রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


হাসান আরিফ

প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৫, ০১:০৬ এএম

ফেঁসে আছে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক

হাসান আরিফ

প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৫, ০১:০৬ এএম

ফেঁসে আছে রাজশাহী  কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক

লাভের মুখ দেখা বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘বিশেষ কৃষি ও পল্লী ঋণ’ কর্মসূচি ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)। রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি নিয়ে এক হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল বিশেষায়িত এই ব্যাংকটি। সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টির মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে নিয়েছে। রাকাব সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। যার একটি অনুলিপি রূপালী বাংলাদেশের হাতে এসেছে।

সূত্র জানায়, চলতি বছরের আগস্ট মাসে রাকাবের রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। এই সময়ের মধ্যে রাকাব অর্থ পরিশোধ করতে না পারায় ২০২৬ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

অর্থ বিভাগের উপসচিব ইশরাত জাবিন স্বাক্ষরিত চিঠি সূত্রে জানা গেছে, মেয়াদ বাড়ানোর জন্য রাকাবকে যেসব শর্ত মানতে হবে তা হচ্ছেÑ ব্যাংকটির কার্যক্রমের পরিসর বৃদ্ধি করার জন্য তহবিল ও মূলধনের পরিমাপ বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। অর্থবছর শেষ হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে আবশ্যিকভাবে চূড়ান্ত অডিট শেষ করে অর্থবিভাগে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। অন্যথায়, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ দায়ীদের চিহ্নিত করে কঠোর বাবস্থা গ্রহণ করে অর্থ বিভাগকে অবহিত করবে। ঋণের সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত প্রতি মাসের ৭ তারিখের মধ্যে বকেয়া অর্থের হালনাগাদ তথ্য অর্থ বিভাগকে অবহিত করতে হবে এবং এক বছরে পরিকল্পনাগুলোর কার্যকারিতা ও আর্থিক সূচকের অগ্রগতি মূল্যায়নের ভিত্তিতে গ্যারান্টির মেয়াদ পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে প্রয়োজন হলে আয়ও বৃদ্ধি করা হবে।

জানা গেছে, প্রান্তিক কৃষক নয়, শহর ও উপজেলার হিমাগারের মালিক ও অটো রাইস মিলে ঋণ দিয়ে ফেঁসে গেছে উত্তরাঞ্চলের জন্য বিশেষায়িত এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি। এই ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের ২১ শতাংশই এখন খেলাপি। পাশাপাশি উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহ করে সরকার নির্ধারিত সুদে ঋণ দিয়ে বছরের পর বছর লোকসান করছে ব্যাংকটি। ফলে গত পাঁচ অর্থবছরে লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা।

আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত এই ব্যাংককে এখন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের (বিকেবি) সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সরকারের পক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকই এখন এসব সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। তবে বিকেবির নিজের বিতরণ করা ঋণের ১২ দশমিক ৬৪ শতাংশই এখন খেলাপি। পরিমাণের দিক থেকে যা ৩ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা।
এরপরও প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ ৩৭ বছরের লোকসানের কালিমা থেকে মুক্ত হয়ে সদ্য সমাপ্ত ২০২৩-২৪ বার্ষিক হিসাব সমাপনীতে নিট মুনাফা অর্জনসহ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সব আর্থিক সূচকে কাক্সিক্ষত সফলতা অর্জন করে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত লক্ষ্যমাত্রাসমূহ শতভাগ অর্জন করেছে রাকাব। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২.৯৮ কোটি টাকা নিট মুনাফা অর্জিত হয়েছে। লোকসানি শাখার সংখ্যা গত বছরের ৬০টি থেকে ৪৮টি হ্রাস পেয়ে এ বছরে ১২টিতে দাঁড়িয়েছে।

১৯৮৭ সালে বিকেবির তৎকালীন রাজশাহী বিভাগের শাখাগুলো নিয়ে গঠন করা হয় রাকাব। বর্তমানে এটির বিস্তৃতি আছে রাজশাহী বিভাগ ভেঙে গঠিত রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতেও। তবে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে ৩৭ বছর আগে বিকেবি ভেঙে রাকাব গঠিত হলেও এখন এই দুটি ব্যাংককে আবার একীভূত হতে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে।
রাকাব গঠনের মূল লক্ষ্য ছিল, কৃষি খাতে অর্থায়নের মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের কৃষিভিত্তিক ১৬টি জেলার উন্নয়ন। এই ব্যাংকের ৩৮৩টি শাখার মধ্যে ৩৩৩টি গ্রামাঞ্চলে অবস্থিত। রাকাবের নেটওয়ার্ক দেশের উত্তরাঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রামে রয়েছে। দেশের অন্য কোনো ব্যাংকের শাখা এত প্রত্যন্ত গ্রামে পৌঁছেনি।

ব্যাংকটির শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আঞ্চলিক ব্যাংক হওয়ায় আঞ্চলিক রাজনৈতিক নেতাদের চাপে হিমাগার ও অটো রাইস মিলে ঋণ দেওয়া হয়েছে, যে অর্থ এখন আদায় হচ্ছে না। এ ছাড়া দক্ষ কর্মকর্তা ও জনবল সংকটের কারণেও যথাযথ ব্যাংকিং ব্যাহত হচ্ছে। তবে উত্তরাঞ্চলের খাদ্য উৎপাদন, প্রাণিজ ও মৎস্য খাতে যে সাফল্য এসেছে, তার মূলে রয়েছে রাকাবের অর্থায়ন। একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ে গিয়ে ঋণ না দিলে কৃষকদের উৎপাদন ব্যাহত হতো।

রাকাবের প্রধান কার্যালয় রাজশাহীতে। সেখান থেকেই ১৬ জেলায় কার্যক্রম পরিচালনা করে ব্যাংকটি। রাকাবের অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার কোটি টাকা ও পরিশোধিত মূলধন ৮২৪ কোটি টাকা। ১৮টি জোনাল কার্যালয়, ২ হাজার ৫০০ কর্মকর্তা ও ১ হাজার ২৯৩ কর্মচারী এবং ৩৮৩টি শাখা নিয়ে চলছে এই ব্যাংকের কার্যক্রম। গত ডিসেম্বর শেষে রাকাবের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৪৫১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!