মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রাহেলা আক্তার

প্রকাশিত: নভেম্বর ১১, ২০২৫, ০১:৫১ এএম

পিঁপড়া ও মুরগির বন্ধুত্ব

রাহেলা আক্তার

প্রকাশিত: নভেম্বর ১১, ২০২৫, ০১:৫১ এএম

পিঁপড়া ও মুরগির বন্ধুত্ব

ঘরের এক কোণে ছিল একদল পিঁপড়ার ছোট্ট রাজ্য। সারাদিন তারা সারি বেঁধে খাবারের খোঁজে বের হতো। ফেরার সময় কারো মুখে থাকত চালের দানা, কারো মুখে চিনি বা রুটির টুকরো। বড় পিঁপড়াগুলো দুপুরে একবার বাসায় এসে ছানাদের খাবার দিত, তারপর আবার বের হতো নতুন খাবারের সন্ধানে। এভাবেই তাদের দিন কাটছিল। তারা প্রতিদিন সামান্য করে খাবার জমিয়ে রাখত বর্ষার জন্য। কারণ বৃষ্টির দিনে বাইরে বের হওয়া বিপজ্জনক, সেসময় পানিতে ভেসে যাওয়ার ভয় থাকে।

একদিন সন্ধ্যায় খাবার নিয়ে ফিরে এসে মা পিঁপড়ারা দেখল, তাদের কয়েকটি ছানা নেই! প্রথমে তারা ভাবল ছানারা হয়তো বাইরে ঘুরতে গেছে। কিন্তু দিন পেরিয়ে গেলেও তারা আর ফিরল না। এভাবে প্রতিদিন একে একে ছানারা হারিয়ে যেতে লাগল। একদিন মা পিঁপড়ারা ঠিক করল, আজ আর তারা খাবারের খোঁজে বের হবে না; বরং বাসায় পাহারায় থাকবে। বাড়িতে তাদের সঙ্গেই থাকত এক মা মুরগি ও তার ছানারা। মা পিঁপড়ারা সেদিন দেখল, তাদের ছানারা বের হলেই মা মুরগিটা ঠোঁট দিয়ে টপাটপ ছানাগুলোকে খেয়ে ফেলছে! এই দৃশ্য দেখে মা পিঁপড়াদের মন ভেঙে গেল। সেই দিন থেকে

তারা ছানাদেরকে আর বাইরে যেতে দিল না। কিছুদিন পর একদিন সারাদিন অঝোরে বৃষ্টি নামল। বৃষ্টির কারণে মুরগি ও তার ছানারা খাবারের খোঁজে বের হতে পারল না। তাদের ঘরে খাবারও ফুরিয়ে গেছে। মা মুরগি নিজে ক্ষুধা সহ্য করলেও ছানারা টকটক করে কাঁদছে, ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাঁপছে সবাই। মুরগিদের এমন করুণ অবস্থা দেখে মা পিঁপড়ারা তাদের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করল,

- মুরগি বোন, তোমার ছানারা এমন করছে কেন?

মা মুরগি কাতর কণ্ঠে বলল,

- ওরা সারাদিন না খেয়ে আছে, বৃষ্টির কারণে বাইরে যেতে পারিনি, খাবার কিছুই জোটেনি আজ।

পিঁপড়াদের মন খারাপ হলো বন্যায় বর্ষায় বাইরে বের হওয়া যায় না, তাই খাবার জমিয়ে রেখেছিল তারা। মা পিঁপড়া বলল,

- বোন, মন খারাপ কোরো না। আমাদের কাছে কিছু খাবার সঞ্চয় করা আছে, তোমরা সবাই মিলে খেয়ে নাও।

মুরগি অবাক হয়ে বলল,

- তোমাদের খাবার আমাদেরকে দিয়ে দিলে তোমরা কি খাবে?

পিঁপড়াগুলো হেসে বলল,

- ভাগাভাগি করে খেলে আল্লাহ্ বরকত দেন। তোমার মনিব ফিরে এলে, তখন না হয় আমাদের জন্য কিছু দিও।

পিঁপড়াদের এমন কথা শুনে কৃতজ্ঞতায় মুরগির চোখে পানি এসে গেল। পিঁপড়ারা দল বেঁধে খাবার টেনে আনল, মুরগি ছানারা তা খেয়ে ক্ষুধা মেটালো। তারপর থেকে মুরগি ও পিঁপড়াদের মাঝে তৈরি হলো গভীর বন্ধুত্ব। মা মুরগি প্রতিজ্ঞা করল, আর কখনো কোনো পিঁপড়ার ক্ষতি করবে না।

এরপর থেকে প্রতিদিন বিকেলে তারা ঘরের কোণে বসে গল্প করত, একে অপরের খবর নিত। একদিন ভারি বৃষ্টিতে একটি মা পিঁপড়া ভেসে যাচ্ছিল। মুরগি সেটা দেখে সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ে গিয়ে তাকে নিজের পায়ে তুলে নিল। পিঁপড়া বেয়ে উঠে এলো নিরাপদে।

তাদের বন্ধুত্ব তখন থেকে আরও দৃঢ় হলো। এভাবেই তারা সবাইকে শেখাল ভালোবাসা মানে ভাগাভাগি।  সহানুভূতিই সত্যিকারের বন্ধুত্বের ভিত্তি।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!