ঢাকা মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫

ইসির শুনানিতে জেলায় ৪ আসন  বহালের দাবি বাগেরহাটবাসীর

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৫, ০৭:১৪ এএম

সংসদীয় আসনের খসড়া সীমানা নিয়ে নির্বাচন কমিশনে আপত্তি আবেদনের শুনানিতে বাগেরহাটের চারটি আসন বহালের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিরা। গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিলনায়তনে সংসদীয় আসন নিয়ে দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে তারা এ দাবি জানান। এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনসহ চার নির্বাচন কমিশনার এবং ইসি সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। 

শুনানির সময় দাবি-আপত্তিকারী বা আবেদনকারীর কৌঁসুলি নির্ধারিত স্থানে দাঁড়িয়ে নিজের যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন। এবার নির্বাচন কমিশন সীমানা নির্ধারণে ভোটারসংখ্যার সমতা আনতে গিয়ে গাজীপুর জেলায় একটি আসন বাড়িয়ে ছয়টি এবং বাগেরহাটের আসন চারটি থেকে কমিয়ে তিনটির প্রস্তাব করা হয়। খসড়া প্রকাশের পর দাবি-আপত্তি জানানোর সুযোগ ছিল ১০ আগস্ট পর্যন্ত। এরপর শুনানি করে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি।

বাগেরহাটে আগে চারটি আসন ছিলÑ বাগেরহাট-১ (মোল্লারহাট-ফকিরহাট-চিতলমারী); বাগেরহাট-২ (সদর ও কচুয়া); বাগেরহাট-৩ (রামপাল ও মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা)। এবার বাগেরহাট-১ আগের মতো বহাল রাখা হয়েছে। বাগেরহাট সদর, কচুয়া, রামপাল নিয়ে বাগেরহাট-২ আসন এবং মোংলা, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলা নিয়ে বাগেরহাট-৩ প্রস্তাব করা হয়েছে।

শুনানি শেষে ব্রিফিংয়ে বাগেরহাট-৩ আসনের প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট ওয়াহিদুজ্জামান দিপু সাংবাদিকদের বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বাগেরহাটে চারটি আসন। হঠাৎ করে ইসি আমাদের বলেছেন, চারটি আসন থাকবে না। একটি আসন বাদ দেওয়া বাগেরহাটবাসী মানে না। এটা অযৌক্তিক, আইন পরিপন্থি এবং বাস্তবসম্মত নয়। ইসির এ সিদ্ধান্ত জনস্বার্থের পরিপন্থি। তার দাবি, বাগেরহাট জেলায় চারটি আসন আগের মতো বহাল থাকবে। এ বিষয়ে ইসি যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবে।

একই আসনের প্রতিনিধি ব্যারিস্টার মো. জাকির হোসেন বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে, সেই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া। তারা সেটা না দিয়ে বাগেরহাটের জনগণের যে চারটি আসন ছিল, সেখান থেকে একটি আসন কমিয়েছে। আসন কমিয়ে বাগেরহাটবাসীর যে অধিকার, সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে।

তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের স্পিরিট-বিরোধী কাজ করছে ইসি। আমাদের আন্দোলন-সংগ্রামের দিকে ঠেলে দেবেন না বা আমাদের আদালতের দিকে ঠেলে দেবেন না। ফেব্রুয়ারির নির্বাচন যাতে কোনোভাবে বিঘিœত না হয়।

অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান বলেন, ‘কোনো ধরনের গণশুনানি না করে ইসির এ ধরনের সিদ্ধান্ত বৈষম্যমূলক। ইসি উপযুক্ত সিদ্ধান্ত না দিলে আমরা আইনি পথে হাঁটব।’

এদিকে বাগেরহাট-৩ আসনের প্রতিনিধি হিসেবে আসা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোল্লা রহমতুল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, ‘সংসদীয় আসন নিয়ে গতকাল আমরা আমাদের বক্তব্য পেশ করতে পারিনি। আজকেও কিন্তু আমরা আমাদের বক্তব্য তুলে ধরতে পারিনি। নির্বাচন কমিশন শুধু একটি দলের জন্যই কাজ করে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে আমাদের। ভোটারের হিসাবকে কেন্দ্র করে তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটা আমাদের যৌক্তিক বলে মনে হয় না।’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ আসনের মধ্যে ৩৯টির সীমানায় পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করেছে ইসি। কিন্তু নানা দাবি-আপত্তি ওঠে ৮৩টি আসনের বিষয়ে। এর মধ্যে সীমানায় পরিবর্তন আনা এবং বর্তমান সীমানা বহাল রাখার আবেদনও আছে। ১ হাজার ৭৬০টি আবেদনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৬৮৩টি এসেছে কুমিল্লা অঞ্চল থেকে। সবচেয়ে কম আবেদন পড়েছে সিলেট অঞ্চলে। আর তিনটি আবেদন পড়ে ময়মনসিংহ অঞ্চলে।