শুক্রবার, ০৬ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রহিম শেখ

প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৫, ০৬:০৯ এএম

এবার ঈদ অর্থনীতি ছাড়িয়ে যাবে ১ লাখ কোটি টাকা

রহিম শেখ

প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৫, ০৬:০৯ এএম

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

আগামী শনিবার (৭ জুন) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। আর এ উৎসব দুর্বল অর্থনীতিতে কিছুটা গতি বাড়াচ্ছে। এরই মধ্যে ঈদকে কেন্দ্র করে দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ছে।

সরকারি চাকরিজীবীরা ঈদের বোনাস পেয়েছেন। বেসরকারি অধিকাংশ কোম্পানিও বোনাস দিয়েছে। বাড়ছে রেমিট্যান্স (প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ)। দেশীয় পোশাক কারখানাগুলোয় বেড়েছে উৎপাদন। বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসায়ীদের বেচাকেনা বেড়েছে। এই ঈদের প্রধান আকর্ষণ পশু বেচাকেনাও শুরু হয়েছে। গত সোমবার থেকে ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে পশুর হাট বসেছে। সবকিছু মিলে এই উৎসব অর্থনীতিতে গতি বাড়াচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের ধারণা-১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে ঈদের অর্থনীতি। অন্যদিকে, ঈদকে কেন্দ্র করে বাজারে বাড়তি টাকার প্রবাহের কারণে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, উৎসবকে ঘিরে বিভিন্ন খাতে বিপুল অঙ্কের অর্থ ঘন ঘন হাতবদল হওয়ায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যেমন বাড়ে। মানুষের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এতে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ে। তবে এর সঙ্গে সরবরাহ ঠিক রাখতে না পারলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। তবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের (ডিএলএস) হিসাবে এ বছর দেশে কোরবানির পশুর চাহিদা ১ কোটি ৪ লাখ। কিন্তু বর্তমানে দেশে রয়েছে ১ কোটি ২৪ লাখ। অর্থাৎ চাহিদার চেয়ে ২০ লাখ পশু বেশি আছে। 

জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছরই এ উৎসবের কারণে অর্থনীতিতে গতি বাড়ে। এ ক্ষেত্রে টাকার প্রবাহ এবং পণ্যের সরবরাহ দুটিই বাড়ে। এ কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারিত হয়। ফলে উৎসব অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক। 

তিনি বলেন, চাহিদার সঙ্গে সরবরাহ ঠিক রাখতে হবে। না হলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। গত বছরের শুরু থেকেই নেতিবাচক ছিল দেশের অর্থনীতি। এ অবস্থায় শুরু হয় জুলাই বিপ্লব। গত বছরের ৫ আগস্টের পর পালটে যায় সব হিসাব-নিকাশ। সবকিছু মিলে অর্থনীতি বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়ে। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের ৯ মাসের চেষ্টায় অর্থনীতিতে কিছু স্বস্তি ফিরছে।

তাদের মতে, কোরবানির ঈদে বাড়তি টাকার প্রবাহ আসে মূলত তিনটি খাত থেকে। এর মধ্যে রয়েছে-সরকারি-বেসরকারি ঈদ বোনাস, রেমিট্যান্স এবং ঈদকে সামনে রেখে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের বাড়তি আয়। আর যেসব পণ্য বেশি বিক্রি হয় এগুলো হলো-কোরবানির পশু (গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা এবং উট), পোশাক, মসলা এবং ইলেকট্রনিক পণ্য। সরকারি-বেসরকারি যেসব পণ্য বেশি বিক্রি হয় এগুলো হলো- কোরবানির পশু (গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা এবং উট), পোশাক, মসলা এবং ইলেকট্রনিক পণ্য। 

সরকারি বেসরকারি চাকরিজীবীদের বোনাসের মাধ্যমে অর্থনীতিতে বাড়তি কত টাকা যুক্ত হয়, তার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। 

তবে বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা বলছে, প্রায় ২০ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, ৬০ লাখ দোকান কর্মচারী, তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মিলিয়ে ৭০ লাখ শ্রমিকের বোনাস। এই টাকা ঈদ অর্থনীতিতে আসছে। এ ছাড়া রয়েছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের টাকা। ২৪ মে পর্যন্ত ২২৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। প্রতি ডলার ১২০ টাকা হিসাবে স্থানীয় মুদ্রায় যা প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংকাররা ধারণা করছেন, এবার ঈদ উপলক্ষ্যে এ রেমিট্যান্স ২৭৫ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। 

কোরবানির মূল আকর্ষণ গবাদিপশু। এবার দেশে কোরবানির পশুর সংখ্যা ১ কোটি ৪ লাখ চাহিদার বিপরীতে ১ কোটি ২৪ লাখ। এ ছাড়া চামড়া, মসলা, দা, বঁটি, পরিবহন, পোশাকসহ বিভিন্ন খাতের উদ্যোক্তাদের কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের (ডিএলএস) প্রাথমিক হিসাবে দেশে এবার ৬৭ হাজার কোটি টাকার কোরবানির পশু বিক্রি হবে। এর মধ্যে অনলাইনে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি পশু বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে। সব মিলিয়ে এবারের কোরবানির অর্থনীতি ছাড়াতে পারে এক লাখ কোটি টাকা। তবে পশু কোরবানির সঙ্গে সঙ্গে অর্থনীতিতে চামড়ার ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে।

ব্যবসায়ীদের মতে, কোরবানির সময় বিভিন্ন পশুর ৯০ লাখ থেকে ১ কোটি চামড়া সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে মোট চাহিদার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ সরবরাহ করা হয় কোরবানির ঈদে। 

চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ খাতের মূল বাজার ৪ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এর সঙ্গে জড়িত অন্যান্য বাজারসহ এ খাতে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়। এ বছর কোরবানির চামড়া কিনতে ৩০০ কোটি টাকার মতো ঋণ দিচ্ছে কয়েকটি ব্যাংক। 

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের এক সমীক্ষায় বলা হয়, ঈদে পরিবহন খাতে অতিরিক্ত যাচ্ছে ৬০০ কোটি টাকা। এই উৎসবে ভ্রমণ ও বিনোদন বাবদ ব্যয় হয় ৪ হাজার কোটি টাকা। এসব খাতে নিয়মিত প্রবাহের বাইরে অতিরিক্ত যোগ হচ্ছে। এর বাইরে আরও কয়েকটি খাতের কর্মকাণ্ড অর্থনীতিতে যোগ হচ্ছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!