বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বরিশাল ব্যুরো

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৫, ০১:০৮ এএম

শেবাচিমে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধের দাবিতে অনশনে অনড় ছাত্র-জনতা

বরিশাল ব্যুরো

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৫, ০১:০৮ এএম

শেবাচিমে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধের দাবিতে অনশনে অনড় ছাত্র-জনতা

  • অনশন ভাঙাতে পারলেন না স্বাস্থ্যের মহাপরিচালক 
  • স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে বরিশালে আসার দাবি
  • সড়ক অবরোধে সীমাহীন দুর্ভোগ

বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করাসহ স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের দাবিতে অনড় রয়েছেন ছাত্র-জনতা। দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বরিশালে সপ্তম দিনের মতো গতকাল বুধবারও মহাসড়ক অবরোধসহ শিক্ষার্থীদের অনশন চলেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু জাফর এদিন বরিশালে এসে আন্দোলনকারী, স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক এবং সামাজিক সংগঠনের নেতাদের সাথে বৈঠক করলেও শেবাচিমের সামনে অনশনরতদের মান ভাঙাতে পারেননি।

পাশাপাশি সড়ক থেকে আন্দোলনকারীদের সরানো যায়নি। অনশন ভাঙাতে ব্যর্থ হলেও মহাপরিচালক শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা উন্নত করা নিয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়ে আন্দোলন নিয়ে আগামীতে কঠোর হওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। 

জানা গেছে, গতকাল বেলা ১টার দিকে শেবাচিম হাসপাতালে আয়োজিত বৈঠকে অংশ নেন স্বাস্থের মহাপরিচালক আবু জাফর। তিনি সেখানে আন্দোলনকারীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন এবং সবার মতামত গ্রহণ করে আন্দোলনকারীদের ঘরে ফেরার আহ্বান জানান।  

বৈঠকে মহাপরিচালক বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাত সংস্কারে শিক্ষার্থীরা যে তিন দফা দাবি তুলেছে, তার সবগুলো সংস্কার কমিশনের সুপারিশে রয়েছে। এগুলো রাতারাতি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় স্বাস্থ্য খাত সংস্কার হবে। আন্দোলনকারীরা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পড়েনি। গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে জানা গেছে, এ আন্দোলনে তৃতীয় কোনো শক্তির ইঙ্গিত আছে। এমনকি উদ্দেশ্যমূলকভাবে স্কুলের শিশু শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নামানো হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আন্দোলন থেকে না সরলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালন করবে এবং কঠোর হবে।’ 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক যখন বৈঠকে ব্যস্ত ছিলেন, তখনো বরিশালের রূপাতলী এবং নথুল্লাবাদ এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন ছাত্র-জনতা। পরে বৈঠক শেষে মহাপরিচালক শেবাচিমের সামনে গিয়ে অনশনরত শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে মান ভাঙানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু এতে রাজি হননি অনশনরতরা, বরং তারা সাফ জানিয়ে দেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে বরিশালে আসতে হবে। এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে বরিশাল জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসেনও অনশনরতদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে মান ভাঙানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। 

এদিকে গতকাল সপ্তম দিনের মতো বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রীসাধারণকে। এদিন নথুল্লাবাদের পাশাপাশি আন্দোলনরতরা রূপাতলী এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। একই সড়কের দুটি স্থানে অবরোধ করায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। 

রাজধানী ঢাকা থেকে আসা একাধিক বাসযাত্রী অভিযোগ করেছেন, কিছুটা দূরত্বে পর পর দুই স্থানে সড়ক অবরোধ হওয়ায় মহাভোগান্তিতে পড়তে হয়। প্রথমে নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডের আগে নামতে হয়, সেখান থেকে অটোরিকশাযোগে রূপাতলী যাওয়ার পথে আবারও অবরোধের কবলে পড়তে হয়েছে। এ সীমাহীন দুর্ভোগ, যা ভাষা দিয়ে প্রকাশ করা যায় না। অনুরূপ ভোগান্তির শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছেন বরগুনাগামী চল্লিশোর্ধ্ব হাসান আলী। তিনি ক্ষোভের সাথে বলছিলেন, অভাগা জাতি, আমাদের মুক্তি নেই। 

আন্দোলন যৌক্তিক হলেও এতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিলুপ্ত জেলা কমিটির আহ্বায়ক সাব্বির হোসেন সোহাগ এবং সাহাবউদ্দিন মিয়াসহ কয়েকজন। কিন্তু তারা বলেছেন, স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের আশ্বাস নয়, বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনরতরা ঘরে ফিরবেন না। 

জানা গেছে, আন্দোলনকারীদের নেতারা স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের সাথে বৈঠকেও একই ধরনের বক্তব্য দেন, যা নিয়ে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে সভাকক্ষ কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দুই ঘণ্টা সভা শেষে বিকেল ৩টায় মহাপরিচালক তার অবস্থানের কথা জানিয়ে শেষ অনুরোধ জানাতে অনশনকারীদের কাছে যান। তখন অনশনকারীরা মহাপরিচালকের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন। পরে মহাপরিচালক রাজধানীর উদ্দেশে বরিশাল ত্যাগ করেন। এ সময় বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার (চলতি দায়িত্ব) আহসান হাবিবসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য খাত সংস্কারে চলমান আন্দোলন নিয়ে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সভাপতি ডা. কবিরুজ্জামানসহ একাধিক চিকিৎসক প্রশ্ন তুলেছেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। পাশাপাশি শিক্ষানবিস (ইন্টার্ন) চিকিৎসকরা তাদের নিরাপত্তায় ৬ দফা দাবি দিয়েছেন। তা বাস্তবায়ন না হলে ২৪ ঘণ্টা পর তারাও কাজ বন্ধ করে দেবেন বলে হুমকি দেন। তবে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা প্রশাসনিকভাবে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার আগে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করার ওপর গুরুত্ব দেন। 

এর আগে স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের দাবিতে গত ২৭ জুলাই থেকে বরিশালে আন্দোলন শুরু হয়। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংগঠক মহিউদ্দিন রনি ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে এই দাবি বাস্তবায়নে সবাইকে সাথে নিয়ে মাঠে নামেন।’


 

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!