এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের খেলা পর্যন্ত স্প্যানিশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরার সঙ্গে চুক্তি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে)। এরই মধ্যে চার বছর ধরে দায়িত্ব পালন করা এই কোচকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি উঠেছে। গত জুনে ঘরের মাঠে বহুলপ্রত্যাশিত ম্যাচে সিঙ্গাপুরের কাছে ২-১ গোলে হার মানে বাংলাদেশ। এই হারের পর কোচ কাবরেরার ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। এবার ঘরের মাঠে হংকংয়ের বিপক্ষে ৪-৩ গোলে হারের পরও তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছেন কাবরেরা। এ সমালোচনার মধ্যেই আজ হংকংয়ের বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। হংকংয়ের মাঠে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে দুদলের ম্যাচটি। অনেকেই ম্যাচটিকে কোচ কাবরেরার ভাগ্য নির্ধারণী ম্যাচ হিসেবেই দেখছেন। কেননা এ ম্যাচে হারলে এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার আশা শেষ হয়ে যাবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ দলে কোচ কাবরেরারও বিদায় ঘণ্টা বেজে যাবে!
হংকংয়ের বিপক্ষে গত ম্যাচে একাদশ নির্বাচন নিয়ে কোচের সঙ্গে খেলোয়াড়দের মতপার্থক্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিষয়টি নজরে এসেছে বাফুফেরও। হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচের আগে টিম ম্যানেজমেন্ট বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন বাফুফের সহসভাপতি ফাহাদ করিম। মূলত কাবরেরার পারফরমেন্সে ফেডারেশন খুশি নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। এ জন্য অবশ্যই টিম ম্যানেজমেন্ট তাকে জবাবদিহির আওতায় আনবে বলেও প্রত্যাশা ফাহাদ করিমের। কোচের একাদশ সাজানো নিয়ে দেশের ফুটবল সমর্থকদের ক্ষোভের শেষ নেই। শমিত সোম, জায়ান আহমেদ, ফাহামেদুল ইসলামদের ছাড়াই হংকংয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে শুরুর একাদশ সাজিয়েছিলেন এ স্প্যানিশ কোচ, যা দেখে হতবাক হয়েছেন দেশের ফুটবল সমর্থকরা। কোচের একাদশ নির্বাচন নিয়ে সরাসরি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াও। সেটা না করেও যে উপায় ছিল না তার। কাবরেরার প্রেস কনফারেন্সেই শুধু ক্যাপ্টেন জামাল। প্রথম একাদশে জায়গা হয় না তার।
কাবরেরার একাদশ নির্বাচন বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ। দলে যোগ্য ফুটবলার থাকার পরও তার পছন্দ অন্য খেলোয়াড়! এ বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন জামাল ভূঁইয়া। অবশ্য তার এমন অবস্থান নির্দেশ করে দলের বিভাজন। হংকংয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচের আগে যে বিষয় টিম ম্যানেজমেন্ট বেশ গুরুত্বসহকারে নেবেন বলেই বিশ^াস বাফুফের সহসভাপতি ফাহাদ করিমের। তিনি জানান, ‘প্লেয়ার এবং কোচদের মধ্যে কোনো গ্যাপ আমি চাই না। আশা করি, ওনার এ স্টেটমেন্টের পর উনি (জামাল) কোচের সঙ্গে বলেছেন, কিংবা ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলেছেন। আশা করি, এ ধরনের কোনো ইস্যু না আসুক। আমি এটাও আশা করি, শুধু জামাল ভাই না, কোনো প্লেয়ারকেই যেন এমন কমেন্ট করতে না হয়।’ দলে কোচের মূল্যায়নের মাপকাঠি তার রেজাল্ট। সেটা হিসাব করলে কাবরেরার ফলাফল গড়ের মাঠ, যা নিয়ে বেজায় অসন্তুষ্ট জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটি। সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পরও কেন তিনি রেজাল্ট দিতে পারছেন না, তার জবাব সংশ্লিষ্ট বিভাগ চাইবে বলে মন্তব্য করেছেন ফাহাদ করিম।
তিনি বলেন, ‘একজন হেডকোচের সাফল্য হয় তার রেজাল্টে। রেজাল্ট যদি আসে তবে সেটা তার জন্য ডেফিনিটলি পজিটিভ ফর হিম। কিন্তু ডিজায়ার্ড রেজাল্ট না এলে...রেজাল্টটা খুব জরুরি। রেজাল্ট নিয়ে শুধু আমি কেন কেউই খুশি না। টেকনিক্যাল টিম, ন্যাশনাল টিমস কমিটি অবশ্যই তাকে প্রশ্নের ভেতরে আনবে।’ আজ ১৪ অক্টোবর হংকংয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচ অ্যাসিড টেস্টের মতো। ফেল করলেই শেষ। বাফুফের ফোকাসের পুরোটা জুড়ে তা থাকলেও, এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে নভেম্বরে ভারতের বিপক্ষে হোম ম্যাচ নিয়ে পরিকল্পনা।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন