বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় ব্রিটেনের লন্ডন বরাবরই শীর্ষে। সেই বিলাসবহুল শহরেই আয়েশী জীবন কাটাচ্ছেন বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসা আওয়ামী লীগের শতাধিক ব্যক্তি। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তার আজ্ঞাবহ মন্ত্রী-এমপি, মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যানসহ দলের শতাধিক নেতা রয়েছেন বিশ্বের অন্যতম বিলাসবহুল শহর লন্ডনে।
যুক্তরাজ্য বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুজ্জামান সুহেল রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, দেশের টাকা পাচারকারী গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজ চক্রের অনেক সদস্য ব্রিটেনে এসেছেন। পালিয়ে আসা এসব দুর্নীতিবাজ চক্র আবারও সংবদ্ধভাবে গণতন্ত্র, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, সর্বোপরি জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে।
তবে এখানেও তারা বাংলাদেশি কমিউনিটি দ্বারা নানা সময়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন। মন্ত্রীদের হাত থেকে লিফলেট পর্যন্ত নেননি ব্রিটেনের বাংলাদেশি কমিউনিটির ব্যবসায়ীরা। এখানে রয়েছে আমাদের বিশাল কমিউনিটি। তাদের এই দুষ্কৃতিকারীদের ব্যাপারে সচেতন করতে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি যুক্তরাজ্যে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে আমরা লন্ডনসহ বিভিন্ন শহরে লিফলেট বিতরণ অব্যাহত রেখেছি।
জানা যায়, ৫ আগস্টের পর সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ অন্য অনেক নেতার মতো দেশেই লুকিয়ে ছিলেন। পরে তিনি বেলজিয়ামে চলে যান। হাছান মাহমুদ বেলজিয়ামের নাগরিক। তবে তার ছেলে লন্ডনে পড়ালেখা করেন। ছেলের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করতে রমজান মাসে তিনি লন্ডনে যান। এখন সেখানেই অবস্থান করছেন। সম্প্রতি পূর্ব লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফকে দেখতে যান হাছান মাহমুদ। পরে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে রেস্টুরেন্টে গিয়ে কফি খান। আওয়ামী লীগের চার সাবেক মন্ত্রীর একসঙ্গে কফি খাওয়ার ছবি ফেসবুকে প্রচারিত হয়।
গত ঈদুল ফিতরের দিন লন্ডনের গ্যান্টস হিল এলাকার আল-কালাম মসজিদে ঈদের নামাজ পড়েন হাছান মাহমুদ। ঈদের নামাজের সেই ছবিও আলোচিত হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ইস্ট লন্ডনের নিউবেরি পার্ক এলাকায় দুই মেয়ের বাসায় থাকছেন সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আবদুর রহমান। জানা যায়, তার শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ। লন্ডনের বার্ডস হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। আরেক সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমও লন্ডনে থাকছেন। তার দুই ছেলেমেয়ে বার অ্যাট ল করার সুবাদে আগে থেকেই সেখানে থাকতেন। এ ছাড়া সাবেক প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী তার লন্ডনের বাসায় আছেন।
সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী যুক্তরাজ্যের অ্যাসেক্সের রমফোর্ড এলাকায় বসবাস করছেন। পড়ালেখার সুবাদে সেখানে আগে থেকেই তার একমাত্র মেয়ে থাকেন। পরে তার স্ত্রী লন্ডনে মেয়ের কাছে চলে যান। লন্ডনের অভিজাত এলাকা সেন্ট্রাল লন্ডনে থাকেন আলোচিত সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তথ্যমতে, ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরী প্রায় ৫ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৬২০টি বাড়ি কেনেন। আওয়ামী লীগের নেতা ও সাবেক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনও লন্ডনের অভিজাত এলাকায় থাকেন।
ছাত্রজনতার আন্দোলন তুঙ্গে থাকার সময় ৩ আগস্ট দেশ ছাড়েন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। তার বড় ছেলে লন্ডনে এবং ছোট ছেলে যুক্তরাষ্ট্রে পড়ালেখা করেন। তাপস কিছুদিন আগে সিঙ্গাপুর থেকে লন্ডনে পাড়ি জমিয়েছেন। বর্তমানে সপরিবারে সেখানেই থাকছেন। এদিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীরও বর্তমান ঠিকানা যুক্তরাজ্যের ইস্ট লন্ডন।

 
                             
                                    

 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                    -20251031020255.webp) 
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন