শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ফরিদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২৫, ০১:৩৯ এএম

চোখের জলে চিরনিদ্রায় শায়িত রাইসা মনি শোকে বিহ্বল গ্রামবাসী

ফরিদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২৫, ০১:৩৯ এএম

চোখের জলে চিরনিদ্রায়  শায়িত রাইসা মনি শোকে বিহ্বল গ্রামবাসী

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া গ্রামে গতকাল শুক্রবার সকাল সোয়া ৯টায় বাজড়া দক্ষিণ পাড়া ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে বাজড়া শামসুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানা কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী, ৯ বছরের রাইসা মনি।

গত সোমবার উত্তরার দিয়াবাড়িতে বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে মাইলস্টোন স্কুলের হায়দার আলী ভবনে আঘাত করলে রাইসা মনিসহ ৩১ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৬৯ জন, যারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।  

রাইসা মনি আলফাডাঙ্গার বাজড়া গ্রামের শাহাবুল শেখ ও রাবেয়া খাতুন দম্পতির মেজো সন্তান। পরিবার-পরিজন নিয়ে শাহাবুল শেখ উত্তরার নয়ানগরে ভাড়া বাসায় থাকেন। তিন ভাই-বোনের মধ্যে রাইসার বড় বোন সিনথিয়া (১৪) একই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী এবং ছোট ভাই রাফসান (৪)। দুর্ঘটনার পর থেকে রাইসা নিখোঁজ ছিল। তার বাবা শাহাবুল শেখ (৪৪) রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মুখম-লের অংশবিশেষ দেখে রাইসার লাশ শনাক্ত করেন। গত মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডিএনএ সংগ্রহের পর প্রতিবেদনে নিশ্চিত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।  

রাইসার চাচা ইমদাদুল শেখ বলেন, ‘রাইসাকে ভোররাতে গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। সকাল সোয়া ৯টায় জানাজা সম্পন্ন করে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। আমাদের পরিবারের জন্য এই ক্ষতি অপূরণীয়।’

স্থানীয় গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘রাইসা মনির অকালমৃত্যুতে পুরো এলাকার মানুষ শোকে হতবিহ্বল। তার মরদেহ বাড়িতে পৌঁছানোর পর হৃদয়বিদারক দৃশ্য তৈরি হয়। এমন কোনো মানুষ নেই, যিনি কাঁদেননি। গ্রামবাসী এমন মর্মান্তিক মৃত্যু আগে কখনো দেখেননি।’

রাইসার লাশ গতকাল শুক্রবার ভোরে বাজড়া গ্রামে পৌঁছানোর পর কফিন ধরে মা রাবেয়া খাতুন কান্নায় ভেঙে পড়েন। সকাল থেকে আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামবাসীর আহাজারিতে এলাকায় মাতমের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। কেউই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। শাহাবুল-রাবেয়া দম্পতি তাদের সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। এই লক্ষ্যে রাইসা ও সিনথিয়াকে ভর্তি করা হয়েছিল মাইলস্টোন স্কুলে।  

জানাজা শেষে শাহাবুল শেখ দেশবাসীর কাছে মেয়ের জন্য দোয়া প্রার্থনা করে বলেন, ‘আমার রাইসা ছিল আমাদের পরিবারের আলো। ওর হাসি, ওর স্বপ্নগুলো আমাদের বাঁচিয়ে রাখত। এই অকালমৃত্যু আমাদের ভেঙে দিয়েছে। আমি দেশের সবার কাছে দোয়া চাই, যেন আমার মেয়ের আত্মা শান্তি পায় এবং আমরা যেন এই শোক সহ্য করার শক্তি পাই।’ 

আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল ইকবাল শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘রাইসা মনির মতো একটি কচি প্রাণের এভাবে চলে যাওয়া অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাইসার পরিবারের পাশে আছি এবং তাদের জন্য সব ধরনের সহায়তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করব। আমি সমগ্র সম্প্রদায়ের সঙ্গে শোক প্রকাশ করছি এবং রাইসার আত্মার শান্তি কামনা করছি।’

জানাজায় ইউএনও রাসেল ইকবাল, সেনাবাহিনীর সদস্য ও এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন। রাইসা মনির মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো বাজড়া গ্রামে, যা কেবল তার পরিবারের জন্য নয়, পুরো সম্প্রদায়ের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!