ করবে না বা করতে পারবে না। ‘তখন সংগঠিত শক্তি আমরা হবো। তখন আমরা হবো খাঁটি মুক্তিযোদ্ধা।’

বধ্যভূমিতে জামায়াত

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বিজয়ী ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতারা রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে দোয়া ও মোনাজাত করেন। ১৯৭১ সালের পর এটাই প্রথমবারের মতো কোনো জামায়াত-সমর্থিত সংগঠনের শহীদ স্মৃতিসৌধে উপস্থিতি।

ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে যা ভাবছে জামায়াত

উল্লেখ, জামায়াতে ইসলামী দলীয়ভাবে ১৯৭১ সালের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে বলেও জানা গেছে। দলের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতার জন্য ভুল স্বীকার ও ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে রাজনৈতিক বিতর্কে নীতিনির্ধারকরা এখন আগের চেয়ে বেশি মনোযোগী।

জামায়াতের সাবেক কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক অতীতে এই ইস্যুতে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। এ কারণে আবদুর রাজ্জাক দলীয় পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছিলেন। তিনি সম্প্রতি মৃত্যুবরণ করেন। আর কামারুজ্জামান একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসিতে দণ্ডিত হন।

তিনি কারাগার থেকে দলীয় আমিরকে লেখা একটি দীর্ঘ চিঠিতে জামায়াতে ইসলামীতে সংস্কার আনার কিছু প্রস্তাবও দিয়েছিলেন।