শুক্রবার, ০৮ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


শাহীনুর ইসলাম শানু

প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৫, ০১:৪৪ এএম

সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকটের আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের

শাহীনুর ইসলাম শানু

প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৫, ০১:৪৪ এএম

সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকটের আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের

গরিরের আহার ডাল-ভাত। দাম বৃদ্ধির কারণে সেই খাবার জোটাতে এখন হিমশিম খাচ্ছেন ঢাকার অধিকাংশ শ্রমজীবী মানুষ। দেশি মশুর ডাল কেজিতে অন্তত ৩০ এবং প্রতি ডজন ডিমের দামে বেড়েছে ২৫ টাকা। বাড়তি দামে চাল বিক্রির সঙ্গে দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ২০ টাকা এবং সোনালি মুরগির দাম ঢাকায় স্থানভেদে বেড়েছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। গত ১৫ দিনের ব্যবধানে বাড়তি দামের কারণে বাড়ছে ভোক্তার নাভিশ্বাস।

অন্যদিকে, সরবরাহ ঠিক থাকলেও আগের মতো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি, চাল ও আলু। ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে বাজারে এক ধরনের সংকটের শঙ্কাও রয়েছে। ভোগ্যপণের বাজারে কয়েকটি পণ্যের দামে মূল্যস্ফীতির আগুন আরও ছড়িয়ে দিতে পারে বলে অনুমান করছেন ব্যবসায়ীরা। ঢাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে গতকাল বৃহস্পতিবার এই চিত্র দেখা গেছে।

এদিকে ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতির হার আগের মাসের তুলনায় সামান্য বেড়েছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশে। জুনে যা ছিল ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। গরিরের আহারে নুতন করে দাম বৃদ্ধির কারণে আগামী মাসেও মূল্যস্ফীতির পারদ চড়তে পারে বলে জানান অনেক ব্যবসায়ী।

খাদ্যপণ্য হিসেবে মশুরের দাম সম্পর্কে ঢাকার কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটে লক্ষ্মীপুর স্টোরের মালিক আবুল হোসেন খান বলেন, ‘দেশি মশুর ডালের দাম বেড়েছে কেজিতে অন্তত ৩০ টাকা। ২৫ কেজির এক বস্তা মশুরের দাম ১৫ দিন আগে ছিল ৩৬৫০ থেকে ৩৭শ টাকা। এখন সেই ডাল কিনতে হচ্ছে ৪ হাজার ৫শ টাকায়।’ তিনি রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘গত পনেরো দিনেই এই দাম বাড়ছে, কেন বাড়ছে জানি না।’ 

পাইকারি হিসেবে কিচেন মার্কেটে ভাই ভাই এগ শপের সঞ্চয় চক্রবর্তী বলেন, ‘এই সময়ে প্রতি বছরেই ডিমের দাম বাড়ে। বর্ষার এই সময়ে গ্রামে হাঁস-মুরগি ডিম দেয় কম।’ তিনি রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘আগে একশ ডিম কিনতাম ৮৮০ থেকে ৯০০ টাকায়। এখন কিনতে হচ্ছে ১০৫০ টাকায়।’ খুচরা হিসেবে ঢাকার বাজারে প্রতি ডজন ১৩৫-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

ডিমের আরেক ব্যবসায়ী উজ্জ¦ল বলেন, ‘গত সপ্তাহে ডিমের ডজন ছিল ১১০-১১৫ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা দরে।’ তবে ঢাকার অন্য বাজার শান্তিনগর, মগবাজার ও মালিবাগে বেশি দামে প্রতি ডজন ১৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। 

পেঁয়াজের দাম সম্পর্কে মগবাজারে রাজ্জাক স্টোরের মালিক মেহেদী হাসান বলেন, ‘কারওয়ান বাজার থেকে গত সপ্তাহে ৫৪ কেজি কিনে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। এখন ৭২ টাকায় কিনতে হচ্ছে, বিক্রি করছি ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘তেলের বাজারে একটা কিছু হতে চলেছে। এতদিন ভালো ছিল, হয়তো দাম বাড়বে।’
ঢাকার বাজারে গত ১৫ দিনে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রায় ২৪ শতাংশ বলে জানিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। দাম বৃদ্ধি সম্পর্কে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিকাশ চন্দ্র দাশ বলেন, ‘হাটে কৃষকরাই এ দামে পেঁয়াজ বিক্রি করেছে। তবে কোনো সিন্ডিকেট এখানে নেই। তবে বর্ষার কারণে এবং বেশি লাভের আশায় তারা বাজারে ছাড়ছে কম।’ তিনি রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘বর্ষায় সরবরাহ অনেক কমায় দাম একটু বাড়তি রয়েছে। আমদানি থাকলে দরও পড়ে যেত।’

ঢাকার মালিবাগে গতকাল বৃহস্পতিবার সোনালি মুরগির প্রতি কেজি ৩২০ টাকা এবং শান্তিনগরে ৩৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। তবে ঢাকার বৃহৎ বাজার কারওয়ান বাজারে তা ৩০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। যা গত সপ্তাহে সর্বোচ্চ ছিল ২৮৫ টাকা। অন্যদিকে বর্ষায় দেশি মাছের দাম কমেনি। বেড়েছে ইলিশের দাম। কেজি সাইজের একটি ইলিশের দাম ২২শ থেকে ২৬শ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।

এদিকে টমেটো ও গাজরের পাশাপাশি ঢাকার বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। বর্তমানে সব থেকে কম দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁপে। এক কেজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা। বাকি সবজিগুলোর কেজি ৬০ টাকার ওপরে। সেই সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ। ঢাকায় স্থানভেদে টমেটো প্রতি কেজি ১৬০ থেকে ২০০ এবং গাজর ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

টমেটো ও গাজরের বিষয়ে মালিবাগের ব্যবসায়ী মো. শরিফুল বলেন, ‘এখন টমেটো ও গাজরের মৌসুম না। বাজারে এখন আমদানি করা টমেটো ও গাজর বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আমদানি করা টমেটো ও গাজর দেখতে সুন্দর, যে কারণে চাহিদাও বেশি। বাজারে কিছু দেশি টমেটো ও গাজরও পাওয়া যাচ্ছে। তবে এগুলো দেখতে খুব একটা সুন্দর না।’
ঢাকার কয়েকটি বাজারে গত কয়েকদিনে পটল, ঝিঙা, বেগুন, করলা, বরবটির দাম কেজিতে ১০ টাকার ওপরে বেড়েছে। এখন এক কেজি পটল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঝিঙা, বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। করলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। 

ঢাকার বাজারে বিক্রি নিষিদ্ধ মিনিকেট চাল আগের মতোই বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা দরে। গরিবের আহার আলু ২৮ থেকে ৩০ এবং বিআর-২৮ চাল পাওয়া যাচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকায়। 

ঢাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, চালের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার গত বছর থেকে আমদানিকারকদের শুল্ক প্রত্যাহার করে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে। তবুও নিয়ন্ত্রণে আসেনি চালের বাজার। নতুন করে ডাল, ডিম ও মুরগির দাম বেড়েছে। তাই এসব পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানান তারা। না পারলে বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়তে যাচ্ছে দেশ, বলেন তারা।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!