- প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ
- বদলিতে সরকারি নীতিমালা ভঙ্গ, ভর্তিতে অতিরিক্ত টাকা আদায়
- ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠানে চাঁদা আদায় ও কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগ
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ৮০ নম্বর বিএনহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক এবং বর্তমানে ৫৬ নম্বর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছাত্রজীবনে তিনি ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর বিদ্যালয়ের সরকারি বরাদ্দের অর্থ কাজে ব্যয় না করে আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তৎকালীন সময়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পেতেন না। এর ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নি¤œমুখী হয়ে শিক্ষার্থীসংখ্যা কমে যায়।
গত ৫ আগস্ট ২০২৪ সালে রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের পর তিনি নিজেকে বিএনপি সমর্থক পরিচয় দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বদলি নীতিমালা উপেক্ষা করে ৮০ নম্বর বিদ্যালয় থেকে ৫৬ নম্বর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হন। নিয়ম অনুযায়ী কোনো বিদ্যালয়ে পাঁচজন শিক্ষক না থাকলে প্রধান শিক্ষক বদলি হতে পারেন না, অথচ চারজন শিক্ষক থাকা অবস্থায় তার বদলি সম্পন্ন হয়। এ ছাড়া প্রশিক্ষণে থাকা অবস্থায় বদলি আবেদন করার সুযোগ না থাকলেও তিনি পিটিআই ট্রেনিংকালেই আবেদন করেন এবং তৎকালীন শিক্ষা কর্মকর্তার সহায়তায় বদলি সম্পন্ন করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
নতুন কর্মস্থলে যোগদানের পর ভর্তি প্রক্রিয়ায়ও নানা অনিয়মে জড়িত হন তিনি। অভিযোগ রয়েছে, ভর্তি ফরম বিক্রির নামে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া, ক্যাচমেন্ট এলাকার বাইরে শিক্ষার্থী ভর্তি, প্রশংসাপত্র ও ছাড়পত্র দিতে অর্থ আদায়, এমনকি ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠানে শিক্ষকদের কাছ থেকে চাঁদা তোলা।
এ ছাড়া দুই বিদ্যালয় থেকেই একসঙ্গে কনটিনজেন্সি ভাতা উত্তোলন এবং ব্যক্তিগত কোচিং সেন্টার পরিচালনার অভিযোগও উঠেছে। তার অবহেলার কারণে প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে বলে জানা গেছে। এসব ঘটনায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমি নিয়ম মেনেই বদলি হয়েছি। কোনো অনিয়ম করিনি। সার্ভার সমস্যার কারণে কিছু শিক্ষার্থী উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে; বিষয়টি ঠিক করার চেষ্টা করছি।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনসুর হেলাল বলেন, ‘মৌখিক অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, দোষী প্রমাণিত হলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন