ঢাকা শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫

হানি ট্র্যাপ চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২৫, ০৭:২৬ এএম

হানি ট্র্যাপ চক্র মূলত ফাঁদ পেতে ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে ফাঁসিয়ে হাতিয়ে নেয় মোটা অঙ্কের অর্থ। এমনি এক চক্রের সন্ধান মিলেছে যশোরে। ব্যবসায়ীর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে বাড়িতে আটকে রেখে অর্ধনগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণের পর মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য সদস্যদের খুঁজছে পুলিশ।

গ্রেপ্তাররা হলোÑ যশোর সদর উপজেলার কাশিমপুরের নুরপুর গ্রামের মৃত আবু তালেবের ছেলে শরিফুল ইসলাম, একই গ্রামের জাফরের ছেলে কালু, রমজানের ছেলে সুলতান ওরফে শান্ত, চৌগাছা উপজেলার ইছাপুর গ্রামের শাফাউদ্দিনের মেয়ে শারমিন এবং বেড়গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত শহিদুল ইসলামের মেয়ে রোজিনা আক্তার রুপা।

এ সময় নুরপুর গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে মিরাজ শিকদার পালিয়ে যায়। ঘটনার পর চৌগাছার পুড়াপাড়ার নাছিম রেজা বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, ভুক্তভোগী নাছিম রেজার মামা আনোয়ার ইকবালের পুড়াপাড়া বাজারে একটি কসমেটিকসের দোকান রয়েছে। প্রায় এক মাস আগে গ্রেপ্তার শারমিন দোকান থেকে পণ্য কিনতে গিয়ে ইকবালের সঙ্গে পরিচিত হন। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে ফোনে যোগাযোগ ও সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে গত বুধবার শারমিন ইকবালকে যশোরের খয়েরতলা মোড়ে দেখা করতে বলে। বেলা পৌনে ৩টার দিকে দেখা করার পর শারমিন ও রোজিনা মিলে তাকে নিয়ে যায় নুরপুর কাশেম মোড় এলাকার মিরাজ শিকদারের ভাড়া বাড়িতে। সেখানে আগে থেকেই ওত পেতে থাকা আসামিরা ইকবালকে বেধড়ক মারধর করে। এরপর শারমিনের সঙ্গে বসিয়ে তাদের অর্ধনগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হয়। পরে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস করার ভয় দেখিয়ে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে চক্রের সদস্যরা। এমনকি মারপিটের পর ইকবালের কান্নার আওয়াজ ফোনে শুনিয়ে তার জন্য (বাদী নাছিম রেজাকে) টাকা পাঠাতে চাপ দেওয়া হয়। বিকাশ নম্বরও দেওয়া হয়। ঘটনা জানতে পেরে যশোর ডিবি পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে আনোয়ার ইকবালকে উদ্ধারসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে।

জানতে চাইলে ডিবির ওসি মঞ্জুরুল হক ভূঞা জানান, পুলিশ বিকাশ নম্বর ট্র্যাক করে অবস্থান শনাক্ত করে। ওই নম্বরে ৫০ হাজার টাকা পাঠানো হয়। টাকা তুলতে আসা শরিফুল ও কালুকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপর আসামিদেরও গ্রেপ্তার করা হয়। তবে মূল আসামি মিরাজ পালিয়ে যায়।

ওসি আরও জানান, এই চক্র বিভিন্ন সময় মানুষের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা হাতিয়ে নেয়। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার শরিফুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, চৌগাছা থানার সাবেক ওসি পায়েল হোসেন একসময় এই চক্রের অন্যতম সদস্য শারমিনের ফাঁদে পড়েছিলেন। শারমিনের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলার রেকর্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। পরে এ ঘটনায় পায়েলকে থানা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।