ঢাকা বুধবার, ০৫ নভেম্বর, ২০২৫

কার্গো বিমান বিধ্বস্তে যুক্তরাষ্ট্রে ৭ জনের মৃত্যু

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৫, ০৫:৫৯ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকিতে কার্গো বিমান বিধ্বস্ত। ছবি- সংগৃহীত

মার্কিন অঙ্গরাজ্য কেন্টাকির লুইসভিল শহরে ভয়াবহ এক বিমান দুর্ঘটনায় অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ১১ জন—এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

গতকাল মঙ্গলবার (০৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই ইউপিএসের একটি পণ্যবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়ে বিস্ফোরিত হয়।

উড্ডয়নের পরপরই ভয়াবহ বিস্ফোরণের ফলে আকাশজুড়ে ঘন কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে লুইসভিল মুহাম্মদ আলী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে বিমানটি। অল্প সময়ের মধ্যেই এটি বিধ্বস্ত হয়ে আগুন ধরে যায় এবং আশপাশের এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

কেন্টাকি রাজ্যের গভর্নর অ্যান্ডি বেসিয়ার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘যারা দুর্ঘটনার ছবি ও ভিডিও দেখেছেন, তারা জানেন ঘটনাটি কতটা ভয়াবহ। এখনো এলাকাটিতে দাহ্য পদার্থ ও সম্ভাব্য বিস্ফোরক বস্তু রয়েছে, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।’

তিনি জানান, নিহতদের মধ্যে বিমানের তিনজন ক্রু সদস্য থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে এবং মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

দুর্ঘটনার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। গভর্নর বেসিয়ার বলেন, তদন্তের নেতৃত্ব দেবে জাতীয় পরিবহন নিরাপত্তা ব্যুরো (এনটিএসবি)। সংস্থার তদন্তকারী দল আজ বুধবার লুইসভিলে পৌঁছাবে। লুইসভিল মেট্রো পুলিশের প্রধান পল হামফ্রে জানান, তদন্তের স্বার্থে দুর্ঘটনাস্থল আগামী কয়েক দিন পুরোপুরি বন্ধ থাকবে।

বিধ্বস্ত বিমানটি ছিল এমডি-১১ মডেলের ত্রৈ-ইঞ্জিন কার্গো বিমান। ৩৪ বছর আগে এটি থাই এয়ারওয়েজে যাত্রীবাহী জেট হিসেবে যুক্ত হয়েছিল এবং ২০০৬ সালে ইউপিএসের বহরে আসে।

বিমান প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান বোয়িং এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, ইউপিএস কর্মী এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের পাশে আছি। তদন্তে আমরা কারিগরি সহায়তা দেব।’

দুর্ঘটনার পর লুইসভিলে অবস্থিত ইউপিএসের বিশাল ওয়ার্ল্ডপোর্ট প্যাকেজ হ্যান্ডলিং কেন্দ্রের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

ইউপিএস এক বিবৃতিতে জানায়, ‘আমরা এই দুর্ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত। আমাদের কর্মী, গ্রাহক ও সম্প্রদায়ের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’

স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিমানটি হাওয়াইয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। উড্ডয়নের সময় বিমানে প্রায় ৩৮ হাজার গ্যালন জ্বালানি ছিল, যা আগুনের তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়। এখনো জানা যায়নি বিমানে কী ধরনের পণ্য বহন করা হচ্ছিল।

লুইসভিল সিটি কাউন্সিলের সদস্য বেটসি রুহে বলেন, “লুইসভিল এক ‘ইউপিএস শহর’। এখানে প্রায় প্রতিটি পরিবারেই ইউপিএসের কেউ না কেউ কাজ করে। সবাই এখন তাদের প্রিয়জনদের খোঁজ নিচ্ছেন।”

শহরের মেয়র ক্রেগ গ্রিনবার্গ এক বার্তায় বলেন, ‘এটি এক অবিশ্বাস্য ট্র্যাজেডি, যা আমাদের শহর কখনো ভুলবে না। আমরা কৃতজ্ঞ আমাদের সাহসী উদ্ধারকর্মীদের প্রতি, যারা প্রাণপণ চেষ্টা করছেন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং আহতদের উদ্ধার করতে।’