ধাতব-জৈব কাঠামো আবিষ্কারের জন্য চলতি বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন দেশের তিন বিজ্ঞানী। তাঁরা হলেন জাপানের কিউটো বিশ্ববিদ্যালয়ের সুসুমু কিতাগাওয়া, অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের রিচার্ড রবসন এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলির ওমর এম ইয়াঘি।
গতকাল বুধবার বাংলাদেশ সময় ৩টা ৪৫ মিনিটে সুইডেনের স্টকহোম থেকে এ বছরের রসায়নে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্স। নোবেল কমিটি জানিয়েছে, তারা মেটাল-অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্কসের বিকাশ ঘটানো বা ধাতব-জৈব কাঠামো আবিষ্কারের জন্য এই সম্মাননা পাচ্ছেন।
এই আণবিক কাঠামো এত বড় যে এর মধ্য দিয়ে গ্যাস ও তরল প্রবাহিত হতে পারে। মরুভূমির বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ, কার্বন ডাই-অক্সাইড ধরা, বিষাক্ত গ্যাস সংরক্ষণ এবং রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অনুঘটক হিসেবে এসব কাঠামো ব্যবহার করা যায়।
নোবেল কমিটি জানিয়েছে, গবেষকেরা এই কাঠামো ব্যবহার করে মরুভূমির বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ করেছেন। দূষিত পানি থেকে ক্ষতিকর পদার্থ আলাদা করেছেন। আবার কার্বন ডাই-অক্সাইড আটকে রাখা এবং হাইড্রোজেন সংরক্ষণেও এ প্রযুক্তি কাজে লাগানো হয়েছে।
গত বছর রসায়নের নোবেল পেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী ডেভিড বেকার এবং ব্রিটিশ গবেষক ডেমিস হাসাবিস ও জন জাম্পার। প্রাণের অপরিহার্য জৈব অণু প্রোটিনের জটিল গঠনরহস্য উন্মোচনে ভূমিকার জন্য তাদের এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
সুসুমু কিতাগাওয়া ১৯৫১ সালে জাপানের কিয়োটোতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। রিচার্ড রবসন ১৯৩৭ সালে যুক্তরাজ্যের গ্লাসবার্নে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। পরে তিনি অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হন। ওমর এম ইয়াগি ১৯৬৫ সালে জর্ডানের আম্মানে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তাঁর পরিবারের মূল শেকড় ফিলিস্তিনে প্রোথিত। তিনি ১৯৯০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় আর্বানা-শ্যাম্পেইন থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলেতে অধ্যাপনা করছেন।
নোবেল বিজয়ী এই বিজ্ঞানীরা পাবেন একটি মেডেল, একটি সনদপত্র এবং মোট ১১ মিলিয়ন বা ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা। যেসব বিভাগে একাধিক নোবেল বিজয়ী থাকবেন, তাদের মধ্যে এই ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা ভাগ হয়ে যাবে। বর্তমান বাজারে এর মান প্রায় ১২ লাখ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
বরাবরের মতোই চিকিৎসা বিভাগের পুরস্কার ঘোষণার মধ্য দিয়ে সোমবার চলতি বছরের নোবেল মৌসুম শুরু হয়। মঙ্গলবার ঘোষণা হয় পদার্থবিদ্যার নোবেল।
আজ বৃহস্পতিবার বিকালে আসবে সাহিত্যের নোবেল ঘোষণা। এরপর আগামীকাল শুক্রবার শান্তি এবং আগামী ১৩ অক্টোবর অর্থনীতিতে চলতি বছরের নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন