রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫, ১১:৫৮ পিএম

পৃথিবীর শিরা-উপশিরা ধরা পড়ল ক্যামেরায়

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫, ১১:৫৮ পিএম

পৃথিবীর শিরা-উপশিরা ধরা পড়ল ক্যামেরায়

মার্কিন মহাকাশচারী ডন পেটিট মহাকাশে অবস্থানকালে পৃথিবীর দিকে ক্যামেরার লেন্স ঘুরিয়ে তুলেছেন অসাধারণ সব দৃশ্য। এবার তিনি বন্দি করেছেন বিশ্বের বৃহত্তম নদী অ্যামাজন অববাহিকার মনোমুগ্ধকর রূপ। মহাশূন্য থেকে তার তোলা ছবিতে নদীটি যেন সূর্যালোকে ঝলমল করছে, এক অপূর্ব প্রাকৃতিক শিল্পকর্মে রূপ নিয়েছে পুরো অঞ্চল।

ছবিতে দেখা যায়, সূর্যের আলো নদীর জলের ওপর প্রতিফলিত হয়ে তৈরি করেছে সানগ্লিন্ট প্রভাব, এক ধরনের ঝিকিমিকি আলো, যা জলের ওপর ছড়িয়ে পড়ে। পেটিট এটিকে বর্ণনা করেছেন ‘জ্বলজ্বলে ফ্র্যাক্টাল প্যাটার্ন’ হিসেবে, যা পুরো রেইনফরেস্টজুড়ে ছড়িয়ে থাকা নদীর জটিল নকশাকে নতুন আঙ্গিকে উপস্থাপন করে।

অ্যামাজনের চিত্র মহাকাশ থেকে যেন এক জীবন্ত প্রাণীর মতো। অসংখ্য শাখা-প্রশাখা, যেন শিরা-উপশিরার মতো বিস্তৃত হয়েছে কয়েক কিলোমিটারজুড়ে। প্রধান নদীটি আটলান্টিক মহাসাগরের দিকে সাপের মতো বেঁকে বেঁকে এগিয়ে গেছে, সঙ্গে রয়েছে অগণিত উপনদী, পুরোনো নদীপথে তৈরি হওয়া অর্ধচন্দ্রাকৃতি অক্সবাউ লেক, আর বন্যাপ্রবণ এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে থাকা হ্রদ ও জলাভূমি। ছবির কালো-সাদা ভিজ্যুয়াল রেন্ডারিং এসব জলাশয়কে আরও উজ্জ্বল করে তুলেছে।

এই সানগ্লিন্ট প্রভাব অ্যামাজন নদী ব্যবস্থার বিশালতা ও জটিলতাকে এক প্রাকৃতিক মানচিত্রের মতো চোখের সামনে তুলে ধরে। পৃথিবীর অন্যতম জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এই বাস্তুতন্ত্রের মহিমা মহাকাশ থেকেও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

অ্যামাজনের পরিধি এতটাই বিশাল যে তার প্লাবনভূমি উত্তর আমেরিকার সমান এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। নদীটির দুই কূলজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে হ্রদ, জলাশয় ও ক্রমাগত বদলে যাওয়া নদীপথ। বৈজ্ঞানিক দিক থেকেও এ ধরনের ছবি অমূল্য। গবেষকরা বলেন, মহাশূন্য থেকে তোলা ছবি নদীর গতিশীলতা বোঝার জন্য গুরুত্বপূর্ণÑ কীভাবে বন্যায় নদীর পথ পরিবর্তিত হয়, কীভাবে উপনদীগুলো বর্ষার সময় জল বণ্টন করে, এসব বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়।

এ ছাড়া, এই দৃশ্যপট বিজ্ঞানীদের সাহায্য করে পলি পরিবহন, প্লাবনভূমির বিস্তার এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তীব্র বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট নতুন বন্যা-প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করতে। অ্যামাজন অববাহিকার মতো সংবেদনশীল অঞ্চলে এসব তথ্য ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

কিন্তু ছবির আরেকটি দিকও চোখ এড়ায় না; যা হলো মানবিক প্রভাব। মহাকাশ থেকেও স্পষ্ট বোঝা যায়, বন উজাড়ের দাগ, কৃষিজমি ও উন্নয়নের কারণে পরিবর্তিত ভূমিরূপ। ঘন সবুজ রেইনফরেস্টের মাঝে এই দাগগুলো যেন প্রকৃতির শরীরে ক্ষতের মতো। গবেষকরা সতর্ক করছেন, অনিয়ন্ত্রিত কাঠ কাটা, কৃষি সম্প্রসারণ ও নগরায়ণ অ্যামাজনের পরিবেশগত ভারসাম্যকে হুমকির মুখে ফেলছে।

ডন পেটিটের তোলা এই ছবিগুলো তাই শুধু শিল্পসম্মত নয়, আমাদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তাও বয়ে আনে। মহাকাশ থেকে দেখা অ্যামাজন একই সঙ্গে সুন্দর ও ভঙ্গুর। এটি এমন এক জীবন্ত নেটওয়ার্ক, যা রেইনফরেস্ট, মহাসাগর ও জলবায়ুকে একই সূক্ষ্ম সূত্রে যুক্ত করে রেখেছে।

অতএব, এই প্রতিচ্ছবি কেবল মুগ্ধতার নয়, বরং এক সতর্কবার্তাওÑ প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখা মানে নিজেদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করা।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!