ঢাকা রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫

যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে স্কুলের নামে জমি দখলের অভিযোগ

দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৫, ১২:৪২ এএম

পটুয়াখালীর দুমকিতে বেসরকারি বিদ্যালয়ের আড়ালে পৈতৃক জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি হাওলাদার ফিরোজ্জামানের বিরুদ্ধে। বিদ্যালয়টি বহু বছর ধরে বন্ধ থাকলেও জমি দখলের বিরোধে উত্তেজনা বিরাজ করছে এলাকায়।

এমন অভিযোগে গতকাল শনিবার সকাল ১০টার দিকে দুমকি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী দক্ষিণ চরবয়ড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. মুছা হাওলাদার। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০০৬ সালে অভিযুক্ত ফিরোজ্জামান তার বাবা-মায়ের নামে হনুফা নূর আলী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন।

বিদ্যালয়টি স্থাপনের তিন বছর পর ২০০৯ সালে জমি ক্রয় করা হয়। এসএ ৭৭ খতিয়ানের ৩১৯৭ নম্বর দাগে পাঁচজন ওয়ারিশের কাছ থেকে মোট ২০ শতাংশ জমি কিনেছেন ফিরোজ্জামানের ভাই আবুল বাসার। তবে বাস্তবে প্রায় ৩৩ শতাংশ জমি দখলে নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ভুক্তভোগীদের বাকি ১৩ শতাংশ জমিও।

মুছা হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের বসতঘর ভেঙে টিনশেড বিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে আমরা নিজেদের অংশে আবার বসবাস করছি, তবে প্রতিনিয়ত হুমকি-ধমকির মধ্যে আছি। আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে আমাদের হয়রানি করা হয়েছে। এমনকি জমি বিক্রেতা আবদুল মজিদ হাওলাদারকেও থানায় নিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হয়।’
স্থানীয় বাসিন্দা মো. লতিফ মৃধা ও হারুন মৃধা বলেন, প্রায় পাঁচ বছর ধরে বিদ্যালয়টি বন্ধ। সেখানে কোনো শিক্ষক কিংবা শিক্ষার্থী নেই। ইউপি সদস্য মো. বাকের আলী বাবুল জানান, বিদ্যালয়ে এক বছর ধরে কোনো শিক্ষা কার্যক্রম চলছে না।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য ও পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘আমরা বৈধভাবে জমি কিনে বিদ্যালয় স্থাপন করেছি। কিন্তু অভিযোগকারী পক্ষের ভয়ভীতি ও বাধার কারণে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তারা বিদ্যালয়ের জমির ওপর ঘর তুলে বসবাস করছেন। জমি ফেরত পেতে আমরা আদালতে মামলা করেছি।’

যুবলীগ সভাপতি হাওলাদার ফিরোজ্জামানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে সালিশকারী হিসেবে দায়িত্বে থাকা রফিকুল ইসলাম মৃধা বলেন, ৩১৯৭ দাগে ২০ শতাংশ জমি ফিরোজ্জামান গং ক্রয় করেন এবং বাকি ১৩ শতাংশ সোবহান হাওলাদার গংয়ের অংশ।

তবে মুছা হাওলাদার বলেন, সালিশ বৈঠকে যে রোয়েদাদ দেখানো হয়েছে, সেটি জাল। ২০১১ সালের ৪ মার্চের ওই রোয়েদাদ প্রসঙ্গে সালিশকারী আবুল কাশেম মৃধা নিজেই স্বীকার করেছেন যে, তিনি সেটি লেখেননি। এ ছাড়া সেখানে কয়েকটি স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগও রয়েছে।