মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৫, ০১:৩৪ এএম

শারদীয় দুর্গোৎসব

মন্দিরে মন্দিরে দর্শনার্থীদের  ভিড়, আজ মহাষ্টমী

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৫, ০১:৩৪ এএম

মন্দিরে মন্দিরে দর্শনার্থীদের  ভিড়, আজ মহাষ্টমী

বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার তৃতীয় দিন মহাষ্টমী আজ মঙ্গলবার। প্রতিবছরের মতো এবারও মহাষ্টমীতে সকালে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে অনুষ্ঠিত হবে কুমারী পূজা। মাতৃভাবে কুমারী কন্যাকে জীবন্ত প্রতিমা করে তাতে জগজ্জননীর উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করাই কুমারী পূজা। শাস্ত্রমতে, এদিন মা দুর্গার অপর কোনো নামে কুমারীর নামকরণ করা হবে।

রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামী মহারাজ একনাথনন্দ কুমারী পূজার গভীর আধ্যাত্মিক তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে বলেন, নারী মানে মায়ের প্রতীক। কুমারী পূজা মানে স্বয়ং মাকে পূজা করা। আমরা একজন কুমারীকে মাতৃজ্ঞানে পূজা করি, কারণ এই ধরণীর সব নারীর মাঝেই দেবী দুর্গার দিব্যরূপ ও শক্তি বিদ্যমান। এই পূজা মূলত নারীর প্রতি সম্মান এবং মাতৃশক্তির চিরন্তন সত্যের প্রতীকী উপাসনা। তিনি জানান, কোনো ছোট্ট শিশুকন্যাকে ‘কুমারী মা’-এর আসনে বসানোর পরপরই সকাল ৬টা ৩৩ মিনিটে রামকৃষ্ণ মিশনে শুরু হবে কুমারী পূজার আনুষ্ঠানিকতা। সকাল ৯টা ২৮ মিনিটের মধ্যে কুমারী পূজা শেষ হবে। বিকেল ৫টা ৩৭ মিনিটে সন্ধিপূজা শেষ হবে। মধ্যাহ্নে মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হবে। ১৬টি উপকরণ দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতার সূত্রপাত হবে। এরপর অগ্নি, জল, বস্ত্র, পুষ্প ও বাতাসÑ এই পাঁচ উপকরণে দেওয়া হয় ‘কুমারী’ মা-এর পূজা। অর্ঘ্য প্রদানের পর দেবীর গলায় পরানো হবে পুষ্পমাল্য। পূজার শেষে প্রধান পূজারি দেবীর আরতি নিবেদন করে দেবীকে প্রণাম করবেন। পূজার মন্ত্র পাঠ করে ভক্তদের মধ্যে চরণামৃত বিতরণের মধ্য দিয়ে ৪০ মিনিট পর শেষ হবে পূজার আনুষ্ঠানিকতা।

অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে দেবী দুর্গা স্বয়ং স্বর্গীয় আবির্ভাব ঘটাবে এক কিশোরীর মাঝে। দেবীরূপে মানবীর মঞ্চে অধিষ্ঠিত হবেন মাত্র সাত বছর বয়সি রাজশ্রী ভট্টাচার্য্য। কুমারী বেশে সেই মহামায়াকেই মাতৃজ্ঞানে পূজা করবেন দেশ-বিদেশ থেকে আসা শত শত ভক্ত, এক বিরল আধ্যাত্মিক মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছে গোটা শহর। মহাষ্টমীর সকালে রাজশ্রীকে পূজার ম-পে তুলে এনে ষোড়শ উপাচারে পূজা করা হবে। তার এই দেবীরূপে প্রকাশকে ঘিরে তার পরিবার এবং স্থানীয়দের মধ্যে উৎসাহের বাঁধ ভেঙেছে। রাজশ্রী ভট্টাচার্য্য নারায়ণগঞ্জের দেওভোগ আখড়া এলাকার পাপ্পু ভট্টাচার্য্য ও স্বর্ণা ভট্টাচার্য্যরে মেয়ে। সে নারায়ণগঞ্জ আইডিয়াল স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী।

দেবী পুরাণে কুমারী পূজার সুস্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। দুর্গা মাতৃভাবের প্রতীক আর কুমারী নারীর প্রতীক। কুমারীর মধ্যে মাতৃভাব প্রতিষ্ঠাই এ পূজার মূল লক্ষ্য। শাস্ত্র অনুসারে সাধারণত এক বছর থেকে ১৬ বছরের সুলক্ষণা কুমারীকে পূজা করা হয়। বয়স ভেদে কুমারীর নাম হয় ভিন্ন। ১৯০১ সালে ভারতীয় দার্শনিক ও ধর্মপ্রচারক স্বামী বিবেকানন্দ সর্বপ্রথম কলকাতার বেলুড় মঠে ৯ জন কুমারী পূজার মাধ্যমে এর পুনঃপ্রচলন করেন। তখন থেকে প্রতিবছর দুর্গাপূজার অষ্টমী তিথিতে এ পূজা চলে আসছে। পূজার আগ পর্যন্ত কুমারীর পরিচয় গোপন রাখা হয়। এ ছাড়া নির্বাচিত কুমারী পরবর্তী সময়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন আচার-অনুষ্ঠান করতে পারে।

এদিকে দুর্গোৎসবের দ্বিতীয় দিনে গতকাল সোমবার সারা দেশে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় মর্যাদায় মহাসপ্তমী উদযাপিত হয়েছে। নবপত্রিকা স্থাপনের মধ্য দিয়ে মহাশক্তি আনন্দময়ীর পূজা শুরু হয়। মহাসপ্তমীতে ষোড়শ উপচারে অর্থাৎ ষোলটি উপাদানে দেবীর পূজা হয়। সকালে ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার চক্ষুদান করা হয়। সেই সঙ্গে দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্থানীয়, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে দেবীর পূজা করেন ভক্তরা। সকালে পূজা শুরু হলেও দুপুরের পর থেকে ম-পগুলোয় ঢল নামে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের। শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাই নন, সব ধর্মের দর্শনার্থীরাই ম-পে ম-পে প্রতিমা দেখতে ভিড় করেন। মহাষ্টমীতে ভিড় আরও বাড়বে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। 

সপ্তমীতে সকালে ম-প ঘুরে দেখা গেছে, ভক্তরা প্রার্থনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। পুরোহিতের সঙ্গে মন্ত্রে সুর মিলিয়ে করছেন দুর্গা মায়ের বন্দনা। কেউ কেউ এসেছেন শুধু দেবী দর্শনে। পূজা শেষে বিতরণ করা হয়েছে মহাপ্রসাদ। এ সময় দীর্ঘ লাইনে প্রসাদ নিতে দেখা গেছে ভক্তদের। রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার বাসিন্দা রঞ্জিত রায় পরিবারসহ এসেছিলেন কলাবাগান পূজাম-পে। প্রার্থনা শেষে তিনি জানান, ভক্তদের দুঃখ-কষ্ট দূর করতে মা প্রতিবছর আসেন। আমাদের মধ্যে অনাবিল সুখ-সমৃদ্ধি বিলিয়ে দিয়ে বিদায় নেন। তাই মায়ের কাছে সুখ-শান্তি সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যেন সবাই পরিবারসহ নিরাপদে থাকেন, দেশে শান্তি বজায় থাকুক। 

পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্বেগ: দেশে বিভিন্ন স্থানে কিছু প্রতিমায় অসুরকে বিকৃতভাবে উপস্থাপনের ঘটনা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর ও সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব ও সাধারণ সম্পাদক ড. তাপস চন্দ্র পাল গতকাল সোমবার এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, এ ঘটনা নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সেনাবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এ নিয়ে ভুল-বোঝাবুঝির কোনো অবকাশ নেই। যেকোনো ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়াতে সারা দেশের পূজা কমিটিগুলোকে অধিকতর সজাগ থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!