বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনার দ্বিতীয় দিনে বেশ কিছু বিষয়ে দুই দেশ মোটামুটিভাবে একমত হয়েছে। তবে কিছু বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পোস্টে এসব বিষয় জানানো হয়। গতকাল ওয়াশিংটন সময় সকাল ৯টার দিকে তৃতীয় দিনের আলোচনা শুরু হবে বলেও পোস্টে জানানো হয়।
দুই দেশের মধ্যে ‘বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বাণিজ্যের গতি-প্রকৃতি নির্ধারণে’ তিন দিনব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়, দ্বিতীয় দিনের আলোচনার একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন একান্তে বৈঠক করেছেন ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ অ্যাম্বাসাডর জেমিসন গ্রিয়ারের সঙ্গে। গ্রিয়ার ট্রাম্পের বর্তমান প্রশাসনে মন্ত্রী পদমর্যাদার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তার সঙ্গে শুল্কবিষয়ক আলোচনার পাশাপাশি দুই দেশের বাণিজ্য ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আন্তরিক পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় বাণিজ্য উপদেষ্টা বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন।
পোস্টে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির পাশাপাশি আমদানির পরিমাণও বৃদ্ধি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং যা ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। শুল্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নায্যতা প্রত্যাশা করে। পরিবেশ যেন বাংলাদেশের জন্য প্রতিযোগিতামূলক থাকে। গ্রিয়ার সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। সরাসরি আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব ড. নাজনীন কাওসার চৌধুরী। ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা।
দেশি শিল্পকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার যুক্তি দেখিয়ে গত ২ এপ্রিল শতাধিক দেশের ওপর চড়া হারে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাংলাদেশের ওপরও বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা আসে। তবে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের সময় ৯ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত রাখার ঘোষণা দেন ট্রাম্প। এদিকে ৯ জুলাই আসার দুদিন আগেই বাংলাদেশসহ ১৪ দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানকে চিঠি দিয়ে নতুন হারে শুল্কারোপের কথা বলেন ট্রাম্প। শেষ সময়ে চুক্তি করতে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়েও কাজ হয়নি। সবার উদ্দেশ্যে একই ভাষায় লেখা চিঠিতে বলা হয়, তার নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে ১ আগস্ট থেকে।
এত দিন বাংলাদেশের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কহার ছিল গড়ে ১৫ শতাংশ, এখন নতুন করে আরও ৩৫ শতাংশ শুল্ক বাড়ায় এটি দাঁড়াবে ৫০ শতাংশে। এতে চাপে পড়বে বাংলাদেশের রপ্তানি, বিশেষ করে প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক। একক দেশ হিসেবে পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র।