ফরেনসিক অডিটের অকাট্য তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে যুক্তরাজ্যের কোম্পানিজ হাউসে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন ৩৫ কোটি ডলার ফেরত চেয়েছে ইউসিবি। এই অর্থ ইউসিবির ফরেনসিক অডিটের তথ্য অনুযায়ী ইউসিবি থেকে পাচার করা। বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ইউসিবি যুক্তরাজ্যের কোম্পানিজ হাউসে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন প্রায় ২৫০ মিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ৩৫ কোটি ডলার) ফেরতের দাবি জানিয়েছে তারা। গত সোমবার এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফে। প্রতিবেদন অনুসারে, যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন তিন শতাধিক প্রপার্টি, যার মূল্য প্রায় ১৭ কোটি পাউন্ড, অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ দিয়ে যা কেনা হয়েছে।
বর্তমানে যুক্তরাজ্যের গ্র্যান্ট থর্নটন প্রশাসকরা এসব সম্পদের একটি অংশ বিক্রি করে ঋণদাতাদের অর্থ পরিশোধের প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন। ঋণদাতাদের মধ্যে রয়েছে সিঙ্গাপুরের ডিবিএস ব্যাংক, ব্রিটিশ আরব কমার্শিয়াল ব্যাংক এবং বাংলাদেশের ইউসিবি।
উল্লেখ্য, কয়েক মাস ধরে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে ইউসিবির সাবেক পরিচালনা পর্ষদের ব্যাপক দুর্নীতি, বড় অঙ্কের অর্থ পাচার এবং অনৈতিক লেনদেনের খবর প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক গত বছরের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর পুরোনো পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে নতুন বোর্ড গঠন করলে এ প্রভাবশালী মহল বাদ পড়ে।
এরই মধ্যে ইউসিবির নিজস্ব ফরেনসিক অডিট, দুদক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধানে প্রাক্তন পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে ব্যাপক আর্থিক অনিয়ম পাওয়া যায়। বেনামি, কাগুজে কোম্পানির মাধ্যমে লোন পাস করিয়ে নিজেদের অ্যাকাউন্টে টাকা সরানোর প্রমাণ মেলে। এসব অর্থ দেশের বাইরে পাচার করে লন্ডন-দুবাইয়ে বাড়ি কেনা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ইউসিবি সেই অর্থই ফেরত চেয়ে আবেদন করেছে।
এরই মধ্যে গত জুলাই মাসে দুদকের করা মামলায় আদালতের নির্দেশে সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও সাবেক ইউসিবি চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ, তার স্ত্রী রুকমিলা জামানসহ সাত সাবেক পরিচালকের মোট ৫৭০ কোটি টাকার শেয়ার জব্দ করা হয়েছে। এ তালিকায় বশির আহমেদ, আনিসুজ্জামান চৌধুরী, এম এ সবুর, বজল আহমেদ, নুরুল ইসলাম চৌধুরী এবং রুক্সানা জামানও রয়েছেন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন