বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক খাত পরিবেশবান্ধব উৎপাদনের দিক থেকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জনের পথে পা রেখেছে। সম্প্রতি আরও পাঁচটি পোশাক কারখানা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের ‘লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন’ (লিড) সনদ পেয়েছে। ফলে বাংলাদেশের মোট লিড সনদপ্রাপ্ত কারখানার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫৮টি, যার মধ্যে রয়েছে ১০৯টি প্লাটিনাম এবং ১৩৩টি গোল্ড সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত কারখানা। এ অর্জনের ফলে বাংলাদেশ বিশ্বে পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানার সংখ্যায় শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে।
নতুন সনদপ্রাপ্ত পাঁচটি কারখানার মধ্যে একটি হলো ময়মনসিংহের ভালুকায় অবস্থিত রাইদা কালেকশন সবচেয়ে বেশি ৯০ পয়েন্ট পেয়ে টেকসই ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার জন্য প্লাটিনাম সনদ অর্জন করেছে। আশুলিয়ায় অবস্থিত সাউথ অ্যান্ড সুয়েটার কোং লিমিটেড নতুন নির্মিত ভবনের পরিবেশবান্ধব নকশা ও নির্মাণের মাধ্যমে ৮৫ পয়েন্ট পেয়ে প্লাটিনাম সার্টিফিকেশন অর্জন করেছে।
চট্টগ্রামের কেডিএস ফ্যাশন লিমিটেড টেকসই ব্যবস্থাপনা ও শক্তি দক্ষতার জন্য ৮৪ পয়েন্ট পেয়ে প্লাটিনাম সনদ পেয়েছে। সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে অবস্থিত পুরবাণী ফ্যাশন লিমিটেড পুরাতন ভবনের দক্ষ ব্যবস্থাপনার জন্য ৮৩ পয়েন্ট পেয়ে প্লাটিনাম সার্টিফিকেশন পেয়েছে। গাজীপুরে অবস্থিত টেক্সইউরোপ বিডি লিমিটেড পরিবেশবান্ধব নতুন অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে ৭০ পয়েন্ট পেয়ে গোল্ড সার্টিফিকেশন পেয়েছে।
এই অর্জন প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক এবং বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘বর্তমানে যেখানে বৈশ্বিক বাজার অনিশ্চয়তা, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশোধমূলক শুল্ক এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা আমাদের পোশাক খাতের জন্য বড় বাধা হিসেবে দেখা দিয়েছে, সেখানে উদ্যোক্তাদের টেকসই অবকাঠামোতে ধারাবাহিক বিনিয়োগ নিঃসন্দেহে একটি দূরদর্শী ও সাহসী সিদ্ধান্ত। প্রতিটি লিড-সনদপ্রাপ্ত কারখানা কেবল একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নয়, বরং এটি বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যতের প্রতি অঙ্গীকারের প্রতিচ্ছবি। এমন নেতৃত্ব ও অগ্রযাত্রা আমাদের শুধু আশাবাদীই করে না, বরং বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশকে টেকসই শিল্পের রোল মডেল হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন