শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মেহরুন নিশি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০২৫, ০৮:৪৭ পিএম

লাল সবুজে বিজয়ের পোশাক

মেহরুন নিশি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০২৫, ০৮:৪৭ পিএম

লাল সবুজে বিজয়ের পোশাক

বিজয় দিবসকে বলা হয় বাঙালি জাতির আত্মপরিচয়ের সবচেয়ে উজ্জ্বল দিন। প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর আমাদের জাতীয় জীবনে ফিরে আসে বিজয়ের অনির্বাণ চেতনা। মুক্তিযুদ্ধের সেই সময় এবং আত্মত্যাগের গৌরবগাথার স্মরণে পুরো জাতি সেদিন একাত্ম হয়। বাংলাদেশের উৎসব আর দিবসভিত্তিক ফ্যাশনের ক্ষেত্রে বিজয় দিবস উল্লেখযোগ্য। ফ্যাশন কেবল পোশাক পরিধানের বিষয় নয়; এটি সময়ের প্রতিচ্ছবি, যা আমাদের আবেগ, সংস্কৃতি ও ইতিহাসকে বহন করে। তাই তো বিশেষ এই দিনে ফ্যাশন হাউসগুলো লাল-সবুজের পতাকাকে চেতনার প্রতিচ্ছবি হিসেবে পোশাকে ফুটিয়ে তোলে। বিজয়ের আমেজ স্মরণ করাও দেশপ্রেমেরই অংশ। দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো তাই বরাবরের মতো এবারও বিজয় দিবস ঘিরে সাজিয়েছে লাল-সবুজের সমাহার।

বিজয় দিবস বা বিশেষ দিনগুলোর ফ্যাশন মানেই সারা বছরের একঘেয়েমিকে পেছনে ফেলে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পোশাকে নতুনত্ব আনা। দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো বিজয়ের এই দিনটিকে কেন্দ্র করে যে পোশাক তৈরি করে, সেগুলোর মূল আবহ থাকে দেশপ্রেম আর স্বাধীনতার বাণী। নতুন প্রজন্মের কাছে এই চেতনাকে পৌঁছে দেওয়ার সফল এক মাধ্যম হয়ে ওঠে এই বিশেষ পোশাকগুলো। নিজস্ব নানা ডিজাইনের মাধ্যমে ’৭১-এর আত্মত্যাগ, জাতীয় প্রতীক, স্লোগান কিংবা কবিতার পঙ্ক্তি ফুটিয়ে তুলে ফ্যাশন হাউসগুলো তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতার পরিচয়ও দেয়।

পোশাকে রঙের মিশেল

বিজয় দিবসের পোশাকে প্রধানত জাতীয় পতাকার দুটি রং, অর্থাৎ লাল ও সবুজ-প্রাধান্য পায়। তবে কেবল পতাকার রং ব্যবহার করেই শেষ হয়ে যায় না, এর সঙ্গে যুক্ত হয় নানা ধরনের মোটিফ এবং নকশা। যেমন- পতাকার নকশা, বাংলাদেশের মানচিত্র, মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত প্রতীক, এমনকি দেশাত্মবোধক গানের লাইনও পোশাকে উঠে আসে। ফ্যাশন হাউসগুলো টি-শার্ট, ফতুয়া, পাঞ্জাবি, শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ এবং ছোটদের পোশাকসহ সব ধরনের আউটফিটে বিজয়ের থিমকে নান্দনিকভাবে ফুটিয়ে তোলে। এর মধ্যেই শীত চলে এসেছে, তাই বিজয়ের ফ্যাশনে যুক্ত হয়েছে শাল। শালেও দেখা যাচ্ছে বিজয়ের মোটিফ।

নারীদের শাড়িতে দেখা যায় লাল রঙের ব্যবহার এবং আঁচলে সবুজের ছোঁয়া, অথবা এর বিপরীত কম্বিনেশন। ব্লক প্রিন্ট, স্ক্রিন প্রিন্ট, অ্যাম্ব্রয়ডারি বা হ্যান্ড পেইন্টের মাধ্যমে শাড়িতে মুক্তিযুদ্ধের চিত্র বা বাঙালি জাতীয়তার নানা প্রতীক ফুটিয়ে তোলা হয়। সালোয়ার-কামিজ বা কুর্তাতেও একই ধরনের ডিজাইন মোটিফ ও রং ব্যবহার করা হয়। শীতের আগমন হওয়ায় বিজয়ের পোশাকে সুতি, খাদি, টাঙ্গাইলের তাঁত, মোটা কটন এবং অ্যান্ডির মতো আরামদায়ক কাপড়গুলো প্রাধান্য পায়।

অন্যদিকে ছেলেদের পোশাকের বেলায় পাঞ্জাবিই হলো প্রধান আকর্ষণ। সবুজের বুকে লালের বৈচিত্র্যময় ব্যবহার কিংবা সলিড রঙের পাঞ্জাবিতে বুকের কাছে মানচিত্র বা পতাকার নকশা, এমন সব ডিজাইন দেখা যাচ্ছে বাজারে। এ ছাড়া বিভিন্ন গ্রাফিক ডিজাইন ও বিজয়ের স্লোগানযুক্ত ফতুয়া বা টি-শার্টপরে তরুণরা দেশপ্রেমের বহির্প্রকাশ ঘটায়।

আরও একটি বিষয় না বললেই নয়; বিজয় দিবসের আয়োজনে অনেক ফ্যাশন হাউস ফ্যামিলি ম্যাচিং পোশাক বাজারে নিয়ে আসছে। যার কারণে পরিবারের সবাই মিলে একই থিমের বা একই রঙের পোশাক পরে বিজয় উল্লাস করতে পারবেন। এই ম্যাচিং পোশাকগুলো বিজয়ের আনন্দকে আরও বেশি গভীর করে তোলে।

ফেব্রিক ও নকশা

বর্তমানে ফ্যাশনের ক্ষেত্রে আরামের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব পায়। এবার বিজয় দিবস ঘিরে ফ্যাশন হাউসগুলোর আয়োজনে তাই সুতি, খাদি, এবং তাঁতের মতো দেশীয় ও ঐতিহ্যবাহী কাপড়গুলোই রয়েছে পছন্দের শীর্ষে। নকশার ক্ষেত্রে স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, টাইডাই, বাটিক, অ্যাপলিক এবং অ্যাম্ব্রয়ডারির কাজ দেখা যাচ্ছে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ডিজাইনে আধুনিকতা যোগ করা হলেও, মূল ভাবধারাটি দেশীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে যুক্ত রয়েছে। বিজয় দিবস কেবল একটি ছুটির দিন নয়, এটি একটি চেতনার নাম। দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো প্রতি বছর এই আয়োজনের মাধ্যমে আমাদের ঐতিহ্যকে সম্মান জানাতে ও নতুন প্রজন্মকে স্বদেশমুখী করতে এক অসাধারণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

সাজসজ্জা

আপনিও যদি ভাবছেন এবার বিজয় দিবস উদযাপন করবেন, তবে বিজয় দিবসের পোশাকের সঙ্গে মানানসই সাজসজ্জা এই দিনের উদযাপনকে করে তুলবে আরও বেশি জমকালো।

মেয়েদের সাজসজ্জা

বাঙালিয়ানা মানেই শাড়ি, এ কথা আমরা সবাই জানি। বিজয়ের দিনে যারা শাড়ি পরবেন, তারা এর সঙ্গে লম্বা হাতার ব্লাউজ বা শীত উপযোগী পছন্দের শাল জড়িয়ে নিতে পারেন। শাড়ি বা সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে মাটির গহনা, পুঁতি, বিডস, পার্ল বা মেটালের গহনা খুব মানিয়ে যায়। হাতে লাল-সবুজ কাচের চুড়ি বা বিভিন্ন মেটালের চুড়ি বিজয় দিবসের সাজকে পূর্ণতা দেবে।

মেকআপ : শাড়ির সঙ্গে অনেকেই একটু ভারী সাজ পছন্দ করেন, তবে কুর্তি বা টপসের ক্ষেত্রে হালকা মেকআপই যথেষ্ট। চুলের সাজে খোলা চুলে ওয়েভ কার্ল, স্পাইরাল, পনিটেল অথবা ফ্রেঞ্চ বেণি বেশ জনপ্রিয়। বিজয় দিবসে কপালে লাল টিপ একটি ক্লাসিক সজ্জা হিসেবে বিবেচিত।

ছেলেদের সাজসজ্জা

ছেলেদের সাজসজ্জা এই দিনে বেশ পরিপাটি ও রুচিশীল হয়। পাঞ্জাবি এই দিনের প্রধান পোশাক হলেও, অনেকে ফতুয়া, টি-শার্ট অথবা শার্টও পরতে পারেন। পোশাকের মূল রং লাল-সবুজ থাকলেও, জিন্স বা ট্রাউজারের মতো নিচের পোশাকটি সাধারণত কালো, সাদা বা ডেনিমের হয়, যাতে উপরের পোশাকটি বিশেষভাবে ফোকাস পায়।

অ্যাক্সেসরিজ : পাঞ্জাবি বা ফতুয়ার সঙ্গে একটি শাল বিজয়ে বাড়তি আমেজ যোগ করবে। ঘড়ি, ব্রেসলেট বা দেশাত্মবোধক মোটিফের ব্যাজ বা লকেট ব্যবহার করা যেতে পারে।

জুতা : পাঞ্জাবির সঙ্গে সাধারণত পাম্প শু, স্যান্ডেল পরা হয়। টি-শার্ট বা ফতুয়ার সঙ্গে স্নিকার্স বা লোফারও মানানসই।

 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!