সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) জিহাদ ঘোষণা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। তিনি বলেন, ‘দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, আসন্ন নির্বাচনে কাউকে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। ১৮ কোটি মানুষের প্রত্যাশা একটি ভালো নির্বাচন। অতীতে আমরা বহুবার কলঙ্কিত হয়েছি, এবার সেই কলঙ্ক মুছে দিতে হবে। আমরা একটি গ্রহণযোগ্য ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে চাই।’
গতকাল সোমবার বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (বার্ড) কুমিল্লার সম্মেলনকক্ষে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আয়োজিত ‘নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আর মাত্র ৮০ থেকে ৯০ দিন বাকি। এরপরও কারো মনে যদি সন্দেহ থাকেÑনির্বাচন হবে না, তাহলে সেটি ভুল ধারণা। নির্বাচন হবেই এবং তা হবে অংশগ্রহণমূলক ও স্বচ্ছ।’
আনোয়ারুল ইসলাম আরও বলেন, ‘প্রবাসীদের ভোটার হওয়া এবং ভোট দেওয়ার জন্য যে রেজিস্ট্রেশন তা জাঁকজমকপূর্ণভাবেই উদ্বোধন হবে। সেই ভোটের নাম হবে-‘পোস্টাল ব্যালটে ভোটিং। এই পোস্টাল ব্যালটে থাকবেন, নির্বাচনে দায়িত্বপালনকারী বাইরের জেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচনি কর্মকর্তা, কর্মচারী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নিয়োজিত প্রায় দেড় লাখ ভোটার। যারা কয়েদি আসামি, বিচারের অপেক্ষায় এখনো সাজা হয়নি, তারা যেন জেলখানায় বসে ভোট দিতে পারেন সে ব্যবস্থাও করছে।’
কর্মশালায় আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা কুমিল্লার মোহাম্মদ আজিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আব্দুল হালিম খান, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়সার, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান, এবং উপপ্রধান (উপসচিব) ও প্রকল্প পরিচালক, সিবিটিইপি প্রকল্প, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, মুহাম্মদ মোস্তফা হাসান।
দিনব্যাপী এ কর্মশালায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নির্বাচন কর্মকর্তারা অংশ নেন। তারা মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালনের সময় সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায় নিয়ে মতবিনিময় করেন। বক্তারা বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রতিটি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। ভোটকেন্দ্রই হলো গণতন্ত্রের প্রতিচ্ছবি, তাই সেখানে সঠিক দায়িত্ব পালনে কোনো অবহেলা চলবে না।
নির্বাচনের ২০ দিন আগে প্রবাসীরা ভোট দেবেন: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসীরা দেশের ভোটারদের চেয়ে ২০ দিন আগে ভোট দেবেন এবং ভোট দিয়ে ব্যালট ফেরত পাঠাতে হবে অন্তত ১৭ দিন আগে। গতকাল নির্বাচন ভবনে অনলাইনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে প্রবাসীরা অনলাইনে যুক্ত ছিলেন। এ সময় নির্বাচন ভবনে ইসি সচিব ও জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে মহাপরিচালকও উপস্থিত ছিলেন।
আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘কোনো পরীক্ষা ছাড়াই প্রথমবারের মতো প্রবাসীদের পোস্টাল ব্যালটে ভোট নিতে যাচ্ছে ইসি। এটি বড় চ্যালেঞ্জ।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৮ নভেম্বর পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানের জন্য অ্যাপ চালু হবে। এরপর অনলাইনে যে ফর্মটা পাওয়া যাবে সেটা ডাউনলোড করে পূরণ করতে হবে। নির্বাচনের তিন সপ্তাহ আগে প্রার্থীর তালিকা হয়ে যাবে। এরপর ভোট দিয়ে নিকটস্থ পোস্ট বক্সে ড্রপ করতে হবে। নির্বাচনের অন্তত ১৭ দিন আগে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিয়ে তা পাঠিয়ে দিতে হবে। না হলে নির্বাচনের পরে ভোট পৌঁছাতে পারে। সে ক্ষেত্রে ভোটটি নেওয়া যাবে না।’

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন