শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২৫, ০২:৫৬ এএম

কোন আপেলে পুষ্টিগুণ বেশি, লাল নাকি সবুজ

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২৫, ০২:৫৬ এএম

কোন আপেলে পুষ্টিগুণ  বেশি, লাল নাকি সবুজ

প্রচলিত একটি প্রবাদ আমরা প্রায়ই শুনিÑ  প্রতিদিন একটি করে আপেল খান ডাক্তারকে দূরে রাখুন। আপেল খুবই জনপ্রিয় একটি ফল। রোগীর পথ্যে ফলের মধ্যে আপেলের নামই প্রথমে আসে। আপেলের বিভিন্ন ধরনের মধ্যে লাল আপেল ও সবুজ আপেল বেশি দেখা যায়। কিন্তু জানেন কি কোন আপেলের পুষ্টিগুণ বেশি? চলুন জেনে নিই সবুজ নাকি লাল আপেলের বেশি পুষ্টি। লিখেছেন পুষ্টিবিদ লিনা আকতার।

লাল আপেল এবং সবুজ আপেল উভয়েই পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যের অংশ। তবে স্বাদ, ক্যালরি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের পরিমাণের দিক থেকে সামান্য পার্থক্য রয়েছে। লাল আপেল মিষ্টি স্বাদ, একটু বেশি ক্যালরি এবং কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। এটি অ্যান্থোসায়ানিন নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ধারণ করে। অপরদিকে সবুজ আপেলে ম্যালিক অ্যাসিড থাকার কারণে এর স্বাদ টক করে তোলে, যা কম মিষ্টি অনুভূত হয়। দুটি আপেলের মিষ্টির শর্করার আনুপাতিক হার বেশি থাকলেও এর রয়েছে স্বাদে পার্থক্য, যা বেশি মিষ্টি। লাল আপেল সবুজ আপেলের তুলনায় বেশ জনপ্রিয়। এর কারণ, লাল আপেল স্বাদে মিষ্টি আর প্রায় সব জায়গায় পাওয়া যায়। অন্যদিকে সবুজ আপেল যেমন মিষ্টি নয়, তেমনি এটি সহজলভ্য নয়।

আপেলের রঙগুলো তাদের স্তরের ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন রঙ ধারণ করে। লাল আপেল এবং সবুজ আপেলের বিভিন্ন জাত রয়েছে এবং এর রঙগুলো স্বাস্থ্যের ওপর বিভিন্ন উপকার করে থাকে। যেমনÑ ১. অ্যান্থোসায়ানিন লাল, নীল, বেগুনি ধারণ করে; যা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, কিছু ক্যান্সার, বিপাকীয় রোগ ও সংক্রমণ প্রতিরোধ করে থাকে।  ২. ক্যারোটিনয়েড হলুদ, কমলা অথবা লাল রঙ ধারণ করে। এটি দীর্ঘস্থায়ী ক্রনিক রোগ যেমনÑ কার্ডিওভাস্কুলার রোগ, সেরিভাস্কুলার রোগ, চোখের রোগ, অস্টিওপরোসিস এবং ক্যান্সার থেকে শরীরকে রক্ষা করে থাকে। ৩. ক্লোরোফিল সবুজ রঞ্জক পদার্থ ধারণ করে। এটি ক্যান্সার, চর্মরোগ, হৃদরোগ, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা, প্রজনন এবং মূত্রনালির রোগ, শাসযন্ত্রের ব্যাধি, পেশিবহুল রোগ এবং লিভারের রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

রঙ এবং স্বাদ যা-ই হোক না কেন, উভয় আপেলের অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকে শুরু করে অন্ত্র, দীর্ঘস্থায়ী ক্রনিক রোগের স্বাস্থ্য উন্নত করে। একটি সুষম খাদ্যের মূল উদ্দেশ্য হলো খাবারে বৈচিত্র্য থাকা। তাই আপনার রুচি এবং স্বাস্থ্যের লক্ষ্যের ওপর ভিত্তি করে আপেল গ্রহণ করবেন। তাই উভয় আপেলই স্বাস্থ্যকর, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থে ভরপুর।

এবার দেখা যাক এদের পুষ্টিগুণের পার্থক্য কী কী?

১. লাল আপেলে কার্বোহাইড্রেট বেশি, ফাইবার বা আঁশ কম। অন্যদিকে সবুজ আপেলে কার্বোহাইড্রেট কম, ফাইবার বেশি। তবে এ পার্থক্যের পরিমাণ খুব বেশি না, সামান্য। তাই যারা ওজন বাড়বে বলে লাল আপেল খাওয়া যাবে নাÑ এ রকম ভাবার কোনো কারণ নেই।

২. একটি মাঝারি সবুজ আপেলে প্রায় ৩.০ গ্রাম ফাইবার থাকে, যেখানে লাল আপেলে ২.৫ গ্রাম ফাইবার থাকে। তবে এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলোÑ সবুজ আপেলে বেশি পরিমাণে পেকটিন থাকে, যা এক ধরনের সান্দ্র ফাইবার। এটি এলডিএল কোলেস্টেরল কমানোর জন্য ভালো। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ১ গ্রাম পেকটিন এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা প্রায় ২ মিলিগ্রাম ডেসিলিটার কমাতে পারে। এ ছাড়া ফাইবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা অনুভূতি বজায় রাখতে পারে, যা ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে। এটি ওজন ও রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।

৩. লাল আপেলের তুলনায় সবুজ আপেলে প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ বেশি ভিটামিন-এ আছে। ভিটামিন-এ চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, ব্রণের ঝুঁকি কমায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ভিটামিন-এ ছাড়াও লাল আপেল এবং সবুজ আপেলের পুষ্টিগুণ প্রায় কাছাকাছি।

৪. অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের দিক থেকে বলতে গেলে পেকটিন, কোয়ারসেটিন ও ফ্ল্যাভোনয়েড এসব অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সবুজ আপেলে থাকলেও লাল আপেলে পরিমাণটা বেশি। লাল আপেলে সায়াডিনিন থাকার কারণে মোট অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের পরিমাণটা বেশি থাকে। এই সায়াডিনিন শুধু লাল আপেলেই থাকে, যা লালচে বেগুনি রঙ দেয়। তাই লাল আপেলে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে পরিমাণ বেশি। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার শরীরের ফ্রির‌্যাডিকেল থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। এতে হৃৎপি-ের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যদি বেশি পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পেতে চান, তাহলে লাল আপেলকে বেছে নিন। ৪. চিনির পরিমাণের দিক থেকে বলতে গেলে একটি  লাল আপেলে ১৪.২ গ্রাম চিনি থাকে, যেখানে সবুজ আপেলে ১২.৭ গ্রাম চিনি, সামান্যই পার্থক্য। চিনির গঠনের দিক থেকে লাল আপেলে ৮৩ শতাংশ চিনি সুক্রোজ ও ফ্রুকটোজ, যেখানে সবুজ আপেলে ৭৫ শতাংশ থাকে। মজার ব্যাপার হলো সব চিনির জন্য একই মিষ্টি অনুভাব করি না। সুক্রোজ গ্লুকোজের চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি মিষ্টি, অন্যদিকে ফ্রুক্টোজ গ্লুকোজের চেয়ে দ্বিগুণ মিষ্টি স্বাদ। উভয় আপেলের গ্লাইসেমিক সূচক প্রায় ৩৫ থেকে ৪০। তাই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে বেশি চিন্তিত না হয়ে  উভয় আপেলই খেতে পারেন। তবে অবশ্যই পরিমাণের দিকে বিবেচনা করতে হবে। এছাড়া বেশি পাকা আপেলে চিনির পরিমাণ বেশি এবং পেকটিনের মাত্রা কম থাকে। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা হাতের কাছে সবুজ আপেল পেলে খাবেন, আর হাতের কাছে সহজলভ্য না হলে লাল আপেল পরিমাণমতো খাবেন।

টিপস : ১. আপেলের খোসাসহ খাওয়ার চেষ্টা করবেন। কারণ আপেলের খোসায় থাকে ফাইবার ও পলিফেনল, যা অ্যাকসিডেন্ট। এটি আমাদের শরীরে প্রদাহ ও অক্সিডেটিভস্ট্রেসসহ নানা উপকার করে থাকে। তাজা আপেলে থাকে পেকটিন এটি আমাদের কোলেস্টেরল শোষণে বাধা দেয়। ২. আপেলের রস না খেয়ে পুরো ফল খান। কারণ এতে চিনির পরিমাণ বেশি এবং ফাইবারের ঘাটতি থাকে। ৩. প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের ফল মিশিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করবে। ৪. সবুজ আপেলে একটু শক্ত মাংস থাকে, এটি সালাদে যোগ করে খেতে পারেন। ৫. যারা সবুজ আপেল খেতে চান তারা স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং প্রোটিনসমৃদ্ধ এক চামচ বাদামের মাখন মিশিয়ে খেতে পারেন। ৬. শিশুরা লাল আপেল খেতে পারে। কারণ লাল আপেল মিষ্টি স্বাদের, যা শিশুদের কাছে বেশ সুস্বাদু লাগবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!