ঢাকা বুধবার, ০৫ নভেম্বর, ২০২৫

নতুন বছরেও এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি নিয়ে অনিশ্চয়তা

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৫, ০৬:২৮ পিএম
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষিকা। ছবি- এআই দিয়ে বানানো

ধারণা করা হচ্ছিল, বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি নিয়ে আলোচনা হবে। অথচ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভা শেষ হলো এ নিয়ে কোনো আলোচনা ছাড়াই। অন্যদিকে নেই বদলির সফটওয়ার তৈরির অগ্রগতিও। সংশ্লিষ্টরাও বলতে পারছেন না কবে নাগাদ সফটওয়ার তৈরি হবে। ফলে আসন্ন নতুন বছরেও শিক্ষকদের বদলি সমস্যা সমাধান হবে কি না তা নিয়েও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।

এমন পরিস্থিতিতে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে শিক্ষকদের মাঝে। তারা একযোগে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। আগামী ১০ নভেম্বর ‘বাংলাদেশ বদলি-প্রত্যাশী শিক্ষক ঐক্যজোট’ ব্যানারে আন্দোলনে নামবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সভাকক্ষে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসে কর্মকর্তারা, যেখানে অনার্স-মাস্টার্স কলেজ, বিএড স্কেলসহ নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু সভায় শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবি বদলি নিয়ে কোনো আলোচনায় হয়নি।

এ বিষয়ে সভায় উপস্থিত মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ‘আজকের সভায় বদলি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। বদলির সফটওয়্যার তৈরি না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার সুযোগও নেই।’

এদিকে বদলির সফটওয়্যার তৈরির জন্য টেলিটক বাংলাদেশকে চিঠি দেওয়া হলেও তারা বদলির সফটওয়্যারের স্পষ্ট কোনো বক্তব্য দিতে পারেনি। ফলে কবে নাগাদ বদলির সফটওয়্যার তৈরি হবে তা নিশ্চিত করতে পারেনি মন্ত্রণালয়ও।

‘আমরা টেলিটককে চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা এখনো কিছু জানায়নি। আমরা এ নিয়ে তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করছি,’ বলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) মো. মিজানুর রহমান।

মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমে ধোঁয়াশা তৈরি হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন শিক্ষকরা। শিক্ষকদের সংগঠনগুলো এ নিয়ে দফায় দফায় আলোচনাও করছেন। এখন তারা আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

শিক্ষক নেতারা বলছেন, দ্রুত বদলি কার্যকর করার লক্ষ্যে তারা একযোগে আন্দোলনে নামবেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রভাষক মো. সরোয়ার বলেন, ‘আমরা আগামী ১০ নভেম্বর একযোগে আন্দোলন কর্মসূচি শুরু করব।’

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকদের বদলির কোনো সুযোগ নেই। এনটিআরসিএ কর্তৃক প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সুযোগ পেতেন তারা।

তবে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ বন্ধ করে দেয় সরকার। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েন শিক্ষকরা।

পরে বদলি চালুর দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষকদের একাধিক সংগঠন, যার প্রেক্ষিতে বদলি চালুর উদ্যোগ নেয় সরকার।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে এনটিআরসিএর সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নানা শর্তে বদলি চালুর জন্য একটি নীতিমালা তৈরি করে সরকার। এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারির পর মাউশির এক পরিচালকের মাধ্যমে একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হয়। তবে এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেওয়ায় নতুন করে সফটওয়্যার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।