বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ঝালকাঠি জেলার বিভিন্ন নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে জেলার সব উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নদীগুলোর পানি প্রবল স্রোতে খালে ঢুকে পড়ছে এবং তীর উপচে গ্রামাঞ্চলে প্রবাহিত হচ্ছে, ফলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, কাঁঠালিয়া, রাজাপুর, নলছিটি ও সদর উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল এরই মধ্যেই পানিতে তলিয়ে গেছে। বসতঘর, রাস্তাঘাট ও কৃষিজমিতে পানি ঢুকে পড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, জেলার সুগন্ধা, বিষখালী, হলতা, বাসন্ডা, ধানসিঁড়ি নদী ও গাবখান চ্যানেলের পানি বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এসব নদীর পানির উচ্চতা বেড়েছে প্রায় ২ থেকে ৩ মিটার। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, এরই মধ্যে জেলার ৪ উপজেলার ৪০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বিশেষ করে ঝালকাঠি সদরের কেওড়া, কৃত্তিপাশা, পোনাবালিয়া ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রাম, রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া, নিজামিয়া, পালট, বাদুরতলা, নলছিটির নাচনমহল ও ভবানীপুর, কাঁঠালিয়ার আমুয়া ও পাটিকালঘাটা এলাকার ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
এ ছাড়া বিষখালীর জোয়ারের পানি সদর উপজেলার বৈদারাপুর, ভাটারাকান্দা, সাচিলাপুর, কিস্তাকাঠি, মানকিসুন্দর, নাপিতেরহাট এবং কাঁঠালিয়া উপজেলা পরিষদ চত্বরসহ বিভিন্ন স্থানে ঢুকে পড়ে।
কাঁঠালিয়া উপজেলার চিংড়াখালী, জয়খালী, মশাবুনিয়া, ছৈলারচর, কচুয়া, রঘুয়ারদরি চর ও জাঙ্গালিয়া গ্রাম সম্পূর্ণভাবে পানির নিচে চলে গেছে। ডুবে গেছে আউরা ও শৌলজালিয়া আশ্রয়ণ এলাকা, কাঁঠালিয়া গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কাঁঠালিয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বর।
এতে ওই সব এলাকার কৃষিজমি, মাছের ঘের এবং কাঁচা-পাকা সড়কের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছে।
এ ছাড়া ঝালকাঠি শহরের পুরাতন কলাবাগ, লঞ্চঘাট ও পৌর মিনিপার্ক এলাকা থেকে সুগন্ধা নদীর পনি উপচে পড়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঝালকাঠি অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম নিলয় পাশা জানান, শুধু বিষখালী নদীর পানির উচ্চতা গত ২৪ ঘণ্টায় ২ মিটার বেড়েছে। বর্তমানে পানি বিপৎসীমার ৭ থেকে ১০ সেন্টিমিটার ওপরে।
জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমান বলেন, পানি আরও বাড়লে প্লাবিত এলাকার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।