- ডাকসু নির্বাচনে দুই দিনে মনোনয়ন কিনলেন ১৩ প্রার্থী
- জাকসু-রাকসুর মনোনয়ন বিক্রি আগামী সপ্তাহে
- প্যানেল গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছে বিভিন্ন সংগঠন
- জাকসুতে হলভিত্তিক ভোটকেন্দ্র নিয়ে উদ্বেগ
- ডাকসু ও রাকসু নির্বাচনে সংঘাতের আশঙ্কা গোয়েন্দা সংস্থার
- নির্বাচন পেছাতে চায় কয়েকটি ছাত্রসংগঠন
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আলোচনায় আসে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংসদ নির্বাচন। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ-ডাকসু, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ-জাকসু ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ-রাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। এরই মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের মনোনয়ন কিনেছেন ২০ প্রার্থী। যদিও ছাত্রসংসদ ভোটকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। ঢাবির বিভিন্ন হলে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ছাড়া ডাকসু ও রাকসু নির্বাচনে সংঘাতের আশঙ্কার কথা উঠে এসেছে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে। জাকসুতে হলভিত্তিক ভোটকেন্দ্র হওয়ায় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অংশীজনরা। এদিকে কয়েকটি ছাত্রসংগঠন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ছাত্রসংসদ নির্বাচন চাচ্ছে না।
তারা নানাভাবে ভোট পেছানোর কৌশল আঁকছে বলে জানা গেছে। সব মিলিয়ে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলেও এই তিন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংসদের নির্বাচন আদৌ হবে কি না তা নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচন নিশ্চিত করতে হলে প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে। সব ছাত্রসংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিতের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি নজরদারির মধ্যে আনতে জবে।
সূত্র মতে, ডাকসুর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর। গত মঙ্গলবার থেকে নির্বাচনের মনোনয়ন বিক্রি শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত দুই দিনে মনোনয়ন কিনেছেন ২০ প্রার্থী। জাকসুর নির্বাচন হবে ১১ সেপ্টেম্বর, মনোনয়ন বিক্রি শুরু হবে ১৮ আগস্ট। আর তিন যুগ পর রাকসুর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর। মনোনয়ন বিক্রি শুরু হবে ১৭ আগস্ট।
এদিকে তফসিল ঘোষণার পর এসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ, হল সংসদ এবং সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি মনোনয়নে প্যানেল গঠনের জন্য তোড়জোড় শুরু করেছে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলো। নিজেদের অবস্থান জানান দিয়ে সভা-সমাবেশ ও মহড়া দিচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়ন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্রমৈত্রীসহ বামপন্থি ছাত্রসংগঠন, অন্যান্য ছাত্রসংগঠন, সাধারণ শিক্ষার্থী এবং সাংবাদিকদের আলাদা প্যানেল দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে। নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক ছাত্রসংগঠনগুলো নির্বাচনি ইশতেহার তৈরিতেও ব্যস্ত সময় পার করছে।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র বলছে, ছাত্রদলসহ সমমনা কিছু দল জাতীয় নির্বাচনের আগে ছাত্রসংসদ নির্বাচন চায় না। তারা নানা কৌশলে নির্বাচন পেছাতে চাচ্ছে। নির্বাচন ঘনিয়ে এলেও ছাত্রদলের নেতাদের কোনো তোড়জোড় দেখা যাচ্ছে না। যদিও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির সম্প্রতি ডাকসুর নির্বাচনকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন বলে জানিয়েছেন। তবে তিনি বলেন, গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত শিক্ষক-কর্মচারীদের বিচার না হওয়ার আগে এমন নির্বাচন আয়োজন কতটুকু যৌক্তিক, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এরপরও আমরা তফসিল ঘোষণাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছি।
অন্যদিকে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এ ছাড়া বিগত কয়েক মাসে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন, টিএসসি ও দোয়েল চত্বর এলাকায় একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের মাধ্যমে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করছে একটি চক্র। এ ছাড়া গত শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি আবাসিক হলে নতুন কমিটি ঘোষণা করে ছাত্রদল। ওই দিন মধ্যরাতেই হলে রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থী বাইরে বেরিয়ে আসে। রাত ১টায় তারা রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে, পরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। পরবর্তী সময়ে রাত ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান ও প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। শিক্ষার্থীরা হলগুলোয় সম্পূর্ণভাবে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের জোরালো দাবি জানায়। পরে চাপের মুখে রাত ৩টার দিকে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ হলগুলোয় ‘প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি’ নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেন।
অন্যদিকে গত শুক্রবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ১৭টি হলে ও একটি অনুষদে নতুন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কমিটি গঠন করা হয়। পরের দিন শনিবার রাত ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তাজউদ্দীন আহমদ হল থেকে একটি মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন অভিযোগে গত রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হল শাখা ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।
এদিকে হলগুলোয় ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ রাখাকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে ছাত্রদল। ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে একটি বিশেষ গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে ছাত্রদলের জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ গত শনিবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে ছাত্রশিবির হলভিত্তিক কোনো রাজনীতি করে না। তাদের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকা- টিএসসি, মধুর ক্যান্টিনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য এলাকায় পরিচালিত হয়। সেবামূলক যেসব কার্যক্রম রয়েছে, সেগুলো পরিচালনা করতে আবাসিক হলে কার্যক্রম চালান। দলীয় বা রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচি তারা হল এলাকায় করেননি।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হলগুলোয় ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ রাখার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিশ্লেষকেরা। ডাকসু নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই মনে করছেন বলে মন্তব্য করেছেন ডাকসুর আচরণবিধি প্রণয়ন ও সংশোধনবিষয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস। তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচন সামনে রেখেই এখন নানা ইস্যু উঠে আসছে এবং হলে ছাত্ররাজনীতির ইস্যু সামনে এনে কর্তৃপক্ষ ‘কোনো কোনো সংগঠনকে’ বিশেষ সুবিধা দিতে চাইছে। তিনি বলেন, ডাকসুতে দল হিসেবে নির্বাচন না হলেও ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর বিভিন্ন প্যানেল সমর্থন দেওয়ার রেওয়াজ আছে। ফলে হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হলে প্রকাশ্যে কার্যক্রম চালায় না এমন কোনো কোনো সংগঠনের জন্য সুবিধা হতে পারে। আমরা উপাচার্যকে বলেছি, নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। কিন্তু তাদের কারো প্রতি পক্ষপাতমূলক মনে হচ্ছে। আবার ডাকসুর পরেই জাতীয় নির্বাচন। এ নির্বাচনের ফল জাতীয় রাজনীতি ও নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে।
ছাত্র রাজনীতির ইস্যুতে ডাকসু নির্বাচন বানচালের কোনো হুমকি নেই বলে জানিয়েছেন চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. জসীম উদ্দিন। তিনি বলেন, আমরা কোনো পক্ষ থেকেই কোনো ধরনের হুমকি পাইনি। নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, আমরা সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি এবং নিরপেক্ষতার জায়গায় সর্বোচ্চ কঠোর থাকব। আমাদের ব্যক্তিগত কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে আমরা কাজ চালিয়ে যাব। ডাকসু নির্বাচন না হওয়ার মতো কোনো শঙ্কা দেখছি না। আমরা নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
এদিকে জাকসুর নির্বাচনে হলভিত্তিক ভোটকেন্দ্র হওয়ায় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অংশীজনরা। তাদের দাবি, ভোটকেন্দ্র হলে হলে নির্ধারণ করলে পেশিশক্তির প্রভাব ও বিশৃঙ্খলা বাড়তে পারে। তাই বিকল্প হিসেবে অনুষদ বা একাডেমিক ভবনে ভোট নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তারা। প্রচলিত কাঠামো অনুযায়ী, জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোট হয়ে থাকে আবাসিক হলভিত্তিক কেন্দ্রে। তবে এখনো মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে উচ্ছেদ না হওয়া এবং সম্প্রতি রাজনৈতিক কর্মকা- নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে ঘিরে তৈরি হওয়া উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে ভোটের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া জাকসুতে এখনো রাজনৈতিক ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহাবস্থান তৈরি হয়নি বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতারা। জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘গঠনতন্ত্রের বাইরে কিছু করার সুযোগ নেই। গঠনতন্ত্রে ভোটকেন্দ্র কোথায় হবে তা উল্লেখ আছে।’
এদিকে রাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে গত ২৮ জুলাই। তফসিল ঘোষণার প্রায় ১৫ দিন পেরোলেও ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মধ্যে অংশগ্রহণ সন্তোষজনক নয় বলছেন অনেকে। তাদের যুক্তি, আগামী ১৭ আগস্ট মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হবে। নির্বাচন কেন্দ্র করে কেদ্রীয় সংসদে প্রার্থিতার ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব। তবে চূড়ান্ত প্যানেলের ঘোষণা এখনো তিনি দেননি। এ ছাড়া গুঞ্জন রয়েছেÑ রাকসুতে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ পদে নির্বাচন করবেন আরেক সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার। এ দিকে নির্বাচন ঘিরে প্রার্থিতা বা প্যানেল ঘোষণা করার সময় এখনো হয়নি বলছে শাখা ছাত্রশিবিরের নেতারা। অন্যদিকে শাখা ছাত্রদলের নেতারা বলছেন, ‘স্বৈরাচারের দোসর’ শিক্ষকদের বিচার হওয়ার আগে নির্বাচন হতে পারবে না। এ ছাড়া নির্বাচনি মাঠ গোছাতে হলগুলোয় কমিটি গঠন করা প্রয়োজন তাদের। এতে নির্বাচনের সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।
এ ছাড়া রাকসু নির্বাচনে আরও কয়েকটি প্যানেল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বলে আলোচনা হচ্ছে। তাদের মধ্যে অন্যতম রাবি প্রেসক্লাবের সভাপতি মনির হোসেন মাহিনের নেতৃত্বে ‘সাংবাদিক- সাধারণ শিক্ষার্থীদের’ প্যানেল, রাবি রেনেসাঁর একটি প্যানেল এবং বামপন্থি ছাত্রসংগঠন ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর একটি প্যানেল।
নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণের মাত্র কয়েক দিন বাকি থাকলেও নির্বাচনি মাঠে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ আশানুরূপ নয় বলছেন অনেকে। তবে ফিল্ড তৈরি করতে এবং প্রার্থিতা চূড়ান্ত করার আগে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আবাসিক হল, একাডেমিক ভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের আলাপ-আলোচনা দেখা গেছে।
রাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের বিজয় নিশ্চিত করতে একটি পূর্ণাঙ্গ ‘বি টিম’ মাঠে সক্রিয় থাকবেÑ এমন আলোচনা ক্যাম্পাসে রয়েছে। শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘ছাত্রশিবিরের একটি নির্দিষ্ট ভোটব্যাংক ক্যাম্পাসে রয়েছে। ছাত্রদল এবং বামপন্থি দলগুলোর অবস্থান ক্যাম্পাসে আশানুরূপ নয়। ফলে সাধারণ শিক্ষার্থী পরিচয়ে একটি ভিন্ন প্যানেল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে ছাত্রশিবিরের নির্দিষ্ট ভোটে বিজয় নিশ্চিত হবে।’
রাকসু নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন বলেন, বিতর্ক এড়িয়ে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দলসহ সবার সহযোগিতা চেয়েছি। যেকোনো মূল্যে এই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে চাই।
ডাকসু ও রাকসু নির্বাচনে সংঘাতের শঙ্কা
এদিকে ডাকসু ও রাকসু নির্বাচনে সংঘাতের আশঙ্কা করছে রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা সংস্থা। সংঘাতে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের। এ সুযোগে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ সুযোগ নিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। যার প্রভাব পড়তে পারে জাতীয় নির্বাচনেও। গোয়েন্দা সংস্থার এই প্রতিবেদনের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে অবনতি না ঘটে সে জন্য পূর্বপ্রস্তুতি নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনগুলো।
এ বিষয়ে পুলিশের আইজি বাহারুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, সব নির্বাচনেই সংঘাতের শঙ্কা থাকে। ছাত্রসংসদ নির্বাচনেও সংঘাতের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বিষয়টি মাথায় নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে কিছু পরিকল্পনা আছে। পাশাপাশি ছাত্রসংসদ নির্বাচনের নির্বাচন কমিশন থেকে চাহিদা অনুযায়ী পুলিশ সহযোগিতা করবে। আশা করছি, ছাত্রসংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন