নির্বাচনের খবর দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ায় উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘সবাই নির্বাচনের অপেক্ষায় ছিলেন। যেহেতু নির্বাচনের খবর ছড়িয়ে পড়েছে, সেহেতু দেশের উদ্যোক্তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দেশের বাইরের উদ্যোক্তারাও প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর ফলে জাপান থেকে বড় প্রতিনিধিদল এসেছে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার উদ্দেশ্যে।’
রাজধানীর বনানীর শেরাটন হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে গতকাল বুধবার ‘ফরেন ইনভেস্টরস সামিট ২০২৫’ বা বিদেশি বিনিয়োগকারী সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। প্যানেল আলোচনায় মূল বক্তা হিসেবে ছিলেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ। আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার মো. সাইফুদ্দিন, সিএফএ, কনটেক্সচুয়াল ইনভেস্টমেন্ট এলএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকাও হিরোসে ও এশিয়া ফ্রন্টিয়ার ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডের ফান্ড ম্যানেজার রুচির দেশাই, সিএফএ। প্যানেল আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন (মডারেটর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম।
প্যানেল আলোচনায় সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘স্বাধীনতার পরে ১৯৭২-৭৩ সালে আমাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ঘটে। পর্যায়ক্রমে ৬ শতাংশ গ্রোথ হয়েছে। তবে জাপানিরা বাংলাদেশের জন্য সর্ববৃহৎ ডোনার।’
ব্যাংক খাত সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রিকোভারি টানেল দ্রুত কার্যকর, দ্রুত ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ করেছে। তবে পুঁজিবাজারে অনেক মিসম্যাস হয়েছে। এখানে অনেক মজাদার দৃশ্য যেমন আছে, তেমনি চোরের সৃষ্টি হয়েছে। সিরিয়াস ঘটনাও আছে। তবে পুঁজিবাজারে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এখানে সফট ফান্ড, গ্রিন ফান্ড ও করপোরেট ফান্ড দরকার।’
প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি বলেন, ‘টাকা তৈরি করে সহায়তা দিয়ে অর্থনীতিতে ভালো কিছু করা সম্ভব নয়। আগামীর বাংলাদেশ অর্থনৈতিক বিনিয়োগের মাধ্যমে এগিয়ে যাবে। টাকা ছাপানো ও ঋণ নেওয়ার পরিবর্তে অর্থনীতিকে বিনিয়োগের পথে এগিয়ে নিতে হবে। বিনিয়োগই একমাত্র সমাধান। বিনিয়োগ ছাড়া অর্থনীতি টেকসই করা সম্ভব নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ এবং মূলধন বাজারকে উচ্চপর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য মূলধন বাজারের বিকল্প নেই। পুঁজিবাজারে বিমানের মতো রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে উন্মুক্ত করার পাশাপাশি মিউনিসিপ্যাল বন্ড কার্যকর করতে হবে। পৌরসভাগুলো লাভজনক উদ্যোগে বিনিয়োগ করলে দেশ লাভবান হবে। সামাজিক খাত, অবকাঠামো বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক কাঠামোর পরিবর্তন ছাড়া দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো পরিচালনা সম্ভব নয়।’
‘উদ্যোক্তাদের পণ্য ব্র্যান্ডিং, প্রযুক্তিগত সহায়তা ও অর্থনৈতিক সমর্থন দিতে হবে। এতে সরাসরি বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে। ঢাকা বা চট্টগ্রামে এসে বিক্রি করতে হবে না। ফলে বড় শহরের ওপর চাপও কমে যাবে। এভাবেই সৃজনশীল অর্থনীতি গড়ে তুলতে পারলে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও গতিশীল করা সম্ভব।’ বলেন আমীর খসরু।
প্রাইভেট সেক্টর সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি টার্বো চার্জার। দক্ষিণ এশিয়ার বেসরকারি খাতে প্রাইভেট সেক্টর ভালো করেছে। এই সেক্টরে পোশাক খাতসহ অনেক খাত ভালো করেছে, যে কারণে গ্রোথ ৬ শতাংশ কিন্তু স্বচ্ছতা কম। আমরা আগামী পুঁজিবাজারের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন