কোপেনহেগেনের গ্র্যান্ড ক্রিশ্চিয়ানবর্গ প্যালেসে প্রতিরক্ষাবিষয়ক শীর্ষ সম্মেলন চলাকালে হাজার হাজার পুলিশ সতর্ক ছিল। এ সময় বেসামরিক ড্রোন নিষিদ্ধ ছিল এবং ন্যাটো মিত্রদের কাছ থেকে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল। ডেনিশ প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন গত বুধবার কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে অনুষ্ঠিত প্রতিরক্ষাবিষয়ক আলোচনায় মস্কোর রহস্যময় ড্রোন উড়ানের পর ইইউ নেতাদের আতিথেয়তা দেওয়ার সময় ইউরোপকে রাশিয়ার ‘হাইব্রিড যুদ্ধ’-এর প্রতি সতর্কতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। কোপেনহেগেন থেকে এএফপি এ খবর জানায়। ফ্রেডেরিকসেন ইইউর নেতাদের বলেছেন, ‘আমি আশা করি সবাই এখন বুঝতে পারবে, একটি হাইব্রিড যুদ্ধ চলছে’। ডেনমার্ক বর্তমানে ইইউর সভাপতির দায়িত্বে আছে। কিন্তু তা সত্বেও ডেনমার্ক সাম্প্রতিক দিনগুলোয় অজ্ঞাত ড্রোন বিমানবন্দর বন্ধ করে এবং সামরিক স্থাপনার কাছে উড়ে যাওয়ার কারণে বিচলিত হয়েছে। তবু পোল্যান্ড এবং এস্তোনিয়ায় মস্কোর হাই-প্রোফাইল বিমান আক্রমণের পরে ড্রোনের ঘটনাগুলো ইউরোপের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ত্রুটিগুলোর ওপর মনোযোগ আরও তীব্র করেছে। ফ্রেডেরিকসেন বলেছেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির পর থেকে আমরা সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের মুখোঢাল। রাশিয়ার হিমায়িত সম্পদের ওপর হাতিয়ে নেওয়া? কিন্তু যখন ইইউ সম্ভাব্য ভবিষ্যতের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে চাইছে, তখন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মস্কোর চলমান আক্রমণ মোকাবিলায় ইউক্রেনকে কীভাবে অর্থায়ন করা যায়। কিয়েভের জন্য ১৪০ বিলিয়ন ইউরোর নতুন ঋণ তহবিলের জন্য রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জব্দ করা সম্পদ ব্যবহার করার ব্রাসেলসের প্রস্তাব নেতারা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করেছেন।
ইইউর পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান কাজা ক্যালাস বলেছেন, ‘রাশিয়া এ মুহূর্তে ইউক্রেনে ব্যাপক ক্ষতি করছে এবং রাশিয়া ছাড়া অন্য কারো এর জন্য অর্থ দেওয়া ঠিক নয়’। ট্রাম্পের অধীনে ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন সমর্থন কমে যাওয়ায়, গত সপ্তাহে পরিকল্পনাটি একজন গুরুত্বপূর্ণ শক্তিধর ব্যক্তি জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জের সমর্থন পেয়েছে। কিন্তু কিছু দেশ সন্দেহ প্রকাশ করেছে, যদিও অন্যরা জোর দিয়ে বলেছে, কিয়েভকে বাজেটের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী লুক ফ্রিডেন বলেছেন, পরিকল্পনাটি ‘পুরো সিরিজের প্রশ্ন উত্থাপন করেছে এবং আমি প্রথমে সেগুলোর উত্তর পেতে চাই।’
তিনি বলেছেন, ‘সব প্রস্তাবকে স্বাগত, তবে আমাদের প্রথমে নিশ শীর্ষ সম্মেলনের সভাপতিত্বকারী ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রধান আন্তোনিও কস্তা বলেছেন, তিনি এমন একটি পরিকল্পনার সমর্থনে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন যার অর্থ দেশগুলো আলোচনার প্রতিটি নতুন পদক্ষেপে ভেটো দিতে পারবে না। কিন্তু অরবান এ প্রকল্পের ওপর ঠান্ডা পানি ঢেলে দিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে। কারণ, তাকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, ইউক্রেনের ব্লকে যোগ দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে কি না, তখন তিনি সরাসরি ‘না’ বলেছেন।’