পৃথিবীর বুকে ছড়িয়ে আছে এমন
সব জায়গা, যেগুলো ঘিরে শত বছরেও মানুষের কৌতূহল শেষ হয়নি। বিজ্ঞান যত এগিয়েছে, রহস্য যেন ততই ঘন হয়েছে। কোথাও প্রাচীন সভ্যতার চিহ্ন, কোথাও প্রাকৃতিক বিস্ময়, কোথাও অজানা শক্তির উপস্থিতি; এসব মিলিয়ে পৃথিবী হয়েছে এক রহস্যের গ্রহ।
চলো, দেখে নিই পৃথিবীর এমন কিছু স্থান, যেগুলোর রহস্য আজও উন্মোচিত হয়নি পুরোপুরি।
স্টোনহেঞ্জ, ইংল্যান্ড
ইংল্যান্ডের উইল্টশায়ারের প্রান্তরে দাঁড়িয়ে আছে পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন স্থাপনা স্টোনহেঞ্জ। খ্রিষ্টপূর্ব তিন হাজার সালের কাছাকাছি নির্মিত এই বিশাল পাথরের বৃত্ত এখনো বিজ্ঞানীদের হতবাক করে রেখেছে।
২৫ টনেরও বেশি ওজনের পাথরগুলো কীভাবে ২০০ মাইল দূর থেকে এনে এমন নিখুঁতভাবে সাজানো হলোÑ এ রহস্য আজও অমীমাংসিত। কেউ বলেন, এটি ছিল ধর্মীয় আচারস্থল; কেউ বলেন, সৌর ক্যালেন্ডার বা জ্যোতির্বিদ্যার পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। সূর্যোদয়ের দিক অনুযায়ী পাথরগুলোর বিন্যাস রহস্যকে আরও গভীর করেছে। হাজার বছর পরও স্টোনহেঞ্জ আজও নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে আছেÑ অতীতের এক অমীমাংসিত প্রশ্ন হয়ে।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গল, আটলান্টিক মহাসাগর
আটলান্টিক মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিমে রয়েছে ভয়ংকর নামের এক অঞ্চলÑ বারমুডা ট্রায়াঙ্গল বা ‘ডেভিলস ট্রায়াঙ্গল’। তিনটি বিন্দুÑ বারমুডা দ্বীপ, মায়ামি ও পুয়ের্তো রিকোর সান হুয়ানমিলে গঠিত এই ত্রিভুজ অঞ্চলে শত শত জাহাজ ও উড়োজাহাজ রহস্যজনকভাবে হারিয়ে গেছে। ১৯৪৫ সালের ৫ ডিসেম্বর মার্কিন নৌবাহিনীর পাঁচটি উড়োজাহাজ এবং একটি উদ্ধারকারী বিমান এখানে নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই রহস্য ঘনীভূত হয়। পরিষ্কার আকাশ ও শান্ত সমুদ্রে এভাবে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া ব্যাখ্যাতীত। কেউ বলেন, এখানে চৌম্বক শক্তি বা সময়বিকৃতি ঘটে। কেউ বলেন, সমুদ্রের নিচে লুকিয়ে আছে অজানা শক্তি। শত গবেষণার পরও বারমুডা ট্রায়াঙ্গল আজও পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর অমীমাংসিত রহস্যগুলোর একটি।
ইস্টার দ্বীপ, চিলি
দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝখানে ছোট্ট এক দ্বীপ ইস্টার আইল্যান্ড বা রাপা নুই। এখানেই রয়েছে প্রায় এক হাজার বিশাল মানবমূর্তি, যাদের বলা হয় মোয়াই। আগ্নেয় শিলা খোদাই করে রাপা নুই-এর জনগণ এই মূর্তিগুলো তৈরি করেছিল তাদের পূর্বপুরুষদের প্রতীক হিসেবে।
অবিশ্বাস্য ব্যাপার হলোÑ মূর্তিগুলোর আকার এত বড় যে, কীভাবে সেগুলো দ্বীপের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে স্থানান্তরিত হলো, তা আজও অজানা। সম্প্রতি সমুদ্রতলে পাওয়া গেছে ৫০টিরও বেশি অজানা সামুদ্রিক প্রাণীÑ যা দ্বীপটির রহস্যকে আরও গভীর করেছে।
ইস্টার দ্বীপ যেন মানবসভ্যতার হারিয়ে যাওয়া এক অধ্যায়, যার প্রতিটি মূর্তি ইতিহাসের গোপন কণ্ঠস্বরের মতো দাঁড়িয়ে আছে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন