ঢাকা বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫

কালের সাক্ষী লক্ষ্মণ সাহার শতবর্ষী জমিদার বাড়ি 

মাহবুব সৈয়দ, পলাশ (নরসিংদী) 
প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২৫, ০৭:৫৫ এএম
জমিদার বাড়ি 

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের জয়নগর এলাকায় শত বছরের পুরোনো জমিদারবাড়ি আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মোগল আমলে লক্ষ্মণ সাহা নামের এক জমিদার নিপুণ এই কারুকার্যখচিত বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন। ২৪ কক্ষবিশিষ্ট এই বাড়ির পাশে একটি ছোট মন্দির, একটি অর্ধনির্মিত প্রাচীন বাড়ি এবং গাছগাছালিতে বেষ্টিত বাগান রয়েছে। বাড়ির চারপাশ উঁচু প্রাচীর, পুকুর এবং শান বাধানো ঘাটও আছে। বিশাল আকৃতির এই জমিদারবাড়ির বর্তমান মালিকানায় রয়েছেন আহম্মদ আলী নামের এক উকিল; যে কারণে বাড়িটি বর্তমানে উকিলের বাড়ি নামে পরিচিত। 

জানা যায়, স্বাধীনতার পর জমিদার লক্ষ্মণ সাহার নাতি নারায়ণ সাহা জমিদারের রেখে যাওয়া সব সম্পত্তি আহম্মদ আলীর কাছে বিক্রি করে নারায়ণগঞ্জে চলে যান। পরে আহম্মদ আলী তার স্ত্রীর নামানুসারে বাড়িটির নামকরণ করেন জামিনা মহল। তবে আহম্মদ আলী আইন পেশার সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন বিধায় বর্তমানে জমিদারবাড়িটি উকিলের বাড়ি হিসেবেই পরিচিত। বর্তমানে আহাম্মদ আলীও নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করছেন।

এদিকে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের অভিযোগ, জামিদারের রেখে যাওয়া এই বিশাল সম্পত্তি ছিল দেবোত্তর সম্পত্তি। স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দা সিদ্দিকুর রহমান জানান, তৎকালীন ভারতবর্ষে এই এলাকা ছিল দেবোত্তর হিসেবে। মূলত দেবোত্তর বলতে বোঝায় ওয়াক্ফ জমি। ওই সময়ে দেবোত্তর জমি হলে জমিদারদের খাজনা দিতে হতো না। জমিদার লক্ষ্মণ সাহার ছিল তিন ছেলেÑ নিকঞ্জ সাহা, পেরিমোহন সাহা ও বঙ্কু সাহা। জমিাদার মারা যাওয়ার পর তারা তিন ভাই এই সম্পত্তি দেখভাল করতেন। বঙ্কু সাহা ভারত ভাগের সময় এখান থেকে ভারতে চলে যান।

পরে পাকিস্তান থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় হওয়ার কিছুদিন আগে নিকুঞ্জ সাহাও ভারতে চলে যান। একপর্যায়ে জমিদারের ছোট ছেলে পেরিমোহন সাহা এই সম্পত্তির দেখভাল করেন। পেরিমোহন সাহার বৌদ্ধ নারায়ণ সাহা নামে এক ছেলে ছিল। পেরিমোহন সাহা মারা যাওয়ার পর বৌদ্ধ নারায়ণ এই ওয়াক্ফ সম্পত্তি বিক্রি করে দেন। তিনি আরও জানান, দেবোত্তর  এই সম্পত্তি বিক্রি করার পর এলাকার হিন্দু সম্প্রদায় ট্রাস্ট নামের একটি সংগঠন আদালতে মামলা করে, যা এখনো চলমান।