ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫

৩৭ বছর পর দুই বাঙালির ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২৫, ০১:০৬ এএম

দীর্ঘ ৩৭ বছর পর আবারও ইংলিশ চ্যানেল জয় করলেন দুই বাংলাদেশি সাঁতারুÑ মাহফিজুর রহমান সাগর ও নাজমুল হক হিমেল। গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এবং যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় রাত আড়াইটায় তারা এই অভিযান শুরু করেন, যা সফলভাবে শেষ হতে সময় লাগে প্রায় ১২ ঘণ্টা ২০ মিনিট।

সাবেক অলিম্পিয়ান মাহফিজুর রহমান সাগর জানান, তারা ছিলেন একটি আন্তর্জাতিক রিলে দলের অংশ, যেখানে বাংলাদেশ থেকে অংশ নিয়েছেন তিনি ও হিমেল। দলটির অন্য চার সদস্যের মধ্যে ছিলেন একজন মেক্সিকান এবং তিনজন ভারতীয় সাঁতারু। রিলে নিয়মানুযায়ী প্রতিটি সাঁতারু নির্দিষ্ট সময় ও দূরত্ব সাঁতরে দলীয়ভাবে লক্ষ্যে পৌঁছান। 
সাগর বলেন, ‘চ্যানেল কর্তৃপক্ষ নভেম্বর মাসে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়ে থাকে। তবে যারা সাঁতারে সফল হয়েছেন, তাদের নাম তারা ওয়েবসাইটে আগেই প্রকাশ করে।’

তবে এই অভিযানে সাফল্যের পেছনে যেমন ছিল শারীরিক প্রস্তুতি, তেমনি ছিল অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ। দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা চাওয়া হলেও প্রত্যাশিত সাড়া মেলেনি। শেষমেশ পাশে দাঁড়ায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। অভিযানের জন্য মাহফিজুরকে প্রায় ২০ কেজি ওজন বাড়াতে হয়েছে, যাতে ঠান্ডা পানির অভিঘাতে শরীর ঠিক রাখতে পারেন।

তবে সফলতার এই যাত্রাপথ মসৃণ ছিল না। জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে অভিযান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে তা কয়েকবার পিছিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ২৯ জুলাই মধ্যরাতে তারা বিশ্বের অন্যতম চ্যালেঞ্জিং জলপথ ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার জন্য সাগরে নামেন।

নাজমুল কিশোরগঞ্জের ছেলে। তার বাবা আবুল হাসেম ছিলেন আশির দশকের জাতীয় সাঁতারু। জাতীয় পর্যায়ে একাধিক পদক জিতেছেন নাজমুল। এর মধ্যে আছে জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতারে ২০টি সোনা, ১৫টি রুপা। এ ছাড়া ২০০৬ থেকে ২০০৮ সালে জাতীয় সাঁতারে জেতেন পাঁচ সোনা ও চার রুপা। ‎বিকেএসপির সাবেক ছাত্র নাজমুল উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান চীনে। বেইজিং স্পোর্টস ইউনিভার্সিটি থেকে শারীরিক শিক্ষায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। ২০১২ সালে চীনে অল বেইজিং ইন্টারন্যাশনাল ফরেন স্টুডেন্টস সাঁতারে চ্যাম্পিয়ন হন।

মাহফিজুর ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকে বাংলাদেশের পতাকা বহন করেছেন। ২০১৬ সালে রিও ডি জেনিরোর পুলে নেমেছেন। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ৫০টির মতো সোনা জিতেছেন। ২০১০ এসএ গেমসে দুটি রুপা ও একটি ব্রোঞ্জ, ২০১৬ গুয়াহাটি এসএ গেমসে সাতটি ব্রোঞ্জ, ২০১৯ নেপাল এসএ গেমসে একটি ব্রোঞ্জ জেতেন। ২০১৬ থাই ওপেনে সোনা জেতেন মাহফিজুর।