বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৫, ০২:১৭ এএম

খাদ্যপণ্যের সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৫, ০২:১৭ এএম

খাদ্যপণ্যের সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের বাজার ব্যবস্থায় এক গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। এর পেছনে অন্যতম কারণ হলো- কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর গঠিত ‘সিন্ডিকেট’, যারা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ভোক্তাদের ন্যায্যমূল্যে পণ্যপ্রাপ্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। দুঃখজনকভাবে, এই সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ এখনো যথাযথভাবে কার্যকর হয়নি।
বাজারে গম, চিনি, চাল, ডাল, তেল কিংবা পেঁয়াজের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যখন বেড়ে যায়, তখন দেখা যায় এর পেছনে উৎপাদন ঘাটতির চেয়ে বেশি কাজ করে অকার্যকর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং বাজারে অল্প কিছু ব্যবসায়ীর একচেটিয়া কর্তৃত্ব। তারাই মূলত সিন্ডিকেট গঠন করে মজুতদারির মাধ্যমে দাম বাড়ায়, যা সরাসরি সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

বুধবার রূপালী বাংলাদেশের ‘পুরোনো সিন্ডিকেটের থাবায় অস্থিতিশীল গমের বাজার’ শিরোনামের বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ববাজারে গমের দাম নি¤œমুখী। দেশেও পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। সরকারি হিসাবে এই মুহূর্তে দেশে ৪ লাখ ২৮ হাজার ৩৩৫ টন গম মজুত আছে। অথচ কোনো কারণ ছাড়াই পাইকারি বাজারে বাড়ছে খাদ্যপণ্যটির দাম। মাত্র ১৫ দিনে মণপ্রতি দাম বেড়েছে ২০০ টাকারও বেশি। এ কারণে বিক্রি হওয়া গমের সরবরাহও কমিয়ে দিয়েছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে আরও বেশি অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে গমের বাজার।

একই সঙ্গে গমের বাজারে পুরোনো সিন্ডিকেট আবারও সচল হয়েছে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। গমের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রভাব পড়ছে আটা-ময়দার খুচরা বাজারেও। এতে সমস্যায় পড়ছে নি¤œ আয়ের মানুষ। কারণ মূল্যবৃদ্ধির এই ভার তাদের বইতে হবে। 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসায়ীদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ দিচ্ছে না। গমের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসও বিক্রি করে টাকা উঠিয়ে নিলেও প্রয়োজনের সময় গম সরবরাহ না দেওয়ায় বড় ধরনের লোকসানের মধ্যে পড়েছেন শত শত ব্যবসায়ী। এ কারণে পাইকারি বাজারে গমের দাম প্রতিদিনই বাড়ছে। ফলে আটা-ময়দার বাজারও অস্থিতিশীল হয়ে ওঠার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।’ 

একটি সুষ্ঠু বাজার অর্থনীতিতে প্রতিযোগিতা থাকা আবশ্যক। সেখানে সিন্ডিকেটের অস্তিত্ব একটি বড় বাধা। তারা শুধু ভোক্তাদের ঠকায় না, বরং পুরো অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় বিরূপ প্রভাব ফেলে। কৃষকরা যেমন ন্যায্যমূল্য পান না, তেমনি ভোক্তারাও গুনতে বাধ্য হন বাড়তি দাম।

সরকারের দায়িত্ব এই সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা। প্রয়োজন হলে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করে বাজার মনিটরিং জোরদার করতে হবে। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। ন্যায্যমূল্যে পণ্য সরবরাহে সরকারের ভর্তুকিসহ নীতিমালারও হালনাগাদ প্রয়োজন।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সংস্থাগুলোকে একযোগে কাজ করতে হবে। কারণ, খাদ্য নিয়ে কোনো ধরনের কারসাজি শুধু অর্থনৈতিক অপরাধ নয়, এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।

আমরা আশা করি, এ বিষয়ে সরকার দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এবং এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে দীর্ঘমেয়াদি কৌশল নির্ধারণ করবে। ন্যায্য বাজার ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সিন্ডিকেট ভাঙা এখন সময়ের দাবি।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!