জুলাই সনদ দ্রুত বাস্তবায়ন, স্থায়ী বিধানে যুক্ত করা ও জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ চত্বর প্রায় চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ রাখেন ‘জুলাই যোদ্ধারা’। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ‘জুলাই যোদ্ধা সংসদ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে এই অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। এতে শাহবাগ মোড় ও এর আশপাশের সব সড়কে যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। সকালের পর থেকে শাহবাগ এলাকায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এতে আশপাশের সড়কে দেখা দেয় তীব্র যানজট। ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। বিকল্প পথে চলতে হয় গণপরিবহনকে, অনেক যাত্রীকে পায়ে হেঁটেই গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা গেছে।
বেলা ২টার দিকে শাহবাগ ঘুরে দেখা যায়, সড়কের মাঝখানে বসে বিক্ষোভ করছেন আন্দোলনকারীরা। তারা বলছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে। এক বিক্ষোভকারী বলেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত জুলাই সনদ ঘোষণা করা না হবে, তাদের কর্মসূচি চলবে। এ সময় তারা ‘জুলাই নিয়ে টালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘জুলাই সনদ দিতে হবে, দিতে হবে, দিতে হবে’ স্লোগান দিতে থাকেন।
আন্দোলনকারীরা যখন সড়ক অবরোধ করেছেন, তখন ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন সাধারণ মানুষ। পথচারী জাফর ইকবাল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দুই দিন পরপর এই দাবিদাওয়া ভালো লাগে না। দাবিদাওয়া আদায়ে সড়ক অবরোধ হয় আর ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে।’ মতিঝিল থেকে পল্লবীগামী বিকল্প পরিবহনের সহকারী নয়ন বলেন, ‘রাস্তা বন্ধ থাকলে ঘুরে যেতে হয়। সেদিকেও জ্যাম থাকে আর সময়ও বেশি লাগে। এতে খরচ বাড়ে, কিন্তু যাত্রীরা তো রেগুলার ভাড়াই দেয়। বাড়তি ভাড়া দেয় না।’
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বৃষ্টি শুরু হলে কিছুটা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। তখন ব্যক্তিগত কিছু যানবাহন সড়কের একপাশ দিয়ে চলাচল করে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যানবাহন এবং রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স শুরু থেকেই চলাচল করতে দেখা যায়। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর বলেন, অবরোধের ফলে শাহবাগ মোড় ও এর আশপাশের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
অবরোধকারীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ জুলাই শহিদ ও জুলাই যোদ্ধাদের স্বীকৃতি, শহিদ পরিবার ও আহতদের আজীবন সম্মান, চিকিৎসা, শিক্ষা ও কল্যাণের পূর্ণ নিশ্চয়তা প্রদান করা, শহিদ পরিবার ও আহতদের প্রতি দায়িত্ব গ্রহণ করা, আহতদের সব চিকিৎসা, পুনর্বাসন, কর্মসংস্থান ও কল্যাণমূলক ব্যয় রাষ্ট্রকে বহন করা, আহত ও শহিদ পরিবারের জন্য আজীবন সম্মানজনক ভাতা নিশ্চিত করা, শহিদ পরিবার ও আহতদের জন্য বিশেষ আইনি সুরক্ষা ও সহায়তা কেন্দ্র গঠন করা, শহিদ ও আহতদের ওপর সংঘটিত দমন-পীড়নের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানদ-ে বিচারকার্য সম্পন্ন করা এবং একটি স্বাধীন সত্য ও ন্যায় কমিশন গঠন করা।
আপনার মতামত লিখুন :